মানুষের অবহেলাই সেন্টুর শক্তি, সে–ই এখন তারকা
Published: 5th, March 2025 GMT
‘আমার মা একটি সেলাই মেশিন দিয়ে দরজির কাজ করে আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে আসেন...।’ কথাগুলো কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন তরুণ অভিনেতা আবদুল্লাহ আল সেন্টু। ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। সেদিন চ্যানেল আই ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২-এর বেস্ট রাইজিং স্টার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন এই অভিনেতা। চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে আয়োজিত আইসিটি ডিভিশন প্রেজেন্টস অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আজ ৫ মার্চ তরুণ এই অভিনেতার জন্মদিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন এই অভিনেতাকে। গ্ল্যামার নয়, শুধু অভিনয় দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। বিনোদন জগতে সেন্টুর আলাদা পরিচিতি। জন্মদিনে আবার জানব সেন্টুর উঠে আসার গল্প; কষ্টের সেই দিনগুলোর কথা।
সেই শনিবার সন্ধ্যার কথা মনে পড়ছে। সেন্টুর জীবনের গল্প শুনে অনেকে আপ্লুত হয়েছিলেন। পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে মা ও মামিকে নিয়ে মঞ্চে উঠেছিলেন সেন্টু।
অভিনয় করে প্রথম পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল সেন্টু বলেন, ‘আমি গর্বিত এমন একজন মা পেয়ে। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার মা একটি সেলাই মেশিন দিয়ে আমাকে এ পর্যন্ত এনেছেন। গ্রামের অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু মা আমার এগিয়ে চলায় সহযোগিতা করেছেন। আমাকে ঘৃণা করা ও ভালোবাসা দুই পক্ষের কাছেই চিরকৃতজ্ঞ। ভালো কাজ করে যেতে চাই, ভালো মানুষ হতে চাই।’
‘বাংকার বয়’ সিরিজের একটি দৃশ্যে আবদুল্লাহ আল সেন্টু। ছবি: প্রথম আলো.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মে দিবসে মঞ্চে ‘মার্ক্স ইন সোহো’
আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এবং ৫মে কার্ল মার্ক্স এর ২০৮তম জয়ন্তী উদযাপনকল্পে নাট্য সংগঠন বটতলা এবং যাত্রিক-এর যৌথ প্রযোজনা ‘মার্ক্স ইন সোহো’ নিয়ে আবার মঞ্চে আসছে। টানা তিন দিন তিনটি প্রদর্শনী থাকছে এই আয়োজনে।
প্রখ্যাত আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও তাত্ত্বিক হাওয়ার্ড জিন রচিত, জাভেদ হুসেন অনুদিত এবং নায়লা আজাদ নির্দেশিত এই নাটকটি প্রথম মঞ্চে আসে ২০২১ সালের অক্টোবরে।
মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর পরে কার্ল মার্ক্স কি সত্যি সোহোতে বা পৃথিবীতে ফিরেছেন? ফেরার প্রয়োজনীয়তাও কি আছে? এই যে পৃথিবীতে বাস করছি আমরা যেখানে নানা বৈষম্য বিদ্যমান, শ্রমিক তাঁর ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত, তাঁর জীবন যেখানে মূল্যহীন, যেখানে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা এবং ভেতরে ভেতরে চিৎকার- রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা হঠাৎ হঠাৎ বাইরে বেরিয়ে আসা দু-একটি চিৎকারেরও টুটি চেপে ধরা- এমন অস্থির সময়ে মানুষের মুক্তি কোথায়? গোটা বিশ্ব যেখানে পুঁজিবাদের দাস, সেখানে কার্ল মার্ক্স কি ফিরছেন এসব থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে নাকি তাঁর নামে চালু বদনামগুলো পরিস্কার করতে? এসবই জানা যাবে নাটকের নানা স্তরে, বোঝা যাবে শুধু একজন দার্শনিক নন, এক ব্যক্তি কার্ল মার্ক্সকেও।
দুনিয়ার অন্যতম জরুরি দার্শনিক কার্ল মার্ক্স, যিনি উনবিংশ শতাব্দী থেকে আজও মানুষের সমাজের ইতিহাস ও রাজনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছেন তাকে নিয়ে নাটক মার্ক্স ইন সোহো বা সোহোতে মার্ক্স! হাওয়ার্ড জিন তাঁর সোহোতে মার্ক্স নাটকে দুনিয়া কাঁপানো চিন্তক মানুষটির দৈনন্দিন প্রেম বা খেদের ভেতর দিয়ে সত্যিকারের একজন মানবিক স্বাপ্নিক দ্রষ্টার ছবি এঁকেছেন। এর পেছনে জিনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মার্ক্স নন, বরং মার্ক্সের চিন্তা বা বিশ্লেষণ। দেড়শো বছর পেরিয়ে এসেও কী অসামান্য প্রাসঙ্গিক এবং জরুরি সেসব চিন্তা সেটা দেখানোই জিনের উদ্দেশ্য। নাটকটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বটতলার সাথে যুক্ত হয় যাত্রিক।
বটতলা এবং যাত্রিক-এর এই যৌথতা জিনের দেখা মানবিক মার্ক্সকে এবং তাঁর অসামান্য বিস্ফোরক বিপ্লবী চিন্তাকে আরও বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে এটুকুই প্রত্যাশা।