দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল-জুলুমের মধ্য দিয়ে আজকে একটি অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। বিগত ১৬ বছরে দলটির নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার এমন কোনো নির্যাতন নেই, যা করেনি।

নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়েছে দলটির নেতা-কর্মীদের। গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নির্যাতিত বিএনপির কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে। তাঁদের অনেকের আচরণ বিগত দিনের নির্যাতনকারীদের মতো। দলেন হাইকমান্ড থেকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও কতিপয় নেতা-কর্মীর তেমন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনমুখী দলটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নানাভাবে সহায়তা করলেও কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনা জারি রেখেছে। অবশ্য এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সৌন্দর্য নষ্ট হয় তখন, যখন মিথ্যা বা ভুল বিষয়ের সমালোচনা বা প্রচারণা চালানো হয়। মিথ্যা প্রচারণায় জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেয়, জনতার হাসির খোরাক জোগায়।

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে সম্প্রতি বিএনপির মিডিয়া সেলের অফিশিয়াল পেজ থেকে একটি কার্ড শেয়ার করা হয়েছে। যেখানে লেখা, ‘বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার!’ দাবি করা হয়েছে লেবুর হালি ২০০ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায়—এই প্রথম জনগণের কাছে কোনো দল হাসির পাত্র হলো। কারণ, তথ্যটি যথাযথ নয়। তাদের পোস্টের কমেন্ট বক্সেই জনগণ তার উত্তর দিয়েছেন। ৩০ থেকে ৮০ টাকা হালিতে লেবু পাওয়া যাচ্ছে—এমনটা দাবি করে অনেকে বিএনপিকে ভর্ৎসনা করেছেন। বিএনপির এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য জনগণ ভালোভাবে নেয়নি তা পোস্টের প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যায়। পোস্টটিতে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার প্রতিক্রিয়া পড়েছে, যার মধ্যে ২৮ হাজার ‘হাহা’। অনেকে মজার ছলে বলছেন, ‘বিএনপিকে ভুল বোঝাচ্ছেটা কে?’

দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দীর্ঘদিন হলো। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে এই সরকারের অনেক ব্যর্থতা আছে। তবে এবার রমজানে অনেক কিছুর দামই আগের চেয়ে কিছুটা কম। কিন্তু সবচেয়ে বেশি হাহাকার ভোজ্যতেলে। তেলের বাজার বিগত ছয় মাসে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি সরকার। সিন্ডিকেট করে আটকে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে ভোজ্যতেল নেই বললেই চলে। কিছু জায়গায় পাওয়া গেলেও দাম প্রায় দেড় গুণ। বাজারের কিছু সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি এই সরকার। এর ব্যর্থতা তাদের নিতে হবে, এসব নিয়ে সমালোচনা হতেই পারে। আর যৌক্তিক সমালোচনা গণতন্ত্রকে সুন্দর করে তোলে। তবে সমালোচনা যদি অযৌক্তিক হয় এবং সেখানে যদি বা কিন্তু থাকে, তখনই সমস্যা তৈরি হয়।

রমজানের বাজারদর নিয়ে প্রথম আলোর করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সপ্তাহ দুয়েক আগে ঢাকার বাজার থেকে এক হালি লেবু আকারভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকায় কেনা যেত। রমজান শুরুর আগের দিন ঢাকার চারটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লেবু বিক্রি হচ্ছে হালিপ্রতি ৫০-৮০ টাকা দরে। লেবুর মতো দাম বেড়েছে শসা, লম্বা বেগুন এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলের।

নিত্যপণ্যের মধ্যে চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, আলু, আটা ইত্যাদির দাম স্থিতিশীল আছে। বিশেষ করে মৌসুমের কারণে পেঁয়াজ ও আলুর দাম অনেকটাই কম। চিনির সরবরাহ ভালো, দাম বাড়েনি। বরং গত বছরের তুলনায় দাম এবার কম। তবে সংকট চলছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। এ সুযোগে খোলা তেলের দাম নির্ধারিত দরের চেয়ে লিটারে ২৮-৩৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। চাল ও ডালের দাম আগে থেকেই চড়া। মাছ-মাংসের বাজারেও স্বস্তি নেই।

সম্প্রতি আরেকটি বিষয় ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে বিএনপি। অবশ্য সেই ভুলের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে দিলটি। বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ সমিতির ভবনে বোমা হামলায় একজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন—উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তবে ঘটনাটি বোমা হামলার ছিল না।

ফেসবুকের ভ্যারিফাইড পেজে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র রমজ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যেকোনো উপায়ে গ্রিনল্যান্ড ‘দখল’ করবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো উপায়ে ডেনমার্কের অধীনে থাকা গ্রিনল্যান্ড দখল করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) মার্কিন কংগ্রেসের একটি যৌথ অধিবেশনে এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর রয়টার্সের। 

দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনের প্রথম ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা, এমনকি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন। তাই আমরা এটি পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কাজ করছি।  আমি মনে করি, আমরা এটি অর্জন করবো, যেকোনো উপায়ে আমরা এটি অর্জন করবো।” 

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কংগ্রেসে প্রথম ভাষণ ট্রাম্পের

কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা ট্রাম্পের

ভাষণে ট্রাম্প আরো বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের জনগণের জন্য আমার একটি বার্তা রয়েছে। সেটি হলো-আমরা আপনার ভবিষ্যত নির্ধারণের অধিকারকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। আপনারা যদি চান, আমরা আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানাই।”

গ্রিনল্যান্ডের জনগণের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প আরো বলেন, “আমরা আপনাদের নিরাপদ রাখব, আমরা আপনাদের ধনী করব এবং একসঙ্গে, আমরা গ্রিনল্যান্ডকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাব, যা আপনারা আগে কখনো কল্পনাও করেননি।” 

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড। এটি ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ডেনমার্কের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৯৭৯ সালে এর পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে দ্বীপটি। এটি খনিজ সমৃদ্ধ এবং কৌশলগতভাবে আর্কটিকের মধ্যে অবস্থিত। বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অবস্থানের কারণে এই দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রকে আকৃষ্ট করেছে। 

ট্রাম্প বলেন, “এটির জনসংখ্যা খুবই কম কিন্তু বিশাল একটি অঞ্চল। সামরিক নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গ্রিনল্যান্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার আগে থেকেই ট্রাম্প বলে আসছিলেন যে, তিনি গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করতে চান। যদিও ন্যাটো মিত্র ডেনমার্ক বলছে যে, দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয়। 

জানুয়ারিতে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ জনগণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিরোধিতা করে। কিন্তু তারা ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা লাভের পক্ষে।

গ্রিনল্যান্ডের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনকে আরো উজ্জীবিত করেছে। তবে, গ্রিনল্যান্ডের ক্ষমতাসীন ইনুইট আতাকাতিগিট পার্টি সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও কল্যাণমূলক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক জানিয়েছে, আগামী ১১ মার্চ সাধারণ নির্বাচনের পর স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা হবে না। 

ডেনমার্কের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কাস ল্যাসেন সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ আসলে গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। স্বাধীনতা সম্ভব এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।”

লাসেন বলেন, “ডেনমার্ক ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একমত যে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে আর্কটিকের চারপাশে নিরাপত্তা আরো জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে এবং এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা কিছুদিন ধরে ন্যাটো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একসাথে কাজ করে আসছি।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবি পার্টিতে যোগ দিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু রাইয়ান আশয়ারী
  • বাংলাদেশ থেকেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে শিক্ষার্থীরা: অধ্যাপক আবরার
  • রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটের মহোৎসবের পথ বন্ধ করতে হবে: সাংবাদিক নেতা আজিজ
  • '‌দেশের ভেতরই শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ দেখবে- এমন শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি'
  • ‌দেশের ভেতরই শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ দেখবে- এমন শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি
  • ‌‘দেশের ভেতরই শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যত দেখবে- এমন শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি’
  • ‌‘দেশের ভেতরেই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যত দেখতে পাবে এমন শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি’
  • দেশের ভেতরেই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যত দেখতে পাবে এমন শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি
  • যেকোনো উপায়ে গ্রিনল্যান্ড ‘দখল’ করবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প