পাকিস্তানে সামরিক স্থাপনায় আত্মঘাতী বোমায় ৬ শিশুসহ ১২ জন নিহত
Published: 5th, March 2025 GMT
দুজন আত্মঘাতী হামলাকারী গতকাল মঙ্গলবার বিস্ফোরকভর্তি দুটি গাড়ি নিয়ে পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন। হামলায় অন্তত ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহত নাগরিকদের মধ্যে অন্তত ছয় শিশু রয়েছে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে আরও ছয় জঙ্গি নিহত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, বিস্ফোরণের ধাক্কায় কাছের একটি মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে। মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজান চলছে। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে স্থানীয় লোকজন দিনভর রোজা শেষে সবে তাঁদের ইফতার শুরু করেছিলেন। ধসে পড়া মসজিদটি একটি ভিড়ে ঠাসা বাজারের ভেতরে ছিল।
বিস্ফোরণের পর জঙ্গিরা সামরিক অবকাঠামোয় প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের রুখে দেয় বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গোলাগুলিতে ছয় জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ওই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর ওপর পাকিস্তানি তালেবানের হামলা বেড়ে গেছে। এই জঙ্গি দলটি তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত।
কাছের একটি হাসপাতালের মুখপাত্র মুহাম্মদ নোমান বলেছেন, গতকালের হামলায় ১২ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিরা বেসামরিক নাগরিক। তাঁরা ধসে পড়া ভবন ও দেয়ালের নিচে চাপা পড়েছেন।
পাকিস্তানে গতকাল আত্মঘাতী বোমা হামলায় আহত এক শিশুকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৪ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সালিশে বাদী পক্ষের ওপর হামলা, সাবেক ইউপি সদস্যসহ আহত ৭
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সালিশ বৈঠকে হামলায় ৭ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নে পুঁটিজলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলায় আহতরা হলেন পুঁটিজলা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রনি মজুমদার (২২), তার ভাই আনোয়ার হোসেন ভুট্টু (৪৫), বোন নূরুন নাহার টুনি (৫০), একই গ্রামের নাজির আহমেদ মজুমদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার (৬০), রফিকুল ইসলাম মুজমদার (৫৫) ও রফিকের ছেলে রকি (৩০) ও ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আফাজ উদ্দিন কালাম (৫৬)।
হামলায় অভিযুক্তরা হলেন ওই গ্রামের খোকন মিয়া, শাহজাহান, মফিজুর রহমান, তজু মিয়া, ইলিয়াসসহ পাশের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঝাটিয়ারখিল গ্রামের অজ্ঞাত ৫০-৬০ জন।
আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে রনি মজুমদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত আনোয়ার হোসেন ভুট্টু বলেন, আমার বোনের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক তার জমিতে মাছ ধরতে গেলে পুঁটিজলা গ্রামের ইলিয়াস ও শাহজাহান তাকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে সালিশ বসে। সালিশে মধ্যস্থতাকারীরা মাগরিবের নামাজ পড়তে গেলে আনু মিয়ার ছেলে খোকনের নেতৃত্বে তার ভাড়াটিয়াসহ ঝাটিয়ারখিল গ্রামের ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের কোপাতে থাকে। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুট্টু বলেন, খোকন ও তার পরিবারের লোকেরা সবাই আওয়ামী লীগ করে। তারা ঝটিয়ারখিল গ্রামের যেসব সন্ত্রাসী নিয়ে এসেছে তারাও সবাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী।
অভিযুক্ত খোকন মিয়া বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের সালিশ বৈঠক চলা অবস্থায় আমরা মাগরিবের নামাজ পড়তে যাই। এসময় সংঘর্ষ বেঁধে আমাদেরও কয়েকজন আহত হয়েছে, তাদের কজন আহত হয়েছে আমি জানি না।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।