গাইবান্ধায় ৫২ ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে বিএসটিআইয়ের মামলা
Published: 5th, March 2025 GMT
গাইবান্ধায় বিএসটিআই (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) এর নীতিমালা অনুযায়ী ইটের গুণগত মান রক্ষা না করে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করার অপরাধে ৫২টি ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএসটিআই রংপুর অফিস।
৫২টি ইটভাটার মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১৭টি, পলাশবাড়ী উপজেলায় ১৭টি, সাদুল্লাপুর উপজেলায় ৯টি, গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৪টি, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪টি এবং সাঘাটা উপজেলায় ১টি ইটভাটা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএসটিআইয়ের রংপুর বিভাগীয় অফিস প্রধান ও উপপরিচালক (পদার্থ) মুবিন-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, “গত ফেব্রুয়ারি মাসে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে বিএসটিআইয়ের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে সার্ভিল্যান্স অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গুণগত মান পরীক্ষণ সাপেক্ষে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স গ্রহণ বা নবায়ন সাপেক্ষে ইট উৎপাদনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এরপরও যেসব ইটভাটা লাইসেন্স গ্রহণ বা নবায়ন প্রক্রিয়া না করেই উৎপাদন চালু রেখেছিল, তাদের বিরুদ্ধে বিএসটিআই আইন ২০১৮-এর ২১ ধারা মোতাবেক গাইবান্ধা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “অভিযান পরিচালনার সময় এবং মামলা দেওয়ার আগের দিনও এইসব ইটভাটা মালিককে বারবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের সতর্কবার্তায় কর্ণপাত করেননি। ইটের গুণগত মান রক্ষায় বিএসটিআইয়ের এ ধরনের অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। প্রতি তিন বছর পর পর এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।”
এদিকে সারা দেশের সব অবৈধ ইটভাটা চার সপ্তাহের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সব বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১৭ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। গত মাসের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সদর উপজেলা ইটভাটা মালিক সভাপতি আয়ান উদ্দিন বলেন, “মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। আগামী ১১ মার্চ জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।”
উল্লেখ্য, পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গাইবান্ধা জেলায় ১২৬টি ইটভাটার মধ্যে বৈধ ইটভাটার সংখ্যা মাত্র ১৬টি।
ঢাকা/মাসুম/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসট আইয় র উপজ ল য় ইটভ ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিনা লাভের দোকানে’ নিম্নবিত্তের স্বস্তি
খুলনা নগরীর শিববাড়ী মোড়। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় সেখানে দেখা মেলে একদল মানুষের জটলা। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, নতুন একটি দোকানে বসে চিড়া, মুড়ি, সয়াবিন তেল, আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিক্রি করছেন তিন-চার যুবক।
দোকানের ওপরে ব্যানারে লেখা– ‘পবিত্র মাহে রমজানে জনমনে স্বস্তি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বিনা লাভের দোকান। কেনা দামে পণ্য বিক্রি। আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম, খুলনা।’ সেখান থেকে বেশ আগ্রহ নিয়ে পণ্য কিনছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বিক্রেতারা জানান, তারা সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। কোনো লাভ ছাড়াই মোট ১৬ ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি আলু ১৭ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, শসা ২৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ছোলা ৯৫ টাকা, মুড়ি ৬৫ টাকা, বেসন ৬০ টাকা, চিড়া ৬০ টাকা, টমেটো সাড়ে ৭ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা, ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা, সয়াবিন তেল এক লিটারের বোতল ১৭৫ টাকা এবং লেবু প্রতি হালি ২৭ টাকায় বেচছেন। এ ছাড়া রয়েছে ধনিয়া পাতা ও বোম্বাই মরিচ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী জানান, গত অক্টোবরে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে তারা নগরীর শিববাড়ী মোড়, বয়রা বাজার, নতুন বাজার, গল্লামারী, দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড ও খালিশপুর চিত্রালী মার্কেটে ‘বিনা লাভের দোকান’ চালু করেছিলেন। তখন ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পান। রোজার সময় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আবারও সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে তারা আবারও এ দোকান চালু করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রথমে শিববাড়ী মোড়ে এ দোকান চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি পয়েন্টে চালু করা হবে। রমজানজুড়ে তাদের এ কার্যক্রম চলবে। হৃদয় বলেন, তারা পণ্য কেনার পর পরিবহন খরচসহ মূল্য নির্ধারণ করছেন। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগুলো বিক্রি করছেন। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ দোকান চালু থাকবে।
বাজার মনিটরিং কন্ট্রোল টিম সদস্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাঈম মল্লিক, টিম সদস্য আরিফুল ইসলাম সানি ও রাইসা ইসলাম জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূলত বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য না কমা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, নিজেদের টাকায় পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন তারা। কারও কাছ থেকে কোনো অনুদান নেননি।
এই দোকান থেকে আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল ও মুড়ি কেনার পর ইজিবাইক চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, বাজারের তুলনায় এখানে দাম অনেক কম। নগরীর আরও কিছু পয়েন্টে এ ধরনের দোকান চালু করলে লোকজন রোজায় কম দামে জিনিসপত্র কিনতে পারত।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আলম শেখ বলেন, বাড়ি যাওয়ার সময় লোকের ভিড় দেখে এলাম। আমি ছয় আইটেম কিনেছি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে আরও কিছু পণ্য এবং বিক্রির পয়েন্ট বৃদ্ধি করলে ভালো হবে। তাহলে আরও অনেকে উপকৃত হবেন। শিক্ষার্থীরা অসাধারণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে।