নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বোরো চাষে বিদ্যুতের সেচসংযোগের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ‘খারনৈ ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর বৈঠাখালী গ্রামের মাঠে এলাকার কৃষক সমাজ’–এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় ভুক্তভোগী কৃষকেরা দাবি করেন, বিদ্যুতের অভাবে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় জমিতে চাষাবাদ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, বিশ্বনাথপুর বৈঠাখালী গ্রামের কৃষক হুমায়ূন কবীর ২০২০ সালে সেচসংযোগ চালু করেছিলেন। এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষকের প্রায় ২০ একর জমিতে সেচ দেওয়া হতো। গত এপ্রিলে ওই সেচসংযোগের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৮ হাজার ৬৯৩ টাকা বকেয়া ছিল। তখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরের মাসে টাকা পরিশোধ করা হলেও বিদ্যুৎ–সংযোগ আর দেওয়া হয়নি।

হুমায়ূন কবীর অভিযোগ করেন, কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) তাপস দেবনাথ বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের জন্য তাঁর কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেন। এতে কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম ও ডিজিএমকে বিবাদী করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জবাব দেয়নি। আদালত ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন, তবে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি। এজিএম এখন উল্টো শর্ত দিচ্ছেন, মামলা তুলে নিলে সংযোগ দেওয়া হবে।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাপস দেবনাথ বলেন, ‘বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের নামে কারও কাছে কোনো টাকা চাওয়া হয়নি। এটা মিথ্যা অভিযোগ। আর বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের জন্য কোনো আবেদনও করা হয়নি।’

স্থানীয় কৃষক রতন মিয়া বলেন, তিনি খালের পানি দিয়ে দুই একর জমিতে ধান আবাদ করেছেন। খালের পানি এখন শুকিয়ে গেছে। ধানখেতে সেচ দিতে পারছেন না। সব কৃষকের খেত হুমকির মুখে পড়েছে। সেচ প্রকল্পে দ্রুত বিদ্যুৎ–সংযোগ না দিলে ফসল রক্ষা করা যাবে না।

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মাসুম আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। হুমায়ূনকে যেখানে সেচের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেখানে স্থাপন করেননি। তবে আদালতের নির্দেশটি আমার জানা নেই। আদালত নির্দেশ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলম ক ন দ

এছাড়াও পড়ুন:

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাদমান অলীভ বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু আজকের ঘটনা না। এটা যুগের পর যুগ ধরে ঘটে আসছে। আমার কোন বোন যদি সাধারণ কামিজ পরেও বাসে উঠে, কেউ কেউ তার দিকেও খারাপভাবে তাকায়। আমি আজ ভাই হিসেবে ব্যর্থ। আমরা যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতে পারি, তাহলে এই মানববন্ধন কখনোই থামবে না। আমরা চাই যেভাবে দেশে সহিংসতা হচ্ছে, মবের নামে নারীদের নির্যাতন, নিপীড়ন করা হচ্ছে; এর দ্রুত অবসান হোক।”

আরো পড়ুন:

জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাবিতে হামলাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতা

‘ছাত্রদল চাইলে গুপ্ত সংগঠনের অস্তিত্ব থাকবে না’

পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, “পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যের ব্যাপারটি আমাদের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের হতে পারিনি। প্রকাশ্যে ধুমপান করা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই অনুচিত। কিন্তু আমরা দেখি ছেলেরা প্রায়ই ধূমপান করছে, শুধু নারীর ক্ষেত্রেই সমস্যা। মব জাস্টিসের নামে যে ধরনের নিপীড়ন করা হয়েছে, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। আমরা এর নিন্দা জানাই।”

তিনি বলেন, “একটা পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়, সেট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান না হয়ে মব জাস্টিসের মাধ্যমে যে ঘটনাগুলো ঘটানো হয়, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। রাষ্ট্র, সমাজ এবং যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, সবাই মিলে এ বিষয়টাকে সামনে রেখে সহনশীল আচরণ করার জন্য যা যা কর্মসূচি দরকার, সেগুলো পালন করার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। রাষ্ট্রের উচিৎ, এ মব জাস্টিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।”

সমাপনী বক্তব্যে জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, “বারবারই একটা বলি যে, হে রাষ্ট্র, মেয়েদের বন্দিত্বের দায় না নিয়ে নিরাপত্তার দায় নাও। অথচ হতাশার সঙ্গে আমরা দেখি, এ রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা মেয়েদের বন্দিত্বের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অধিক আগ্রহী। মেয়েদের নিরাপত্তা দানের ব্যাপারে তাদের ন্যুনতম কোনো আগ্রহ বা সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাই না‌। একটি সংবাদে দেখলাম, গত এক মাসে প্রায় ২৩৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যা বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত নিন্দাজনক।” 

তিনি আরো বলেন, “স্বাধীনতার ৫৫ বছর বয়সেও এ দেশ আসলে মেয়েদের কোন সম্মান দিতে পারেনি । আমরা বারবার দেখছি ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে, নিপীড়নমূলক ঘটনা ঘটছে, নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করা হচ্ছে। কিন্তু দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে এ রাষ্ট্র বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে গত এক মাসে ২৩৮টির মতো ধর্ষণের ঘটনা দেখি। এ মেয়েদের গত জুলাইয়ে দেখেছি, সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁধ মেরামত চাই বর্ষার আগে
  • সুবিপ্রবির অস্থায়ী ক্যাম্পাস স্থানান্তরের দাবি
  • অভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতে জাবি প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ
  • নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
  • রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টরকে ‘ইন্ধনদাতা’ বলার প্রতিবাদে মানববন্ধন–বিক্ষোভ
  • অটোরিকশার চালককে হত্যার প্রতিবাদ
  • সাতক্ষীরার সাবেক ডিসি নাজমুল আহসানের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন 
  • বার কাউন্সিলের অযৌক্তিক ফি নির্ধারণের প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন
  • মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্র উপদেষ্টা ফারুকীর টেবিলে