গাবতলী বেড়িবাঁধে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
Published: 5th, March 2025 GMT
রাজধানীর গাবতলী বেড়িবাঁধে অভিযান চালিয়ে ইট, বালু ও পাথরের আড়তসহ অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) এ অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময় ইট, পাথর ও বালুর আড়তদারদের মালামাল সরিয়ে নিতে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসির প্রশাসক বলেছেন, “সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তিগুলো দখলমুক্ত করা আমাদের দায়িত্ব। সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখলমুক্ত করে মাঠ ও পার্ক করা হবে। খালি জায়গা, মাঠ, পার্ক জনগণের সম্পত্তি। ঢাকা শহরের মানুষ এসব মাঠে ও পার্কে যাবে, খালি জায়গায় ঘোরাফেরা করবে। এটা জনগণের অধিকার। বর্তমানে ঢাকা শহরে খালি জায়গায় অভাব। সিটি কর্পোরেশনের অনেকগুলো জায়গা আছে, সেগুলো থেকে রাজস্ব আহরণ করা হয়। এই বেড়িবাঁধের (গাবতলী বেড়িবাঁধ) দুই পাশে ডিএনসিসির প্রায় ১৫০ একর জায়গা আছে। বেশিরভাগ জায়গা দীর্ঘদিন ধরে বেদখল আছে। এগুলো আমরা উদ্ধার করব। আজ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলবে।”
তিনি আরো বলেন, “এখানে (গাবতলী বেড়িবাঁধ) অবৈধভাবে দখল করে নানা কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে। ইট-পাথরের আড়তসহ নানা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড করছে অবৈধভাবে। তারা সিটি কর্পোরেশন থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেয়নি, একটি পয়সাও এখান থেকে সিটি কর্পোরেশন রাজস্ব পাচ্ছে না। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে কোনো নোটিসের প্রয়োজন নেই। তারা আমাদের না জানিয়ে দখল করেছে। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এ জায়গা উদ্ধার করা হবে।”
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, “এখানে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে হবে অথবা তারা বৈধ উপায়ে সিটি কর্পোরেশনকে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করবেন। এর মধ্যে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করবে। কোনো প্রকার অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ দখলদারিত্ব আর চলবে না।”
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স র প র গ বতল
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপদ অঞ্চলেও অরক্ষিত গাজাবাসী
বাড়ি, আশ্রয়শিবির কিংবা ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চল কোথাও যেন নিরাপত্তা মিলছে না গাজাবাসীর। গতকাল বুধবার রাতের অন্ধকারে নুসেইরাহ শরণার্থী শিবির ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষিত আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহতের সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এর মধ্যে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন দু’জন পুরুষ এবং গুরুতর আহত হয়েছেন সাতজন। এ ছাড়া আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রাণ গেছে এক নারী ও এক শিশুর। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ৪৫টি স্থাপনায় হামলার কথা স্বীকার করেছে আইডিএফ। নিজেদের এক প্রতিবেদনে আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার কোথাও এখন নিরাপত্তা নেই। আছে শুধুই মৃত্যু আর ধ্বংস। খবর আলজাজিরা ও এএফপির
এদিকে গাজার পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া অঞ্চলে একাধিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৫ জন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৮০ জন। এসব হামলায় অন্তত ১০টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এলাকাটি। জীবিত বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নারী ও শিশুদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় এলাকাটিতে উড়ছিল ইসরায়েলি ড্রোন। উদ্ধারকারীরা জানান, ভারী বোমায় মৃতদেহগুলো এমনভাবে ছিন্নভিন্ন হয়েছে, সেগুলো শনাক্ত করাও কষ্টকর। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৮৪৬ জনে। তবে গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭শর বেশি।
গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো ব্যাপক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলমান হত্যাযজ্ঞ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য কলঙ্ক।’ এদিকে গাজাকে ‘মৃত্যু উপত্যকা’ হিসেবে সম্বোধন করে ইসরায়েলের অবরোধ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, ‘গাজা এখন একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানকার বেসামরিক জনগণ মৃত্যুর গোলক ধাঁধায় আটকে পড়েছে।’ গুতেরেসের এই মন্তব্যের আগে জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থার প্রধানরা বিশ্বনেতাদের কাছে গাজার অধিবাসীদের জন্য জরুরি সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহের কোনো সংকট নেই এবং গুতেরেস ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার’ করছেন।
অন্যদিকে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ চিরকাল চলতে পারে না। তাই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো অত্যাবশ্যক।’
গাজায় ইসরায়েল খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপকভাবে অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টির ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক হুমকির কারণে ২১টি পুষ্টি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৩৫০ গুরুতর অপুষ্ট শিশু।