অনলাইনভিত্তিক একটি নিউজপোর্টালের টকশোতে এক ছাত্র প্রতিনিধিকে ‘রাজাকারের ছেলে’ ‘আলবদরের ছেলে’ বলার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের ছবিতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বুধবার বিকেলে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ফজলুর রহমানের ছবিতে আগুন দেন তারা। বিএনপি থেকে তাঁকে বহিষ্কারের পাশাপাশি গ্রেপ্তারেরও দাবি জানানো হয়।  

এর আগে অনলাইন টকশো ‘ফেস দ্য পিপল’ এ ছাত্র প্রতিনিধি মিনহাজ উদ্দিনকে বিএনপি নেতা ফজুলর রহমান ‘রাজাকারের ছেলে’ ‘আলবদরের ছেলে’ বলে সম্বোধন করেন। মঙ্গলবার রাতে এই টকশোর ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও তাঁর ছবিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, শেখ হাসিনা ছাত্রদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যা দিয়ে জুলাই গণহত্যা ঘটিয়েছেন, ফজলুর রহমানও তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন। জুলাই গণহত্যার শহীদদের দাগ না মুছতেই ফের ‘রাজাকারের ছেলে’ সম্বোধন ছাত্রদের নতুন করে আতঙ্কিত করছে।

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ অবিলম্বে ফজুলর রহমানকে গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। তিনি বলেন, একজন ছাত্রকে ‘রাজাকারের ছেলে’ বলায় ফজুলর রহমানকে সমগ্র ছাত্রসমাজের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা ফজলুর রহমানের ঘাড়ে চেপেছে। তা না হলে ৫ আগস্টের পর তাঁর দুঃসাহস হতো না আমাদের ছাত্র ভাইকে রাজাকারের ছেলে সম্বোধন করার।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান বলেন, ‌‘আজকে আমরা ফজলুর রহমানের ছবিতে আগুন জ্বালাচ্ছি। এর কারণ হলো ৫ আগস্টের পরে আমরা যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তিনি (ফজলুর রহমান) তা মানতে পারেননি। তিনি যেখানে সেখানে বিপ্লবীদেরকে যা মন চায় তা বলে কটাক্ষ করছেন। তিনি ফ্যাসিবাদের সুরে কথা বলছেন। সর্বশেষ একটি টকশোতে একজন ছাত্র প্রতিনিধিকে তিনি রাজাকারের বাচ্চা বলেছেন। শেখ হাসিনা এই রাজাকারের বাচ্চা বলে জুলাই গণহত্যা ঘটিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।’

কর্মসূচিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার ও আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় সদস্য তামিম আনোয়ার, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়ামিন সরকার, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ইসতিয়াক আহমদ ইফাত, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান ও বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক মো: আরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন ব এনপ সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ শনিবার ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে মিছিলটি শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি না করে, রাজনীতির নামে গণহত্যা চালিয়েছে। শুধু যে গণহত্যা চালিয়েছে তা–ই নয়, তারা এই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বর্গা দিয়েছিল। তাদের আর এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকে বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে অথবা গণভোটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দিল্লির স্বার্থ বাস্তবায়ন করে গিয়েছে। যখনই কেউ প্রতিবাদ করেছেন, তাঁকে আয়নাঘরে গুম করা হয়েছে। আমার ভাইদের তুলে নিয়ে জঙ্গি তকমা দিয়েছে। এরপরে জুলাইয়ে অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলে দেশব্যাপী গণহত্যা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ শুধু গণহত্যা চালায়নি, তারা এমন কোনো অপরাধ নেই যা উৎসাহ নিয়ে করেনি। এই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে আমাদের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, একাত্তরে শেখ মুজিব ক্ষমতায় বসে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করেছে। এরপরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নির্বাচনব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে। একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে যে আচরণ থাকা উচিত, তাদের মধ্যে ১৫ বছরেও তা দেখা যায়নি। যে আওয়ামী লীগ রাজনীতির নামে গণহত্যা চালিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব বলেন, ‘যদি ন্যায়বিচার বলে কিছু থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরাপদে থাকতে হলে জনগণের কাতারে নেমে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে কোনো আপস করা হবে না।’

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গণ–অভ্যুত্থান মঞ্চের সংগঠক ইমরান হাসান। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাউদ্দিন আম্মার। কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জায়নবাদ যেভাবে ইসরায়েলকে দুই ভাগ করে ফেলছে
  • গাজাবাসীর অনাহার যখন ইসরায়েলের হাতিয়ার
  • সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে শহীদ পরিবার বিচার পাবে না, আশঙ্কা জুলাই মঞ্চের
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
  • ফিলিস্তিনিদের মুক্তির উপায় পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিদায়: অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম
  • শহীদি সমাবেশ সফল করতে রাজশাহীতে গণসংযোগ
  • পাকিস্তান ও ভারতকে বাংলাদেশের দুই বার্তা
  • অর্থ ফেরত ও গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান ঢাকার
  • সম্পদ ফেরত ও গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান ঢাকার
  • একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে আলোচনা