Risingbd:
2025-04-07@18:42:57 GMT

হাসপাতালে রোগীর লঙ্কাকাণ্ড

Published: 5th, March 2025 GMT

হাসপাতালে রোগীর লঙ্কাকাণ্ড

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হাওয়া এক রোগীর চিৎকার-চেঁচামেচিতে অতিষ্ঠ ডাক্তার, নার্স এবং রোগীরা।

গত সোমবার (৩ মার্চ) রাতে শাহনাজ নামের ওই নারী হাসপাতালে আসেন। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি রাখেন। এ সময় তার স্বামী আল-আমিন সঙ্গে ছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে তার স্বামী বাড়িতে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের মারধর, তাদের জিনিসপত্র ও হাসপাতালের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন।

হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স কয়েক দফায় তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে আশপাশের রোগীদের নিরাপত্তা স্বার্থে তাকে হাসপাতালে একপাশে জানলার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আফিয়া বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘‘তার অস্বাভাবিক আচরণে আমরা অতিষ্ঠ। কখনো রোগীদের তেড়ে গিয়ে মারধর করছেন, কখনো জিনিসপত্র ভেঙে ফেলছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে তার যন্ত্রণায় হাসপাতালে টেকা দায়।’’

আরেক রোগী সালমা আক্তার বলেন, ‘‘রোগীদের হাত থেকে ইনজেকশন দেওয়ার ক্যানোলা খুলে ফেলছেন। স্যালাইন টাঙানোর স্ট্যান্ড, ব্যাগ, খাবার নিয়ে ফেলে দিচ্ছেন। পুরো মহিলা ওয়ার্ডের ভেতরে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি।’’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.

দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘ওই নারী সম্ভবত মানসিক কোনো রোগে আক্রান্ত। এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয় বিশেষ পদ্ধতিতে, সেই ব্যবস্থা আমাদের হাসপাতালে নেই। আমরা রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।’’

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। একজন রোগীর জন্য যাতে অন্য রোগীদের সমস্যা না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’

ঢাকা/রতন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অটিস্টিক শিশুদের ভাষা সমস্যায় মা–বাবার করণীয়

অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা অটিজম হচ্ছে শিশুদের মস্তিষ্কের বর্ধনমূলক বা বিকাশমূলক বৈকল্যের একটি সমষ্টিগত অবস্থা, যা প্রধানত মাতৃগর্ভকালীন সৃষ্টি হয় ও জন্মের পর প্রাথমিক কিছু উপসর্গ দিয়ে এই রোগের লক্ষণের প্রকাশ ঘটে। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ভাষার সমস্যা’। ভাষা হচ্ছে যোগাযোগের অর্থাৎ মনের আবেগ ও চিন্তা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের মৌলিক আবেগ–আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ মনোগত অবস্থা, যেমন চিন্তা, অভিপ্রায়, কামনা, অভিলাষ, স্বপ্ন, কল্পনা ও ছলনা ইত্যাদি অন্যের কাছে প্রকাশ করি এবং অন্যের মনেও যে এগুলোর অস্তিত্ব আছে, তা বুঝতে পারি। যোগাযোগ ও সামাজিকতা তখনই একটি মানুষের স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অর্থবোধক হয়, যখন ভাষার বাচনিকতার সঙ্গে অবাচনিকতার বিভিন্ন উপাদান যুক্ত হয়ে অন্যের কাছে অর্থবহ রূপে প্রতিবেশ ও পরিবেশ অনুযায়ী প্রকাশ হয়।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা।

প্রকৃতির সহজাত নিয়মে যখন কোনো শিশু চিন্তা ও আবেগ অন্যের কাছে প্রকাশ করতে না পারবে, তখন তার আচরণগত সমস্যা তৈরি হবে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ভাষা বিকাশ ও প্রকাশে লক্ষণীয় ত্রুটি দেখা যায়। ফলে এই শিশুদের মধ্যে কিছু অকার্যকর বা অনুপোযোগী আচরণ, যেমন বারবার পুনরাবৃত্তি, অন্তর্ঘাতমূলক, আগ্রাসনমূলক আচরণ পরিলক্ষিত হয়, যা তার দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

এ ধরনের সমস্যা একটি শিশুর নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা থেকে শুরু করে তার সামাজিক দক্ষতা ও বুদ্ধিদীপ্ততার সার্বিক বিচ্যুতি বা বিকারের পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। আর এর মাত্রা হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন, যা নির্ভর করে একটি শিশুর ভাষা আয়ত্তকরণের উপায়গুলো অর্থাৎ ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থের ওপর।

মা–বাবার করণীয়

কোনো শিশুর মধ্যে ‘ভাষা সমস্যা’ পরিলক্ষিত হলে তার চিকিৎসা শুরুর আগে উচিত রোগ নির্ণয় করা। শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কি না, নির্ণয় করতে হবে এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি নেওয়ার উপযোগী কি না, সেটাও নির্ণয় করতে হবে। এটি নির্ণয় করবেন একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং প্রয়োজনে ওষুধও প্রদান করবেন অকার্যকর বা অনুপযোগী আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য।

একজন চিকিৎসা ভাষাবিদ একটি শিশুর মধ্যে ভাষার উপাত্তগুলোর কোনটি, কতটুকু আক্রান্ত হয়েছে, তা খুঁজে বের করেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাব্যবস্থা ‘স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি’ দিয়ে থাকেন। যত তাড়াতাড়ি একটি শিশুর এ উপাত্তগুলো খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে, তত তাড়াতাড়ি শিশুর আচরণগত অবস্থার উন্নতি হবে। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে উপাত্তগুলোর কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা, যাতে সে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বোঝা না হয়ে যায়।

ডা. ফাহমিদা ফেরদৌস, চিকিৎসা ভাষাবিদ ও মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক (মানসিক রোগ বিভাগ), জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনী আচরণবিধিমালার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত: আনোয়ারুল ইসলাম
  • শিকলবন্দি বাবুল বৈষ্ণব
  • সপ্তাহের প্রথম দিনেই এশিয়ার শেয়ার বাজারে বড় ধস, কমেছে তেলের দাম
  • ভারতের ‘বিতর্কিত’ ওয়াক্ফ বিল মুসলমানদের প্রতি আইনি সহিংসতা: বিবৃতিতে ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়া
  • অটিস্টিক শিশুদের ভাষা সমস্যায় মা–বাবার করণীয়