পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৫ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোর (পঞ্চম তালা) ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সাইফুর রহমানকে কেন বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো, তার জবাব চান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউ কেউ বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পতদ্যাগ দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও হতাশা আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ— কমিশনারদের খারাপ আচরণ ও ১২ কোম্পানির তদন্তের আলোকে শোকজ করা। সব মিলিয়ে বাজে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বিএসইসিতে। মঙ্গলবার নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারির পর পরিস্থিতি আরো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। তাই, বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশে উল্লেখ করা রয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের চারকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু কমিশন জনস্বার্থে তাকে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে, সেহেতু বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০২১ এর ৬৩ বিধি এবং এতদ-সংশ্লিষ্ট সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে ৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ৯৪৫তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

এর আগে রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই গত বছরের ২২ আগস্ট সাইফুর রহমানকে ইস্যুয়ার কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে আরঅ্যান্ডডি বিভাগের দায়িত্ব দেয়। তখনই মূলত তাকে একপ্রকার ওএসডি করা হয়। তবে, ৯ সেপ্টেম্বর সেই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। সেই থেকে সাইফুর রহমান নিয়মিত অফিসে এসেছেন, কিন্তু কোনো কাজ করতে পারেননি।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষেভ চলছিল।  

ঢাকা/এনটি/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র কর মকর ত ক অবসর

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’

‘ক্রিকেটের মক্কা’ খ্যাত লর্ডসে সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের। বয়স ছিল কেবল ১৭ বছর। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের যেই রেলগাড়িতে মুশফিকুর চড়েছিলেন, ধীরগতির সেই বাহন এখন তাকে নিয়ে গেছে নব্বই পেরিয়ে। 

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটের হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে নব্বইয়ের ঘর ছুঁয়েছিলেন মুশফিকুরের। তার টেস্ট ম্যাচ সংখ্যা এখন ৯৪। ইনজুরিতে না পড়লে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে আরো দুইটি টেস্ট ম্যাচ যোগ হতো। তার সামনে একশ টেস্ট খেলার হাতছানি। পারবেন কী মুশফিক? সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। 

সেই প্রশ্নটা আরো একবার উঠল তার ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার দিনে। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়েন মুশফিকুর। গতকাল রাতে ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার অনন্য মাইলফলকের সামনে মুশফিকুর। বন্ধু তামিম ইকবালের একমাত্র চাওয়া, মুশফিক যেন অন্তত ১০০ টেস্ট খেলতে পারে। 

আরো পড়ুন:

বিষন্ন মুশফিকুরের ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা

এভাবেও ম্যাচ হারা যায়?

এক ভিডিও বার্তায় তামিম বলেছেন, ‘‘তুই একটা ফরম্যাট খেলবি, টেস্ট ফরম্যাট। আমি প্রত্যাশা ও প্রার্থনা করি তুই যেন ভালো করিস এবং অন্তত যেন ১০০ টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারিস। যেটা বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলেনি। আমি আশা করবো ১০০ টেস্ট অবশ্যই খেলবি। এটাই।’’ 

১০০ টেস্ট খেলতে হলে মুশফিককে এ বছর পুরোটা সময় ফিট থাকতে হবে, পারফর্ম করতে হবে। এপ্রিলে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল বাংলাদেশে আসছে। আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম অনুযায়ী জুন-জুলাইয়ে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা সফর করবে। সেখানে ২ টেস্ট খেলবে। এরপর বছরের শেষ দিকে আয়ারল্যান্ড সফরে রয়েছে আরো ২ টেস্ট। এই ৬ টেস্ট খেলতে পারলে মুশফিকের নাম ইতিহাসের অক্ষয় কালিতে লিখা থাকবে নিশ্চিতভাবেই। 

মুশফিকুরের ওয়ানডে অবসরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তামিম। তার কথা বলতে গিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন, ‘‘এমন একজন ব্যক্তি আজ (গতকাল) অবসরে গেলেন, যার সঙ্গে আমার অলমোস্ট ২০-২৫ বছরের সফর। একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আসলে মানুষকে বুঝাতে পারতাম না আমার অনুভূতিটা তার প্রতি কী বা আমার কেমন মনে হচ্ছে।’’

‘‘মুশফিককে আমি এতোটুকুই বলতে চাই, দোস্ত তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে এবং আমি তোকে প্রতিটি স্তরে উন্নতি করতে দেখেছি। আমি দেখেছি, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেক মানুষের, আপনাদের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি আমি দেখেছি যে, একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব আমার কাছে মনে হয় সে সবই করেছে এবং এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এতো কষ্ট করে কেন? কিন্তু তার নিবেদন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা এটা কল্পনার বাইরে। আমি কথা বলে কোনোদিন কাউকে বোঝাতে পারব না।’’

মুশফিকুরের অবদান বাংলাদেশ ক্রিকেট মনে রাখবে বলে বিশ্বাস তামিমের, ‘‘আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন, বন্ধু আমি, এটা অনুভব করতে পারছি এটা ওর জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক। বন্ধু তুই যা অর্জন করতে পেরেছিস, যে-টুকুই তুই করেছিস তা অসাধারণ ছিল। অধিনায়ক হিসেবে, খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য…বাংলাদেশের প্রত্যেকে বছরের পর বছর তা মনে রাখবে।’’

‘‘আমি সত্যি বলতে, এখন বেশ আবেগতাড়িত। আমি অনুভব করতে পারছি তোর এখন কেমন লাগছে।বাংলাদেশ তোকে নিশ্চিতভাবেই মিস করবে। বাংলাদেশের জন্য তুই যা করেছি তা অনেক বছর মনে রাখবে। আমি ভাগ্যবান যে ডিপিএল তোর সঙ্গে খেলতে পারছি। আরো কিছু সময় কাটাতে পারব। অনেক ধন্যবাদ মুশফিক, সব কিছুর জন্য।’’

ঢাকা/ইয়াসিন 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুশফিকের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’
  • বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগের দাবিতে কাল থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা
  • বিএসইসি চেয়ারম্যান-কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি, নইলে কর্মবিরতি
  • সেনাবাহিনীর সহায়তায় চেয়ারম্যান-কমিশনারদের বিএসইসি ত্যাগ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা অবরুদ্ধ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার অবরুদ্ধ
  • বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
  • বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুরকে বাধ্যতামূলক অবসর