২০২১ সালে মরণোত্তর দেহদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন কলকাতার প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। কয়েক বছর পরই এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ালেন বরেণ্য এই শিল্পী। ইসলামী রীতিতে যেন তাকে দাফন করা হয়, সেই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

কবীর সুমন তার অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে এই শিল্পী বলেন, “রমজান মোবারক! সকলকে জানাতে চাই, কিছুকাল আগে এই ফেসবুকেই ঘোষণা করেছিলাম— ‘আমি আমার দেহ দান করেছি, কোনো ধর্মীয় শেষকৃত্য আমি চাই না।’ অনেক ভেবে আমি সেই সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। দেহদানের ইচ্ছে প্রত্যাহার করছি আমি। আমার দেহ আমি দান করব না।”

নিজের নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কবীর সুমন বলেন, “আমি চাই আমায় এই কলকাতারই মাটিতে, সম্ভব হলে গোবরায়, ইসলামী রীতিতে কবর দেওয়া হোক। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আমার কতিপয় স্বজনকে এটা জানিয়ে দিলাম। আমার এই ঘোষণার বিষয়ে কারোর কোনো মত বা মন্তব্য চাই না। সকলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।”

আরো পড়ুন:

বছর ঘুরে বছর আসে, বনি-কৌশানীর কেন বিয়ে হয় না?

বাড়ি ফিরে অঝোরে কাঁদলেন ‘সারেগামাপা’ বিজয়ী দেয়াশিনী (ভিডিও)

১৯৬৯ সালে প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ভয়েস অব আমেরিকায় কাজ করার সময়ে ওপার বাংলার সোফিয়া নাজমা চৌধুরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কবীর সুমনের। ১০ বছর পর ভারতে ফিরে কলকাতায় সংসার বাঁধেন তারা। জানা যায়, নাজমাকে বিয়ে করার সময়ে ধর্মান্তরিত হন কবীর সুমন। পরে জার্মানিতে পাড়ি জমান এই দম্পতি। সেখানে যাওয়ার পর তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরে।

সোফিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মারিয়া নামে এক নারীতে মজেন কবীর সুমন। তবে সেই বিয়েও সুখের হয়নি। নব্বই দশকের শেষে মারিয়া সুমনের বিরুদ্ধে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। নতুন শতাব্দীতে নতুনভাবে শুরু করেন কবীর সুমন। মারিয়ার সঙ্গে ডিভোর্স মঞ্জুর হওয়ার আগেই বাংলাদেশের গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে এ সংসারও ভেঙে যায়।

১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ শিরোনামের গানের অ্যালবাম প্রকাশের পর শ্রোতাপ্রিয়তার শীর্ষে চলে যান কবীর সুমন। জীবনমুখী বাংলা গানের প্রবর্তক হিসেবে তাকে দুই বাংলার শ্রোতারা সাদরে গ্রহণ করেন। একসময় স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন কবীর সুমন। ২০০৯ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে এই গায়কের।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকুরের বিদায়ে আবেগের বিচ্ছুরণ, গর্বের ঝরনাধারা

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বুধবার রাতে অবসর নিয়েছেন। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর তিন বছরের ব্যবধানে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে গেলেন মুশফিকুর। 

ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন। ধারাবাহিক সাফল্যের স্রোতে না ভাসালেও লাল-সবুজের বাংলাদেশকে বেশ কয়েকবার উল্লাসের সুযোগ দিয়েছেন, বুক ফুলিয়ে গর্বের সুযোগ করে দিয়েছেন। ২২ গজে শুধু ব্যাটিং নয়, মাঠের বাইরে তার সংকল্পবদ্ধ, লড়াইয়ের মানসিকতা, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যবসায় তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তাইতো তার বিদায়ের ঘোষণার দিনে আবেগের বিচ্ছুরণ হলো সতীর্থদের। তারা খুঁজে পাচ্ছেন গর্ব।  

তামিম ইকবাল

আরো পড়ুন:

মুশফিকুরের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’

বিষন্ন মুশফিকুরের ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা

‘‘মুশফিককে আমি এতোটুকুই বলতে চাই, দোস্ত তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে এবং আমি তোকে প্রতিটি স্তরে উন্নতি করতে দেখেছি। আমি দেখেছি, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেক মানুষের, আপনাদের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি আমি দেখেছি যে, একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব আমার কাছে মনে হয় সে সবই করেছে এবং এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এতো কষ্ট করে কেন? কিন্তু তার নিবেদন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা এটা কল্পনার বাইরে। আমি কথা বলে কোনোদিন কাউকে বোঝাতে পারব না।’’

‘‘আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন, বন্ধু আমি, এটা অনুভব করতে পারছি এটা ওর জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক। বন্ধু তুই যা অর্জন করতে পেরেছিস, যে-টুকুই তুই করেছিস তা অসাধারণ ছিল। অধিনায়ক হিসেবে, খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য…বাংলাদেশের প্রত্যেকে বছরের পর বছর তা মনে রাখবে।’’

মাশরাফি বিন মুর্তজা

‘‘তোমার বিদায়ের ঘোষণায় এক লহমায় অনেক কিছু ভেসে উঠল চোখে। এত বছরের একসঙ্গে পথচলা, মাঠের ভেতরে-বাইরে কতশত স্মৃতি! ওয়ানডেতে তোমার রেকর্ডই তোমার হয়ে স্বাক্ষ্য দেবে অনেক কিছুর। তোমার ব্যাটের দ্যুতিতে কত আলোর দিন এসেছে দেশের ক্রিকেটে! তবে রেকর্ড বইয়ে লেখা থাকবে না, কতটা নিবেদন আর নিষ্ঠায় তুমি ক্যারিয়ার গড়েছিলে, কতটা ঘামের স্রোত পেরিয়ে সাফল্যের তীর ছুঁয়েছিলে। তোমার পরিশ্রম, প্রতিজ্ঞা আর ত্যাগের গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আশা করি, সাদা পোশাকের বাকি অধ্যায়টুকু রঙিন করে তুলবে। তোমার ব্যাটে অভিজাত সংস্করণে দেশের ক্রিকেট সমৃদ্ধ হবে আরও…।’’

তাসকিন আহমেদ

‘‘একটা যুগের অবসান! মুশি ভাই, তোমাকে ছাড়া বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট কল্পনা করা কঠিন। তোমার আবেগ, নিষ্ঠা এবং লড়াইয়ের মনোভাব আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। তোমার সাথে মাঠে ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং তোমার কাছ থেকে শেখা সম্মানের। পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য তোমাকে শুভকামনা - তোমার গৌরব চিরকাল বেঁচে থাকবে।’’

সৌম্য সরকার

‘‘বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে কাটানো স্মৃতিগুলো লালন করব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি সেবার জন্য ধন্যবাদ। নতুন শুরু এবং সামনের জীবনের অভিযানের জন্য শুভকামনা। অবসর শেষ নয়, এটি কেবল পরবর্তী অধ্যায়ের শুরু। অবসরের শুভেচ্ছা ভাই।’’

শরিফুল ইসলাম

‘‘অবসরের শুভেচ্ছা, মুশফিকুর রহিম ভাই...আপনি আমার কাছে একজন অনুপ্রেরণার নাম। আমি যখন বোলিং প্রান্তে থাকি আপনি কিপিং প্রান্তে সেই মুহুর্তটা মিস করবো, সেইসময় যেভাবে সাপোর্ট করতেন ভালো ডেলিভারি করার জন্য সেটা অসাধারণ। আমার কাছে আপনি সব সময়ই সেরা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এতো সুন্দর সময় উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা।’’

তাওহীদ হৃদয়

‘‘বগুড়া স্টেডিয়ামে আপনি প্র্যাকটিস করছেন শুনে ছোটবেলায় আপনাকে দেখার আশায় স্টেডিয়ামের গেইটের গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা থেকে শুরু করে, ওডিআই -এর আন্তর্জাতিক ক্যাপ আপনার হাত থেকে গ্রহণ করা এবং একই ড্রেসিং রুম শেয়ার করা:- আমার কাছে রূপকথার গল্পের থেকে কম নয়!! 

‘‘এরকম লাখো ছেলেদের আইডল আপনি, যার জন্য আমার মতন অনেকেই আপনাকে একবার দেখবে বলে কতো দিন অপেক্ষা করেছে। আপনি আমার আইডল, কতোটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি তা হয়তো বুঝতেও পারবেন না।’’

‘‘আমি বাকরুদ্ধ এবং হতবাক, তবুও আমার আদর্শ মুশফিকুর রহিমের অবসরে আমি খুশি। আমি তোমাকে অন্য কারো চেয়ে বেশি মিস করব।’’

হান্নান সরকার, সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক

‘‘খেলাটার প্রতি তুমি কতটা সৎ ছিলা আর ঠিক কি পরিমাণ ডেডিকেশনের সাথে খেলে গেছো বছরের পর বছর ধরে, তা খুব কাছ থেকেই দেখা। শেষটা হয়তো সেরাভাবে হলো না, কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে তোমার অবদান কোনোদিন অস্বীকার করা সম্ভব না। কখনো না। তোমার আগামী দিনগুলো খুব সুন্দর হোক, মুশফিক। টেস্টে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।’’

আল-আমিন হোসেন

‘‘এক কিংবদন্তির বিদায়, স্মৃতিতে চির অম্লান! বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুশফিকুর রহিম, তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন! জয়ের স্বপ্ন বুনেছেন, দলের জন্য লড়েছেন, আর অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। তার নিবেদন, নেতৃত্ব, এবং অতুলনীয় পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে চিরদিন অমলিন থাকবে! আপনার দ্বিতীয় ইনিংস শুভ হোক, মুশফিক ভাই।’’

জাকের আলী অনিক

‘‘খুব মিস করবো ভাই।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুশফিকুরের বিদায়ে আবেগের বিচ্ছুরণ, গর্বের ঝরনাধারা
  • রাবির ভর্তি পরীক্ষা: বিকেন্দ্রীকরণে হ-য-ব-র-ল
  • মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে? এভাবে সামলান
  • সালমানের বদলে ৬০০ কোটির সিনেমায় আল্লুকে নিলেন অ্যাটলি
  • এক মাসের ছুটিতে মেয়েরা, কোচ চেয়েছিলেন ‘ছোট্ট বিরতি’
  • অনিয়মের অভিযোগে কুবির রেজিস্ট্রারকে বাধ্যতামূলক ছুটি
  •  ফতুল্লায় নারী প্রতারক বিথীর খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব যুবক
  • ইউক্রেনে এক মাসের আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিচ্ছে ফ্রান্স-যুক্ত
  • কেয়া গ্রুপে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ