ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ
Published: 5th, March 2025 GMT
রাষ্ট্র পুনর্গঠন কাঠামোতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের দাবিতে রাজশাহীতে রেললাইন অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজার সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করেন তারা। পরে, দুপুর ১টায় তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এতে দেড় ঘণ্টা পর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন সমকালকে জানান, এই কর্মসূচির ফলে দুইটি ট্রেন দেরিতে চলছে। ধুমকেতু ট্রেনের ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট এবং কপোতাক্ষ ট্রেনের ৫৫ মিনিট দেরি হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উপস্থাপন করে আজকের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- ১.
এর আগে একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, ৫ আগস্টের বিজয়ের পর আমাদের প্রত্যেকের আকাঙ্ক্ষা ছিল আমরা সবাই একসঙ্গে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করব। কিন্তু এতদিন পরে এসেও আমরা দেখছি ঢাবি বা ঢাকা কেন্দ্রিক নির্দিষ্ট একটি সিন্ডিকেটের কাছে রাষ্ট্র বন্দি হয়ে গেছে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা শ্রেণির মানুষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অস্বীকার করে এককভাবে ক্ষমতার কেন্দ্র ঢাবি বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে করা হয়েছে। আজকে রেললাইন অবরোধ করে আমরা দাবি জানাচ্ছি, আন্দোলনের প্রত্যেকটা অংশীদার ও পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে হবে।
আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশের প্রত্যেকটা প্রাইভেট-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয়, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের একটা দুর্গ গড়ে উঠেছিল। কিন্তু বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সেই একক আধিপত্যবাদের ব্যাপারটা আবার চলে এসেছে।
তিনি বলেন, ইউজিসি-পিএসসিতে সদস্য, সংস্কার কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, এমনকি উপদেষ্টামণ্ডলী—সবকিছুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনে দেশের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান থেকে রক্ত ঝরেছে, তাহলে সুবিধা কেন একটি প্রতিষ্ঠান পাবে?
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মে দিবসে মঞ্চে ‘মার্ক্স ইন সোহো’
আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এবং ৫মে কার্ল মার্ক্স এর ২০৮তম জয়ন্তী উদযাপনকল্পে নাট্য সংগঠন বটতলা এবং যাত্রিক-এর যৌথ প্রযোজনা ‘মার্ক্স ইন সোহো’ নিয়ে আবার মঞ্চে আসছে। টানা তিন দিন তিনটি প্রদর্শনী থাকছে এই আয়োজনে।
প্রখ্যাত আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও তাত্ত্বিক হাওয়ার্ড জিন রচিত, জাভেদ হুসেন অনুদিত এবং নায়লা আজাদ নির্দেশিত এই নাটকটি প্রথম মঞ্চে আসে ২০২১ সালের অক্টোবরে।
মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর পরে কার্ল মার্ক্স কি সত্যি সোহোতে বা পৃথিবীতে ফিরেছেন? ফেরার প্রয়োজনীয়তাও কি আছে? এই যে পৃথিবীতে বাস করছি আমরা যেখানে নানা বৈষম্য বিদ্যমান, শ্রমিক তাঁর ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত, তাঁর জীবন যেখানে মূল্যহীন, যেখানে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা এবং ভেতরে ভেতরে চিৎকার- রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা হঠাৎ হঠাৎ বাইরে বেরিয়ে আসা দু-একটি চিৎকারেরও টুটি চেপে ধরা- এমন অস্থির সময়ে মানুষের মুক্তি কোথায়? গোটা বিশ্ব যেখানে পুঁজিবাদের দাস, সেখানে কার্ল মার্ক্স কি ফিরছেন এসব থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে নাকি তাঁর নামে চালু বদনামগুলো পরিস্কার করতে? এসবই জানা যাবে নাটকের নানা স্তরে, বোঝা যাবে শুধু একজন দার্শনিক নন, এক ব্যক্তি কার্ল মার্ক্সকেও।
দুনিয়ার অন্যতম জরুরি দার্শনিক কার্ল মার্ক্স, যিনি উনবিংশ শতাব্দী থেকে আজও মানুষের সমাজের ইতিহাস ও রাজনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছেন তাকে নিয়ে নাটক মার্ক্স ইন সোহো বা সোহোতে মার্ক্স! হাওয়ার্ড জিন তাঁর সোহোতে মার্ক্স নাটকে দুনিয়া কাঁপানো চিন্তক মানুষটির দৈনন্দিন প্রেম বা খেদের ভেতর দিয়ে সত্যিকারের একজন মানবিক স্বাপ্নিক দ্রষ্টার ছবি এঁকেছেন। এর পেছনে জিনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মার্ক্স নন, বরং মার্ক্সের চিন্তা বা বিশ্লেষণ। দেড়শো বছর পেরিয়ে এসেও কী অসামান্য প্রাসঙ্গিক এবং জরুরি সেসব চিন্তা সেটা দেখানোই জিনের উদ্দেশ্য। নাটকটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বটতলার সাথে যুক্ত হয় যাত্রিক।
বটতলা এবং যাত্রিক-এর এই যৌথতা জিনের দেখা মানবিক মার্ক্সকে এবং তাঁর অসামান্য বিস্ফোরক বিপ্লবী চিন্তাকে আরও বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে এটুকুই প্রত্যাশা।