পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা নির্মিত আলোচিত সিনেমা ‘অ্যানিমেল’। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায় এটি। এতে প্রথমবার জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রণবীর কাপুর-রাশমিকা মান্দানা। মুক্তির পর সিনেমাটি যেমন সমালোচনার মুখে পড়েছিল, তেমনি বক্স অফিসেও ঝড় তুলেছিল।

‘অ্যানিমেল’ সিনেমায় একটি দৃশ্য সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে দেখা যায় রণবীর কাপুরকে। প্রস্থেটিক ব্যবহার করে দৃশ্যটির শুটিং করার কথা ছিল। কিন্তু সর্বশেষ তা হয়নি। প্রস্থেটিক ছাড়া শুটিং করার কথা বলার সঙ্গে রাজি হয়ে যান রণবীর। মূলত, সন্দীপ রেড্ডি ভাঙার উপরে আস্থা রেখে নগ্ন হয়ে বিনা বাক্যে শট দেন এই অভিনেতা।    

কয়েক দিন আগে স্ক্রিন-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা। এ আলাপ চারিতায় তিনি বলেন, “আমার যা পছন্দ, তারও তাই পছন্দ ছিল। কিন্তু এখনো জানি না এটা কীভাবে হয়েছিল। এমনকি, আমি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি কিনা, তখনো সে আমাকে বলেছিল, ‘যা করতে চান তা করতে থাকুন, এ নিয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে হবে না।”

আরো পড়ুন:

ছাবা ঝড়: ১৬ দিনে আয় ৮২৫ কোটি টাকা

‘ছাবা’ ঝড়: ১১ দিনে আয় ৬২১ কোটি টাকা

রণবীরের নগ্ন দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা বলেন, “রণবীরের উরু এবং তার শরীরের নিচের অংশে প্রস্থেটিক ব্যবহার করেছিলাম। পরীক্ষামূলক শুটিংয়ে এটি নিখুঁত দেখাচ্ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত শুটিংয়ের সময়ে সুন্দর লাগছিল না। দৃশ্যটি সম্পূর্ণ ফোকাসে রেখে শুটিং করার পরিকল্পনা করেছিলাম। হাঁটার সময়ে কুঁচকে যাওয়া অংশ ঢেকে রাখার জন্য প্রপস ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু প্রস্থেটিক সঠিকভাবে কাজ না করায় বলেছিলাম, ‘দৃশ্যটির শুটিং ফোকাসের বাইরে করব।”

পরের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে সে (রণবীর) বলল, ‘ওকে, ঠিক আছে।’ এ নিয়ে কোনোরকম আলোচনা হয়নি। এটি দশ মিনিটের কথোপকথন ছিল, যেখানে আমি বলেছিলাম, ‘আউট অব ফোকাসে শুটিং করব। এতে করে দৃশ্যটিকে আরো বেশি ভুতুড়ে এবং কৌতূহলী করে তুলবে।’ সে প্রস্তুত ছিল। দেখুন, ফলাফল যেকোনো কিছু হতে পারে। কিন্তু যদি এটি ঘটে, তবে সিনেমাটি মজার হবে; সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হবে।”

রণবীর কাপুরের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া হওয়ার কারণে এমন সাহসী দৃশ্য রূপায়ন করা সম্ভব হয়েছে বলেও মনে করেন এই পরিচালক।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রণব র ক প র রণব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিনা লাভের দোকানে’ নিম্নবিত্তের স্বস্তি

খুলনা নগরীর শিববাড়ী মোড়। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় সেখানে দেখা মেলে একদল মানুষের জটলা। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, নতুন একটি দোকানে বসে চিড়া, মুড়ি, সয়াবিন তেল, আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিক্রি করছেন তিন-চার যুবক।

দোকানের ওপরে ব্যানারে লেখা– ‘পবিত্র মাহে রমজানে জনমনে স্বস্তি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বিনা লাভের দোকান। কেনা দামে পণ্য বিক্রি। আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম, খুলনা।’ সেখান থেকে বেশ আগ্রহ নিয়ে পণ্য কিনছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

বিক্রেতারা জানান, তারা সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। কোনো লাভ ছাড়াই মোট ১৬ ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি আলু ১৭ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, শসা ২৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ছোলা ৯৫ টাকা, মুড়ি ৬৫ টাকা, বেসন ৬০ টাকা, চিড়া ৬০ টাকা, টমেটো সাড়ে ৭ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা, ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা, সয়াবিন তেল এক লিটারের বোতল ১৭৫ টাকা এবং লেবু প্রতি হালি ২৭ টাকায় বেচছেন। এ ছাড়া রয়েছে ধনিয়া পাতা ও বোম্বাই মরিচ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী জানান, গত অক্টোবরে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে তারা নগরীর শিববাড়ী মোড়, বয়রা বাজার, নতুন বাজার, গল্লামারী, দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড ও খালিশপুর চিত্রালী মার্কেটে ‘বিনা লাভের দোকান’ চালু করেছিলেন। তখন ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পান। রোজার সময় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আবারও সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে তারা আবারও এ দোকান চালু করেছেন।

তিনি আরও জানান, প্রথমে শিববাড়ী মোড়ে এ দোকান চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি পয়েন্টে চালু করা হবে। রমজানজুড়ে তাদের এ কার্যক্রম চলবে। হৃদয় বলেন, তারা পণ্য কেনার পর পরিবহন খরচসহ মূল্য নির্ধারণ করছেন। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগুলো বিক্রি করছেন। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ দোকান চালু থাকবে। 

বাজার মনিটরিং কন্ট্রোল টিম সদস্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাঈম মল্লিক, টিম সদস্য আরিফুল ইসলাম সানি ও রাইসা ইসলাম জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূলত বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য না কমা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।   

শিক্ষার্থীরা জানান, নিজেদের টাকায় পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন তারা। কারও কাছ থেকে কোনো অনুদান নেননি।

এই দোকান থেকে আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল ও মুড়ি কেনার পর ইজিবাইক চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, বাজারের তুলনায় এখানে দাম অনেক কম। নগরীর আরও কিছু পয়েন্টে এ ধরনের দোকান চালু করলে লোকজন রোজায় কম দামে জিনিসপত্র কিনতে পারত।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আলম শেখ বলেন, বাড়ি যাওয়ার সময় লোকের ভিড় দেখে এলাম। আমি ছয় আইটেম কিনেছি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে আরও কিছু পণ্য এবং বিক্রির পয়েন্ট বৃদ্ধি করলে ভালো হবে। তাহলে আরও অনেকে উপকৃত হবেন। শিক্ষার্থীরা অসাধারণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ