তোমার অগ্রযাত্রাই তোমার শক্তি: সাবিহা সুলতানা স্বপ্না
Published: 5th, March 2025 GMT
ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবীদের ভিড়ে কিছু পেশার অবদান সবসময়েই রয়ে যায় পর্দার আড়ালে। এমনই এক খাতে বছরের পর বছর নীরবে কাজ করে চলেছেন সাবিহা সুলতানা স্বপ্না। বিগত ১৬ বছর যাবত তিনি কাজ করে চলেছেন পরিবহন খাতে লজিস্টিকস নিয়ে। পুরুষপ্রধান এই খাতে শক্ত হাতে পরিচালনা করে চলেছেন নিজ মালিকানার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- শাওনশন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি।
বগুড়ায় জন্ম নেওয়া সাবিহা সুলতানা ২০০৯ সালে যোগ দেন লজিস্টিকস ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই থেকে তিনি এগিয়ে চলছেন। কাজ করেছেন ইউনিলিভারের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বর্তমানে ভাবছেন দেশের বাইরেও ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা।
অগ্রগামী হিসেবে নিজের ভাবনা নিয়ে সাবিহা বলেন, সততার সঙ্গে পথ দেখাও, নিজের কাজের মাধ্যমে অন্যকে উদ্বুদ্ধ করো এবং প্রতিটি প্রতিকূলতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে আরও শক্ত করে গড়ে তোলো।
তিনি বলেন, নেতৃত্ব দেওয়া মানে শুধু শক্তি প্রদর্শন নয়, ক্ষমতার ব্যবহার নয়, বরং নিজের প্রকৃত ব্যক্তিত্বের প্রকাশ। এর মাধ্যমে শুধু অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করার মনোভাব থাকলে হবে না বরং গড়ে তুলতে হবে এমন উদাহরণ যাতে অন্যরাও নেতৃত্ব প্রদানে উৎসাহিত হয়।
পুরুষপ্রধান ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে বার বারই প্রত্যাখ্যানের মুখ দেখেছেন সাবিহা সুলতানা। শুরুটা করেন মাত্র দুটি ট্রাক, আর অল্প কিছু সেবাগ্রহীতা এবং বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের ব্যবসায়ীদের উপকারে ঝামেলাবিহীন উপায়ে পণ্য পৌঁছে দেওয়াই ছিল তার লক্ষ্য। তিন বছরের মাঝে তার ব্যবসার পরিধি বাড়ে। দুইটি থেকে দশটি ট্রাক নিয়ে তিনি ব্যবসা চালাতে থাকেন প্রায় ত্রিশটি শহরে। এতে দ্রুত ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়, কমে আসে খরচ, আরও বেড়ে যায় তার ব্যবসার আওতা। উদ্যোক্তা হিসেবে তা ছিল তার জন্য বড় এক স্বপ্নপূরণ।
শুধু নিজের লক্ষ্যপূরণ নয়, বরং নারী নেতৃত্বে চালিত অন্যান্য ব্যবসার উপকারেও কাজ করতে চান সাবিহা সুলতানা। যেসব নীতিমালা ব্যবসা, সমাজ ও বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে, সেসব নীতিমালা প্রণয়নে নারীর কণ্ঠস্বর উঠে আসবে, এই আশা করেন তিনি। বর্তমানে প্রযুক্তি অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এই প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেন নারীর জন্য আরও নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করে, তা নিশ্চিত করতে হবে, তিনি বলেন।
এই যুগেও নারী ও পুরুষের মাঝে অনেক বৈষম্য রয়ে গেছে। চাকরির ক্ষেত্রে বেতনের পরিমাণে, পদোন্নতি এবং নেতৃত্বস্থানে আজও পেছনে পড়ে আছেন নারীরা। ঘুচিয়ে দিতে হবে এই বৈষম্য। ব্যবসা ক্ষেত্রে আরও বেশি নারীকে এগিয়ে আসতে হবে, পরিবর্তন আসতে হবে তাদের হাত ধরেই বলে মনে করেন সাবিহা সুলতানা স্বপ্না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ‘এক্সেলারেট অ্যাকশন-এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দ্য ফিউচার’ ক্যাম্পেইনের অধীনে সাবিহা সুলতানার সংকল্প ও ইচ্ছা শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
সাবিহা সুলতানার মতো অগ্রগামী হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে আরও অনেক নারীর। তাদের উদ্দেশ্যে সাবিহার উপদেশ, ‘সামনে আগাতে থাকো। প্রতিটি প্রতিকূলতা তোমাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। একাগ্রতা থেকেই আসে উন্নতি, আর সাফল্য তো তারই প্রাপ্য যে সহজে সন্তুষ্ট হয় না। নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকো, লক্ষ্যে নিবিষ্ট থাকো, পরিশ্রম অব্যাহত রাখো। তোমার অগ্রযাত্রাই তোমার শক্তি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিনকে ছয়টি হাতি উপহার মিয়ানমার জান্তার
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ছয়টি হাতি উপহার দিয়েছেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্ল্যাইং। মঙ্গলবার মস্কো সফরের সময় এ উপহার দেন তিনি। খবর বার্তা সংস্থা তাসের।
সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে ছয়টি যুদ্ধবিমান কিনেছে মিয়ানমার। বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাশিয়া ও মিয়ানমারের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার একটি প্রয়াস এ হাতি উপহার। অনেকে একে ‘হাতি কূটনীতি’ বলছেন। মঙ্গলবার ক্রেমলিনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন জান্তাপ্রধান।
বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। মিয়ানমারে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিতেও সই হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু বিদ্যুৎ কোম্পানি রোসাটমের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারে ১০০ মেগাওয়াটের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এ কেন্দ্র নির্মাণ শেষে পরিচালনার দায়িত্বও রোসাটমের হাতে থাকবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ২০২৪ সালে দুই দেশের বাণিজ্য ৫০ শতাংশ বেড়েছে। উপহারের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আপনার এ বন্ধুত্বপূর্ণ উপহারের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। হাতিগুলো ইতোমধ্যেই মস্কোর চিড়িয়াখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে।’ মিয়ানমারে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখারও আশ্বাস দেন তিনি।