গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানকালে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কিছু থানা ও পুলিশের কয়েক শ যানবাহন। পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, বর্তমানে থানার কার্যক্রম চালু হলেও যানবাহনের অভাবে যথাযথ নাগরিক সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশের এ যানবাহনের সংকট পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে। কেনা হচ্ছে ৪৩১টি যানবাহন। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এর আগে পুলিশ সদর দপ্তর বিভিন্ন ধরনের যানবাহন কিনতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে পুলিশের গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ ৪৫৫টি যান পুড়ে যায়। এগুলোসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় মোট ১ হাজার ৭৪টি যানবাহন। এ অবস্থায় পুলিশ সদর দপ্তর ৭২২টি গাড়ি কেনার ও এ জন্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয় ৪৩১টি যানবাহন কেনার এবং এ জন্য ২৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৭৪টি। এর মধ্যে রয়েছে জিপ, কার, পিকআপ, রেকার, এপিসি, জলকামান ও মোটরসাইকেল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম হুমায়ুন কবির সরকার গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের তালিকা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে এসেছে। তালিকা যাচাই-বাছাই করে যানবাহন কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরে আরও যানবাহন কেনার অনুমতি দেওয়া হবে।’

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট দেশের ১০৫টি থানা, পুলিশ ফাঁড়িসহ অন্যান্য স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুড়ে গেছে পুলিশের ৪৫৫টি যানবাহন। এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি জিপ, ১৭৩টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৫৬টি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ, ১২টি প্যাট্রোল কার, ১২টি মাইক্রোবাস, ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ১২টি ট্রাক, ২টি বাস, ২টি প্রিজন ভ্যান, ১৫৬টি মোটরসাইকেল, ৮টি রেকার, ৪টি এপিসি, ১টি জলকামান ও ২টি ক্রাইমসিন ম্যানেজমেন্ট ভ্যান। এসব যানবাহন মেরামতের অযোগ্য।

ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের তালিকা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে এসেছে। তালিকা যাচাই-বাছাই করে যানবাহন কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরে আরও যানবাহন কেনার অনুমতি দেওয়া হবে।এস এম হুমায়ুন কবির সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, যানবাহনসংকট কাটিয়ে পুলিশের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩৮টি জিপ, ২৫০টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৫৬টি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ, ১২টি করে প্যাট্রোল কার ও মাইক্রোবাস, ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ২০টি ট্রাক, ২টি বাস, ১২টি প্রিজন ভ্যান, ২৮৫টি মোটরসাইকেল, ৮টি রেকার, ৪টি এপিসি (আর্মার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার), ১টি জলকামানসহ মোট ৭২২টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। এ জন্য ৩৯৯ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়।

আন্দোলনকালে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগের পর যাত্রাবাড়ী থানা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ক ব ন প কআপ বর দ দ এ জন য

এছাড়াও পড়ুন:

হকিতে ‘সম্মানজনক বিদায়’ নাকি ‘বাদ’

ঈদ শেষে এখনো স্বাভাবিক ছন্দ খুঁজে পায়নি ঢাকার নাগরিক জীবন। তবে গুলিস্তান তার চেনা ব্যস্ততা ফিরে পেতে শুরু করেছে। এই ব্যস্ততার মধ্যেও মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে স্টিক-বলের ঠুক–ঠাক শব্দ কান পর্যন্ত পৌঁছাবেই।

ঈদের ছুটি শেষে বুধবার আবার শুরু হয়েছে জাতীয় হকি দলের অনুশীলন। ১৪ এপ্রিল রাতে জাকার্তা রওনা হওয়ার আগ পর্যন্ত চলবে তা। আগামী ১৭ এপ্রিল জাকার্তায় শুরু হতে যাওয়া এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপের জন্য সকাল-বিকেল জাতীয় দলের অনুশীলন চলছে। টুর্নামেন্টটিতে এর আগে চারবার খেলে প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ফলে শিরোপা ধরে রাখার একটা বাড়তি চাপ রয়েছে। কাল অনুশীলন দেখেও সেটাই মনে হলো।

বিকেলের অনুশীলন পর্বের শুরুতেই পেনাল্টি কর্নার নিয়ে কাজ হয়েছে। মাঠের এক প্রান্তে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বিশাল এক বেলুন। সেই বেলুনে যাতে কোনো ছোঁয়া না লাগে, এমনভাবে তার পাশ ঘেঁষে ড্র্যাগ ফ্লিক নিচ্ছিলেন আশরাফুল ইসলামরা। শেষ দিকে হয়েছে নিজেদের মধ্যে অনুশীলন ম্যাচ।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ৬৩ জনের কুপার টেস্ট দিয়ে শুরু হয় দল নির্বাচনী প্রক্রিয়া। কিন্তু তাতে ডাকা হয়নি দেশের হকির পোস্টার বয় রাসেল মাহমুদ জিমিকে। ৩২ বছর বয়স হলে জাতীয় হকি দলের জন্য কেউ বিবেচিত হবেন না, হকি ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটি অদ্ভুত এই সিদ্ধান্ত কম বিতর্ক ছড়ায়নি। ৩৮ বছর বয়সী সাবেক অধিনায়কও বাদ পড়েছেন বয়সের অজুহাতেই।

তাতে জিমির ২২ বছরের আন্তর্জাতিক হকি ক্যারিয়ারে নীরবেই হয়তো দাঁড়ি পড়ে গেল। কে জানে সাবেক অধিনায়ক সারওয়ার হোসেন আর মিলন হোসেনের ক্যারিয়ারও শেষ কি না! সারওয়ার জাতীয় দলে আসেন ২০১২ সালে ও মিলন ২০১৪ সালে।

হকি খেলোয়াড়দের অনুশীলন চলছে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ