অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযানে গিয়ে তাঁদের কাছেই ভাড়া চাইলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। ভাড়া দেওয়া নিয়ে সমঝোতায় আসতে এক সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, ভাড়া দিলে তাঁদের ব্যবসার বৈধতা দেবেন।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা জানান মোহাম্মদ এজাজ। এর আগে উত্তর সিটির জায়গা দখল করে গড়ে তোলা ইট বিক্রির কয়েকটি গদিঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এ ছাড়া অভিযানে গাবতলী পশুর হাট–সংলগ্ন জায়গায় টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রায় ৪০টি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়।

উচ্ছেদে যাওয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ অভিযান নিয়ে মিডিয়া কাভারেজের অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাবতলী বেড়িবাঁধ থেকে বিজিবি মার্কেট পর্যন্ত ইট, বালু, পাথরের গদিঘর, আড়তসহ আশপাশের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে।

এখানকার যে অবৈধ ব্যবসাটি আছে, আমরা সেটি একটি বৈধ ফ্রেমওয়ার্কে নিয়ে আসতে চাই। বৈধ ফ্রেমওয়ার্কে আনার জন্যই এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা আমাদের একটা রাষ্ট্রীয় এস্টিমেট করে ফেলব, কী পরিমাণ রেভিনিউ আমরা এখান থেকে পাব। সেই অনুযায়ী তাঁদের সঙ্গে বসে নেগোশিয়েট করে আমরা একটি অ্যামিকেবল সলিউশনে আসতে পারব বলে আশা করি।মোহাম্মদ এজাজ, ডিএনসিসির প্রশাসক

ঘোষণা অনুযায়ী আজ আধঘণ্টার এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘এখানে যাঁরা ব্যবসা করছেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের আমরা সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে হয় তাঁরা তাঁদের এই মালপত্র নিয়ে সরে যাবেন অথবা সিটি করপোরেশনকে ভাড়া দিয়ে তাঁদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।’

মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, ‘এখানকার যে অবৈধ ব্যবসাটি আছে, আমরা সেটি একটি বৈধ ফ্রেমওয়ার্কে নিয়ে আসতে চাই। বৈধ ফ্রেমওয়ার্কে আনার জন্যই এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা আমাদের একটা রাষ্ট্রীয় এস্টিমেট করে ফেলব, কী পরিমাণ রেভিনিউ আমরা এখান থেকে পাব। সেই অনুযায়ী তাঁদের সঙ্গে বসে নেগোশিয়েট করে আমরা একটি অ্যামিকেবল সলিউশনে আসতে পারব বলে আশা করি।’

‘ভাড়ার একটি সরকারি নিয়ম আছে। আমাদের যে ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন ও স্টেটের যাঁরা কর্মী আছেন, তাঁরা এই পুরো জায়গাকে এখন স্কয়ার ফুট হিসাবে এস্টিমেট করবেন। কতগুলো গদি আছে, কতগুলো অ্যাকোমোডেট করা সম্ভব, কতগুলো আকোমোডেট করা সম্ভব না দেখবেন’, বলেন এই প্রশাসক।

এর আগে উত্তর সিটির প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়ে তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতির বিষয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর যে কতগুলো কমিটমেন্ট ঢাকাবাসীকে দিয়েছি, তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে, সিটি করপোরেশন ও সরকারের যে সম্পত্তিগুলো আছে, সেগুলো দখলমুক্ত করা। এটা আমার একটি বড় ম্যান্ডেটের একটি।’

আরও পড়ুন‘এমন পুকুর চুরি কইরা ফালাইব, এটা তো হতে পারে না’২০ জুলাই ২০২৩

অবৈধ দখলে থাকা করপোরেশনের জায়গাকে পার্ক ও খোলা জায়গায় রূপান্তর করা তাঁর দুটি বড় কাজের একটি বলে জানান ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘কারণ, ঢাকার প্রত্যেক মানুষের এটি অধিকার যে তারা পার্কে যাবে, ওপেন স্পেসে ঘোরাঘুরি করবে। এই খোলা জায়গা ঢাকার সবচেয়ে বড় সংকট।’ আর দ্বিতীয় কাজটি হলো, সরকারের অনেক সম্পত্তি যেগুলো বেদখলে আছে, সেসব জায়গা থেকে অর্থ আয় করা।

এ বিষয়ে এই প্রশাসক বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে বড় যে জায়গা, সেটি আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার পেছনে। এখানে প্রায় ৩০ একরের ওপরে জায়গা.

..সামনের রাস্তা বেড়িবাঁধ...তারপরে আমাদের জায়গা আছে প্রায় দেড় শ একর।’

অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আজ বুধবার উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ সময় দোকানঘর সরিয়ে নেন কেউ কেউ। গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ধ ফ র মওয় র ক ড এনস স আম দ র র একট ব যবস গ বতল

এছাড়াও পড়ুন:

গাবতলী বেড়িবাঁধে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

রাজধানীর গাবতলী বেড়িবাঁধে বুধবার সকালে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ইট, বালু ও পাথরের আড়ৎ ঘরসহ মালামাল সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের সাতদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। 

উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান, সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম।  

অভিযানের বিষয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তিগুলো দখলমুক্ত করা আমাদের দায়িত্ব। সিটি কর্পোরেশনের এসব জায়গা দখলমুক্ত করে মাঠ ও পার্ক করা হবে। গাবতলী বেড়িবাঁধে রাস্তার দুই পাশে ডিএনসিসির দেড়শ একর জায়গা আছে। এর বেশিরভাগ জায়গা দীর্ঘ সময় ধরে দখল করে রাখা হয়েছে। এগুলো আমরা উচ্ছেদ করব। আজ থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে, অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলবে।

তিনি বলেন, এখানে ইট পাথরের আড়ৎসহ নানা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলছে অবৈধভাবে। তারা সিটি কর্পোরেশন থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেয়নি, এখান থেকে সিটি কর্পোরেশন রাজস্বও পাচ্ছে না। এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে কোনো নোটিশের প্রয়োজন নাই। 

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সাতদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মালামাল সরিয়ে নিতে হবে অথবা তারা বৈধ উপায়ে সিটি কর্পোরেশনকে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবেন। আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করবে। কোনো প্রকার অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ দখলদারিত্ব আর চলবে না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাবতলী বেড়িবাঁধে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ