জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং তার স্ত্রী হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (৫ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম মামলায় বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন, এবং ৬টি ব্যাংক হিসেবে ২৫৭ কোটি ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। আসামি গাজীর নামে ৪৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়, যার মধ্যে তার গ্রহণযোগ্য আয় ৪২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

দ্বিতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাসিনা গাজী। তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৫টি ব্যাংক হিসেবে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বছরের আগস্টে গাজীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপরই আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে রূপগঞ্জ থানায় করা স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা আমানের আপিলের ওপর রায় ৩০ এপ্রিল

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল ও লিভ টু আপিলের ওপর আগামী ৩০ এপ্রিল রায় দেবেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে আমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হুদা। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

পরে আইনজীবী নাজমুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আমান উল্লাহ আমানের আপিল ও তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের লিভ টু আপিলের ওপর রায়ের জন্য আগামী ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট আমান উল্লাহ আমানকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানকে দেওয়া ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও সাবেরা আমানকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই বছরের ৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বের আত্মসমর্পণের পর আমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১ আদালত।

এর আগে সাবেরা আমান একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপিল করেন এবং জামিন চান। ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত থেকে জামিন পান তিনি। অন্যদিকে আত্নসমর্পণের পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আমান উল্লাহ আমান। ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি নিয়মিত আপিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানকে জামিন দেন।

দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আমানের করা আপিলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ২০২৩ সালে করা লিভ টু আপিল একসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের এবং সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের খালাস দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পুনঃশুনানি শেষে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট রায় দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা আমানের আপিলের ওপর রায় ৩০ এপ্রিল
  • খুলনার সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ