যাকাত ভিত্তিক ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা চালু হলে দারিদ্রতা বিমোচন সম্ভব : জব্বার
Published: 5th, March 2025 GMT
সমাজে যারা অন্যায় অবিচারে লিপ্ত থাকবে মুখবুজে মনে মনে সহ্য করার আর সময় নেই এখন তাদের হাত ও শক্তি দিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে ৫ মার্চ বুধবার ফতুল্লা শাহ কনভেনশন হলে যাকাতের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ আবদুুল জব্বার।
তিনি আরো বলেন সমাজ রাষ্ট্রে একমাত্র আল কুরআন'ই পারে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা , আজ সমাজে যদি কুরআনের আইন বাস্তবায়ন থাকতো তাহলে দেশে গরিব লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল হতো, তাই আসুন কুরআন পড়ি কুরআন বুজি কুরআনের আলোকে জীবন গড়ি।
এসময় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর আলহাজ্ব মমিনুল হক সরকার তিনি বলেন ইসলমী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে যাকাতের ন্যায অধিকার বাস্তবায়ন হবে।
জেলা সহকারী সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্নার সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রকাশনা সম্পাদক মজিবর রহমান মিয়াজী, জেলা অর্থ সম্পাদক মাওলানা আবদুুল মজিদ, জেলা ওলামা পরিষদের সম্পাদক মুফতি জাহাঙ্গীর আলম, ফতুল্লা দক্ষিন থানা আমীর মাওলানা নাছির উদ্দিন সরকার, পশ্চিম থানা আমীর নুরুল হক, উত্তর থানা আমীর আবুল কাসেম, থানার সকল সেক্রেটারি ও শতাধিক সুধী সহ অন্যন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশবান্ধব ভেগান লেদার উদ্ভাবন করে সাড়া জাগালেন নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থী সাদিয়া
নিজের গবেষণায় পরিবেশবান্ধব ভেজিটেবল লেদার (চামড়া) তৈরি করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন ইসরাত জাহান সাদিয়া নামে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রাকৃতিক নানা উপাদানে নিজের হাতে তৈরি এই চামড়া দিয়ে মানসম্মত আধুনিকমানের আকর্ষণীয় জুতো, স্যান্ডেল, ঘড়ির বেল্ট ও ব্রেসলেট বানিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন সাদিয়া।
বহির্বিশ্বের কিছু দেশে স্বল্পমাত্রায় ইন্ডাস্ট্রিভিত্তিক এ ধরণের কাজ হলেও বাংলাদেশে এই ধরণের গবেষণামূলক অর্জন আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে এই প্রথম। পরিবেশবান্ধব ভেজিটেবল লেদার (চামড়া) উদ্ভাবনকারি ইসরাত জাহান সাদিয়া নারায়ণগঞ্জ শহরের আর.পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ও ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের ফাইনাল সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
সাদিয়ার এই উদ্ভাবন দেশের চামড়া শিল্পে যুগান্তকারি অবদান রাখতে পারে এবং এই চামড়া পশুর চামড়ার বিকল্প হিসেবে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সমাধান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে মনে করছেন তার শিক্ষকবৃন্দ। শিক্ষার্থী সাদিয়ার গবেষণামূলক এই সাফল্যের মাধ্যমে দেশে টেকসই চামড়া শিল্পে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হয়েছে বলেও মনে করছেন তার বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়টির ফ্যাশন ও ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গবেষণাপত্র কোর্সের প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে ইসরাত জাহান সাদিয়া তার এই গবেষণার বিষয়টি প্রকাশ করেন। একই সাথে তার উদ্ভাবিত ভেজিটেবল লেদার দিয়ে তৈরি বিভিন্ন আকর্ষণীয় সামগ্রী উপস্থাপন করেন। যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন সাদিয়ার সহপাঠী সহ শিক্ষকবৃন্দ।
এসময় ইসরাত জাহান সাদিয়া জানান, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গবেষণাপত্র কোর্সের আওতায় ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানজিল হাসনাইন মঈন রনীত এর তত্ত্বাবধানে ও অনুপ্রেরণায় গবেষণা করে তিনি এই ভেগান লেদার তৈরি করছেন।
এই ভেজিটেবল লেদার তৈরি করতে বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক সবজি, ফলের এক্সট্রাক্ট ও কেমিক্যাল এর মিশ্রণ সহ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেছেন, যা সম্পূর্ণ পুনঃব্যবহারযোগ্য। মূলত ঘরোয়াভাবেই বিটরুট, কফি ও কয়লার থেকে বিভিন্ন অনুপাতের রাসায়নিক মিশ্রণ সৃষ্টি করে এই ভেগান লেদার তৈরিতে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।
গবেষণার বিষয়ে ইসরাত জাহান সাদিয়া বলেন, আমি সবসময়ই পরিবেশবান্ধব ফ্যাশন নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি। এই ভেজিটেবল লেদার প্রকৃতির ক্ষতি না করেই উচ্চমানের বিকল্প দিতে সক্ষম। বেশ কয়েকবার বিভিন্ন সবজি ও ফলের রস থেকে চেষ্টা করে অবশেষে বিটরুট, কফি ও কয়লা আমার কাঙ্খিত ফল পেয়েছি।
এই তৈরিকৃত লেদার নিয়ে আমার ভবিষ্যতে আরও কাজ করার ইচ্ছে আছে। এই তৈরিকৃত লেদার থেকে বিভিন্ন ফ্যাশন এক্সেসরিস ও জুতা প্রাথমিকভাবে তৈরি করার প্রয়াস করেছি। আমার উদ্দেশ্য লক্ষ্য হচ্ছে, এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা এবং বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে স্থায়িত্বশীল পরিবর্তন আনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ও ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের প্রধান তানজিল হাসনাইন মঈন রনীত বলেন, "আর.পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ও ডিজাইন বিভাগ বরাবরই শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহিত করে। প্রতিটি কোর্সে টেক্সাইলের ব্যাসিক, ফ্যাশন ও ডিজাইন এর মূল বিষয়গুলো শিক্ষকরা যত্ন সহকারে পড়ানোর চেষ্টা করেন।
আমাদের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার ফলেই এমন চমৎকার আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে। আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছি। এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বিস্তৃত হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরও বলেন, এটি শুধু পরিবেশের জন্যই উপকারি নয়। বরং চামড়া শিল্পে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এই গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ফলে দেশের ফ্যাশন ও টেক্সটাইল শিল্পে টেকসই পরিবর্তন আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গবেষণাপত্র কোর্সের এই সাফল্যময় প্রেজেন্টেশনের দিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশ এর ডিজাইনার ও প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস। তিনি সাদিয়ার এই ধরণের গবেষণার প্রসংশা করেন এবং শিক্ষার্থীদের আরও বেশি গবেষণায় উদ্যোগি হওয়ার আহবান জানান।
আর. পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ও ডিজাইন বিভাগের প্রসংশা করে সৌমিক দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিটি বিভাগ যদি শিক্ষার্থীদের এভাবে অনুপ্রেরণা দেয় তবে প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে ও গবেষণায়য় ভালো সাফল্য অর্জন করবে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গবেষণাপত্র কোর্সের প্রেজেন্টেশনের দিন আরও উপস্থিত ছিলেন আর. পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি আর আই এর ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সহকারী অধ্যাপক ড.মো. তরিকুল ইসলাম। গবেষণার মান ও কাজের প্রসংশা সহ বিভাগের সাফল্য কামনা করেন তারা।
এছাড়া আর.পি. সাহা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের এমন সৃজনশীল ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে উৎসাহিত করবেন বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।