কয়েদিদের সঙ্গে হাতাহাতি, আ.লীগ নেতাদের অন্য কারাগারে স্থানান্তর
Published: 5th, March 2025 GMT
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা ও হামলা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য কয়েদিদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে শাস্তিস্বরূপ অন্য জেলার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। অভিযুক্ত পাঁচ জনই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা।
পাবনা জেলা কারাগারের জেল সুপার মো.
আরো পড়ুন:
কারাগারের ভেতর সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে মিলল ইয়াবা
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো ছাত্রলীগ নেত্রী নিশিকে
অভিযুক্তরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তৌফিক ইমাম খান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু, গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহার হোসেন মুতাই ও আসাদুজ্জামান সুইট এবং অন্য একজন।
জেল সুপার মো. ওমর ফারুক জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা ও হামলা মামলায় কারাগারে রয়েছেন এ সকল আসামিরা। কয়েকদিন ধরে তারা কারাগারে থাকা অন্য সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছিলেন। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ বিকেলে এ পাঁচ কয়েদি একইভাবে খারাপ আচরণ করেন এবং বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে অন্য কয়েদিদের গায়ে হাত তোলেন তারা।
তিনি আরো জানান, শাস্তিস্বরূপ তৌফিক ইমাম, শেখ লালু ও আসাদুজ্জামান সুইটকে রাজশাহী এবং মুতাই ও অন্যজনকে নওগাঁ জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জেল সুপার মো. ওমর ফারুক আরো বলেন, ‘‘বিগত সময়ে তারা বাইরে যেমন বেপরোয়াভাবে কথাবার্তা বলেছেন ও চলেছেন, কারাগারেও তেমনই বেপরোয়া হয়ে চলছিলেন। ফলে ঝামেলাটা বাঁধে।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অটিস্টিক শিশুদের ভাষা সমস্যায় মা–বাবার করণীয়
অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা অটিজম হচ্ছে শিশুদের মস্তিষ্কের বর্ধনমূলক বা বিকাশমূলক বৈকল্যের একটি সমষ্টিগত অবস্থা, যা প্রধানত মাতৃগর্ভকালীন সৃষ্টি হয় ও জন্মের পর প্রাথমিক কিছু উপসর্গ দিয়ে এই রোগের লক্ষণের প্রকাশ ঘটে। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ভাষার সমস্যা’। ভাষা হচ্ছে যোগাযোগের অর্থাৎ মনের আবেগ ও চিন্তা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের মৌলিক আবেগ–আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ মনোগত অবস্থা, যেমন চিন্তা, অভিপ্রায়, কামনা, অভিলাষ, স্বপ্ন, কল্পনা ও ছলনা ইত্যাদি অন্যের কাছে প্রকাশ করি এবং অন্যের মনেও যে এগুলোর অস্তিত্ব আছে, তা বুঝতে পারি। যোগাযোগ ও সামাজিকতা তখনই একটি মানুষের স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অর্থবোধক হয়, যখন ভাষার বাচনিকতার সঙ্গে অবাচনিকতার বিভিন্ন উপাদান যুক্ত হয়ে অন্যের কাছে অর্থবহ রূপে প্রতিবেশ ও পরিবেশ অনুযায়ী প্রকাশ হয়।
চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা।প্রকৃতির সহজাত নিয়মে যখন কোনো শিশু চিন্তা ও আবেগ অন্যের কাছে প্রকাশ করতে না পারবে, তখন তার আচরণগত সমস্যা তৈরি হবে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ভাষা বিকাশ ও প্রকাশে লক্ষণীয় ত্রুটি দেখা যায়। ফলে এই শিশুদের মধ্যে কিছু অকার্যকর বা অনুপোযোগী আচরণ, যেমন বারবার পুনরাবৃত্তি, অন্তর্ঘাতমূলক, আগ্রাসনমূলক আচরণ পরিলক্ষিত হয়, যা তার দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
এ ধরনের সমস্যা একটি শিশুর নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা থেকে শুরু করে তার সামাজিক দক্ষতা ও বুদ্ধিদীপ্ততার সার্বিক বিচ্যুতি বা বিকারের পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। আর এর মাত্রা হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন, যা নির্ভর করে একটি শিশুর ভাষা আয়ত্তকরণের উপায়গুলো অর্থাৎ ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থের ওপর।
মা–বাবার করণীয়
কোনো শিশুর মধ্যে ‘ভাষা সমস্যা’ পরিলক্ষিত হলে তার চিকিৎসা শুরুর আগে উচিত রোগ নির্ণয় করা। শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কি না, নির্ণয় করতে হবে এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি নেওয়ার উপযোগী কি না, সেটাও নির্ণয় করতে হবে। এটি নির্ণয় করবেন একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং প্রয়োজনে ওষুধও প্রদান করবেন অকার্যকর বা অনুপযোগী আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য।
একজন চিকিৎসা ভাষাবিদ একটি শিশুর মধ্যে ভাষার উপাত্তগুলোর কোনটি, কতটুকু আক্রান্ত হয়েছে, তা খুঁজে বের করেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাব্যবস্থা ‘স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি’ দিয়ে থাকেন। যত তাড়াতাড়ি একটি শিশুর এ উপাত্তগুলো খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে, তত তাড়াতাড়ি শিশুর আচরণগত অবস্থার উন্নতি হবে। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে উপাত্তগুলোর কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা, যাতে সে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বোঝা না হয়ে যায়।
ডা. ফাহমিদা ফেরদৌস, চিকিৎসা ভাষাবিদ ও মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক (মানসিক রোগ বিভাগ), জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল