বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে আমদানিকৃত চাল স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়ের প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিকে অবহিত করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি টিসিবি’র মাধ্যমে বিক্রির জন্য ১০ হাজার মে. টন মসুর ডাল ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বুধবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় প্রস্তাব দুটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

সভা সূত্রে জানা গেছে, জরুরি প্রয়োজনে বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে ১ লাখ মে. টন চাল আমদানির একটি প্রস্তাব গত ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখের ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির’ সভায় সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মে. টন বাসমতি চাল আমদানির জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৯টি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে ৮টি লটের দরদাতার মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রে ৫০ হাজার মে. টন বাসমতি সিদ্ধ চালের জন্য উদ্ধৃত দর প্রাক্কলিত বাজার দরের চেয়ে তুলনামূলক  অনেক বেশি হওয়ায় টিইসি কর্তৃক দরগ্রহণ না করার সুপারিশ করে। সিদ্ধান্ত বাতিলের বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে কমিটির সভায় তাতে সম্মতি দেওয়া হয়।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মে. টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। 

টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের নিকট ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার মে. টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান শেখ এগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ এই ডাল সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। 

উল্লেখ্য ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মসুর ডাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৮৮ হাজার মে. টন। এ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তি সম্পাদন হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৫০ মে. টন।

ঢাকা/হাসানাত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ত দরপত র র জন য কম ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য চুক্তির শর্ত প্রস্তুত, আজ থেকে আলোচনা

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, এই বাণিজ্য চুক্তির টার্মস অব রেফারেন্স বা চুক্তির শর্তাবলি ঠিক হয়ে গেছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, এই টার্মস অব রেফারেন্সে শুল্ক, অশুল্ক বাধা, উৎস বিধি ও শুল্কায়ন সহজীকরণ—সবকিছুই আমলে নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স এখন ভারত সফরে আছেন। তাঁর এই সফরের মধ্যেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির টার্মস অব রেফারেন্স বা শর্তাবলি নির্ধারণ করা হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই ভারতের শুল্কনীতির সমালোচনা করেছেন। তিনি একাধিকবার ভারতকে শুল্কের রাজা আখ্যা দিয়েছেন। এই বাস্তবতায় গত ফেব্রুয়ারিতে নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্রে সফরের পর বা এমনকি তার আগে থেকেই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্কের হার যৌক্তিককরণের উদ্যোগ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারতে তাদের পণ্যে গড় শুল্কহার ১৭ শতাংশ; বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর মধ্যে এই শুল্কহার অন্যতম সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির বলেছেন, চলমান আলোচনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য সম্পর্কে ভারসাম্য ও পারস্পরিক সমঝোতা অর্জন করা সম্ভব। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য যেমন নতুন বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে, তেমনি যেসব অন্যায় আচরণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সেসব অন্যায় আমলে নেওয়া সম্ভব হবে।

জেমিসন আরও বলেন, এই আলোচনায় ভারত গঠনমূলকভাবে অংশ নিচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চায়, উভয় দেশেই শ্রমিক, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হোক।

ওয়াশিংটনে আজ শুরু হচ্ছে বাণিজ্য আলোচনা

আজ বুধবার থেকে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে ভারতের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল। ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, এই আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক। এই দুই পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। গত ১২ মার্চ ভারতসহ বিশ্বের সব দেশের পণ্যে এই শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৫ কোটি ডলার।

দিল্লি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম জমানায় জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যে যথাক্রমে ২৫ ও ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ২০১৯ সালের জুনে ভারতও কাঠবাদামসহ যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি পণ্যে শুল্ক আরোপ করে। একই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অভিযোগ জানায় দিল্লি। ২০২০ সালে আপসের মাধ্যমে এই বিবাদের মীমাংসার সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। শুল্ক প্রত্যাহার করে উভয় পক্ষই। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম প্রবেশের অনুমতি পায়। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন আবার এই দুই ধাতুতে শুল্ক আরোপ করেছে।

শুল্ক থেকে বাঁচতে যা যা করেছে ভারত

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে ভারত শুরু থেকেই তৎপর। তারা জানত, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক কমানো না হলে তাদের অবস্থাও চীনের মতো হতে পারত। সে জন্য তারা আগে থেকেই কর হ্রাসসহ নানাবিধ উদ্যোগ নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য যেমন কাঠবাদাম ও ক্র্যানবেরিতে তারা আগেও শুল্ক কমিয়েছে। চলতি বছরের মার্চে তারা এসব পণ্যে আরও শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দেয়। রয়টার্সের আরেক সংবাদে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ২৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের মধ্যে ৫৫ শতাংশের ওপর শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছে ভারত।

৬ মার্চ লোকসভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতে গড় আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ করা হয়েছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ এক প্রশ্নের জবাবে জানান, ২০২৩ সালে ভারতের সরল গড় শুল্কহার ছিল ১৭ শতাংশ। ২০২৫-২৬ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটের পর সরল গড় শিল্প শুল্ক ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

সম্প্রতি লোকসভায় অর্থ বিল পাসের সময় ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য যে ৬ শতাংশ করারোপ করা হতো, সেটাও তুলে নেওয়া হয়েছে। মূলত ইলন মাস্কের এক্স, গুগল ও মেটার ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হতো। বার্তা পরিষ্কার, সুর নরম করেছে নয়াদিল্লি।

এ ছাড়া চলতি বছরের বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের মোটরসাইকেলে শুল্ক হ্রাস করে ভারত। তখন যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড হারলে ডেভিডসনের আমদানিতে ভারত আরও ১০ শতাংশ শুল্ক হ্রাস করে। এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত হারলে ডেভিডসনের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছিল। এবারের বাজেটে যা আরও কিছুটা কমানো হয়।

২০২১-২২ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের পণ্য বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত ছিল ৪১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ১৮০ কোটি ডলার; আগের কয়েক বছরের তুলনায় যা বেশি। এই ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রং হারিয়েছে বিশ্বের ৮৪ শতাংশ প্রবালপ্রাচীর
  • গৃহকর নিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে বাসিন্দাদের হট্টগোল
  • স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স বাতিল
  • রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে
  • ফুটবলার মোরসালিনের বিবাহ বিচ্ছেদ, স্ত্রীর মামলা প্রত্যাহার
  • আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এজিএমের সময় পরিবর্তন
  • অর্থ উপদেষ্টার কাছে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানিকারকদের ৬ দাবি
  • যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য চুক্তির শর্ত প্রস্তুত, আজ থেকে আলোচনা
  • বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • বাটা সুর ৪৪৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা