পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 5th, March 2025 GMT
মাদারীপুরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ৩ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার দুপুরে মাদারীপুর সমন্বিত দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক আতিক রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, মাদারীপুরে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে সরকারি খাসজমি, অর্পিত সম্পত্তি ও অন্যের মালিকানাধীন সম্পত্তির ভুয়া রেকর্ড তৈরি করে, জালিয়াতির মাধ্যমে ২৩টি চেকে সরকারের ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই অর্থ আত্মসাৎ চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা প্রমথ রঞ্জন ঘটক, সাবেক সার্ভেয়ার রাসেল আহম্মেদ ও সাবেক সার্ভেয়ার মো.
মাদারীপুর সমন্বিত দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক আতিক রহমান বলেন, ২৩টি চেকের মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন মামলার আসামিরা। দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। সরকারি কর্মচারী আসামিরা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত আছেন। তিনি আরও বলেন, শিগগিরই আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রিমান্ডে নিয়ে নারী আইনজীবীর কাছে চাঁদা দাবি, এসআইসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রিমান্ডে এনে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নারী আইনজীবীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার ১১ মাস পর গতকাল মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী মুক্তা পারভীন।
বিচারক মামলা আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। রাজবাড়ী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোন্দকার হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামি মাহফুজুর রহমান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত। বাকি চার আসামি হলেন রাজশাহীর ছোট বনগ্রামের শেখ আবদুল্লাহ, শাহমখদুম এলাকার জাহিদ উল আলম, রাজপাড়া থানার রোমান ইসলাম ও মো. ছালাম।
মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল আইনজীবী মুক্তা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসআই মাহফুজুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬–১৮ এপ্রিল রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করেন। রিমান্ড কক্ষে উপস্থিত থাকার আইনানুগ সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও শেখ আব্দুল্লাহ, জাহিদ উল আলম, রোমান ইসলাম ও মো. ছালাম সেখানে ছিলেন।
এর আগে ধর্ষণচেষ্টা, শ্লীলতাহানি ও ৩০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের অভিযোগ এনে আইনজীবী মুক্তা পারভীন গত ১৩ জানুয়ারি রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেন। এতে এসআই মাহফুজুর রহমানসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
মুক্তা পারভীন বলেন, ‘প্রথমে জানুয়ারি মাসে মামলা করেছিলাম। প্রায় দুই মাস পার হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি। তাঁরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নানাভাবে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। তাই আবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’
এ বিষয়ে এসআই মাহফুজুর রহমান বলেন, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তা পারভীন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আছে। রেলওয়ে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁরা ৭০-৮০ জনের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী, সিলেট, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক প্রতারণা মামলা আছে।
মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘মুক্তা পারভীনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় তিনটি প্রতারণা মামলা আছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা থাকাকালীন আমাকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। এখন আমাদের হয়রানি করতে তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ভালো করে তদন্ত হলেই সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’