বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের কয়েক দফা দাবি কমিশনের সামনে উপস্থাপন করেন। কিন্তু সেসব দাবিদাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। এমনকি এসব দাবিদাওয়া নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কমিশনের পদত্যাগের এক দফা দাবির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজকের মধ্যে কমিশন পদত্যাগ না করলে কাল থেকে বিএসইসির সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবিতে আজ বেলা ১১টা থেকে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিএসইসি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাহারায় বিএসইসির চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনাররা বিএসইসি ভবন ত্যাগ করেন। এ সময় তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ এ কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এক আদেশে বাধ্যতামূলক অবসরের এ সিদ্ধান্ত জানান। বিএসইসিতে নতুন কর্তৃপক্ষ যোগ দেওয়ার পর সাইফুর রহমানকে ওএসডি করা হয়েছিল। এখন তাঁকে অবসরে পাঠানো হয়।

বেলা ১১টার পর থেকে বিএসইসি ভবনে চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা দুইটা পর্যন্ত ভবনের গেট দিয়ে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভেতর থেকে কাউকে বের হতে দেননি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বেলা দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল বিএসইসি কার্যালয়ের সামনে আসে। পরে ভেতরে প্রবেশ করে দলটি। পুলিশের একটি দলও সঙ্গে ছিল। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাদের কড়া নিরাপত্তায় বিএসইসি ভবন ত্যাগ করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনাররা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পদত য গ র র কর মকর ত ব এসইস র

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’

‘ক্রিকেটের মক্কা’ খ্যাত লর্ডসে সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের। বয়স ছিল কেবল ১৭ বছর। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের যেই রেলগাড়িতে মুশফিকুর চড়েছিলেন, ধীরগতির সেই বাহন এখন তাকে নিয়ে গেছে নব্বই পেরিয়ে। 

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটের হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে নব্বইয়ের ঘর ছুঁয়েছিলেন মুশফিকুরের। তার টেস্ট ম্যাচ সংখ্যা এখন ৯৪। ইনজুরিতে না পড়লে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে আরো দুইটি টেস্ট ম্যাচ যোগ হতো। তার সামনে একশ টেস্ট খেলার হাতছানি। পারবেন কী মুশফিক? সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। 

সেই প্রশ্নটা আরো একবার উঠল তার ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার দিনে। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়েন মুশফিকুর। গতকাল রাতে ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার অনন্য মাইলফলকের সামনে মুশফিকুর। বন্ধু তামিম ইকবালের একমাত্র চাওয়া, মুশফিক যেন অন্তত ১০০ টেস্ট খেলতে পারে। 

আরো পড়ুন:

বিষন্ন মুশফিকুরের ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা

এভাবেও ম্যাচ হারা যায়?

এক ভিডিও বার্তায় তামিম বলেছেন, ‘‘তুই একটা ফরম্যাট খেলবি, টেস্ট ফরম্যাট। আমি প্রত্যাশা ও প্রার্থনা করি তুই যেন ভালো করিস এবং অন্তত যেন ১০০ টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারিস। যেটা বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলেনি। আমি আশা করবো ১০০ টেস্ট অবশ্যই খেলবি। এটাই।’’ 

১০০ টেস্ট খেলতে হলে মুশফিককে এ বছর পুরোটা সময় ফিট থাকতে হবে, পারফর্ম করতে হবে। এপ্রিলে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল বাংলাদেশে আসছে। আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম অনুযায়ী জুন-জুলাইয়ে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা সফর করবে। সেখানে ২ টেস্ট খেলবে। এরপর বছরের শেষ দিকে আয়ারল্যান্ড সফরে রয়েছে আরো ২ টেস্ট। এই ৬ টেস্ট খেলতে পারলে মুশফিকের নাম ইতিহাসের অক্ষয় কালিতে লিখা থাকবে নিশ্চিতভাবেই। 

মুশফিকুরের ওয়ানডে অবসরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তামিম। তার কথা বলতে গিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন, ‘‘এমন একজন ব্যক্তি আজ (গতকাল) অবসরে গেলেন, যার সঙ্গে আমার অলমোস্ট ২০-২৫ বছরের সফর। একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আসলে মানুষকে বুঝাতে পারতাম না আমার অনুভূতিটা তার প্রতি কী বা আমার কেমন মনে হচ্ছে।’’

‘‘মুশফিককে আমি এতোটুকুই বলতে চাই, দোস্ত তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে এবং আমি তোকে প্রতিটি স্তরে উন্নতি করতে দেখেছি। আমি দেখেছি, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেক মানুষের, আপনাদের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি আমি দেখেছি যে, একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব আমার কাছে মনে হয় সে সবই করেছে এবং এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এতো কষ্ট করে কেন? কিন্তু তার নিবেদন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা এটা কল্পনার বাইরে। আমি কথা বলে কোনোদিন কাউকে বোঝাতে পারব না।’’

মুশফিকুরের অবদান বাংলাদেশ ক্রিকেট মনে রাখবে বলে বিশ্বাস তামিমের, ‘‘আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন, বন্ধু আমি, এটা অনুভব করতে পারছি এটা ওর জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক। বন্ধু তুই যা অর্জন করতে পেরেছিস, যে-টুকুই তুই করেছিস তা অসাধারণ ছিল। অধিনায়ক হিসেবে, খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য…বাংলাদেশের প্রত্যেকে বছরের পর বছর তা মনে রাখবে।’’

‘‘আমি সত্যি বলতে, এখন বেশ আবেগতাড়িত। আমি অনুভব করতে পারছি তোর এখন কেমন লাগছে।বাংলাদেশ তোকে নিশ্চিতভাবেই মিস করবে। বাংলাদেশের জন্য তুই যা করেছি তা অনেক বছর মনে রাখবে। আমি ভাগ্যবান যে ডিপিএল তোর সঙ্গে খেলতে পারছি। আরো কিছু সময় কাটাতে পারব। অনেক ধন্যবাদ মুশফিক, সব কিছুর জন্য।’’

ঢাকা/ইয়াসিন 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুশফিকের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’
  • বিএসইসি চেয়ারম্যান-কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি, নইলে কর্মবিরতি
  • সেনাবাহিনীর সহায়তায় চেয়ারম্যান-কমিশনারদের বিএসইসি ত্যাগ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা অবরুদ্ধ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার অবরুদ্ধ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনারদের ঘেরাও
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
  • বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুরকে বাধ্যতামূলক অবসর