বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোয় (সিআইবি) ভুল তথ্য দিলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি ওই তথ্যের পক্ষে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা না পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি দায়ী কর্মকর্তারা শাস্তির আওতায় পড়বেন। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের ঋণের শৃঙ্খলা সুসংহত করতে সিআইবি তথ্যভান্ডারে সংরক্ষিত ঋণ তথ্যের গুণগতমান বজায় রাখা ও হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে সিআইবি প্রতিবেদনে ঋণগ্রহীতার ঋণের মাসওয়ারি তথ্য সংরক্ষণ করে সিআইবি কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলমান। প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণগ্রহীতাদের সব ঋণের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সিস্টেমে জমা দিতে হবে।

ঋণের তথ্য সিস্টেমে জমা দেওয়ার পর সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন বা বিয়োজন বা সংযোজনের কাজ সম্পন্ন করে তথ্য হালনাগাদ করা যাবে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সিস্টেমে তথ্য হালনাগাদ করতে ব্যর্থ হলে ব্যর্থতার কারণসহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা পত্রের মাধ্যমে তিন দিনের মধ্যে সিআইবিকে জানাতে হবে। ওই ব্যাখ্যা ব্যুরোর কাছে সন্তোষজনক বিবেচিত না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরোপিত জরিমানার অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে কেটে রাখা হবে। সিআইবি তথ্যভান্ডারে নির্ভুল তথ্য প্রদানে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা ব্যুরোর কাছে সন্তোষজনক বিবেচিত না হলে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

সিআইবি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ একটি বিভাগ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণবিষয়ক সব ধরনের তথ্য এখানে সংরক্ষিত থাকে। ঋণ গ্রহণে আগ্রহী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আগে ঋণ নিয়েছে কি না, নিয়ে থাকলে তা শোধ করেছে কি না বা কী অবস্থায় আছে, এসব তথ্য জানা যায় এর মাধ্যমে। পাশাপাশি ঋণের জামানতের তথ্যও এতে সংযোজন করা হয়েছে। ঋণখেলাপিদের তথ্যও পাওয়া যায় এখান থেকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স আইব

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল তথ্য দিলে ব্যাখ্যা তলব ছাড়াই জরিমানা

ঋণ তথ্য ব্যুরো (সিআইবি) হালনাগাদ পদ্ধতির জবাবদিহি বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তথ্য ‘আপলোড’-এ দেরি করলে কিংবা ভুল তথ্য দিলে ব্যাখ্যা তলব ছাড়াই জরিমানা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই জরিমানা আদায়ের আগে ব্যাংককে অবহিত করা হবে না। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের ঋণ শৃঙ্খলা সুসংহত করার লক্ষ্যে সিআইবি তথ্যভান্ডারে রক্ষিত ঋণতথ্যের গুণগত মান বজায় রাখা ও হালনাগাদ ঋণতথ্য সংরক্ষণ করা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে সিআইবি রিপোর্টে ঋণগ্রহীতার মাসিকভিত্তিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে সিআইবি কার্যক্রম গতিশীল ও কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিদ্যমান নির্দেশনা অধিকতর কার্যকরী করতে ২০১১ সালে জারি করা সার্কুলারের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশোধিত নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এখন থেকে সিআইবিতে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে তথ্য আপলোড করতে হবে। আগে পরবর্তী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে তথ্য আপলোড করার বিধান ছিল। কোনো তথ্য একবার সিস্টেমে দেওয়ার পর সংশোধনীর দরকার হলে পরবর্তী সাত কর্মদিবস সময় পাবে ব্যাংক। এতদিন এ ক্ষেত্রে  সময় ছিল তিন দিন। কোনো ব্যাংক এই নির্দেশনা মেনে তথ্য দিতে না পারলে কিংবা ভুল তথ্য দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে জরিমানার মুখে পড়বে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত তারিখের মধ্যে তথ্য হালনাগাদ করতে ব্যর্থ হলে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তিন দিনের মধ্যে জানাবে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা ব্যুরোর কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেবে ব্যাংক।

এতদিন জরিমানা করার আগে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হতো। সেই ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে চিঠি দিয়ে জরিমানা পরিশোধের জন্য একটি তারিখ দেওয়া হতো। ওই তারিখের মধ্যে জরিমানার অর্থ জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নিত বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকালের সার্কুলারে বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে জরিমানা আদায়ের আগে নতুন করে কোনো ব্যাখ্যা তলব বা অবহিত করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের নিজ থেকে দেওয়া উত্তর সন্তোষজনক না হলেই বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিকলন করে আদায় করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভুল তথ্য দিলে ব্যাখ্যা তলব ছাড়াই জরিমানা