বেশ বিরতির পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে [বিটিভি] একক কোনো সংগীতানুষ্ঠানে গান গেয়েছেন ফোক গানের নন্দিত কণ্ঠশিল্পী দিলরুবা খান। ‘সুরের মালা’ সংগীতানুষ্ঠানটির রেকর্ডিং সম্প্রতি বিটিভির নিজস্ব স্টুডিওতে হয়েছে। অনুষ্ঠানটির প্রযোজক তারিকুজ্জামান মিলন। মকসুদ জামিল মিন্টুর সংগীত পরিচালনায় এর গ্রন্থনা ও গবেষণা করেছেন কাজী ফারুক বাবুল। জানা গেছে, এতে দিলরুবা খান গেয়েছেন ‘নির্জনও যমুনার কূলে’, ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’, ‘পাগল মন’, ‘তোমার আমার দুই মেরুতে বাস’, ‘দরদী’সহ আরও কয়েকটি গান। শিগগিরই বিটিভিতে অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে। 

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে দিলরুবা খান বলেন, ‘বেশ বিরতির পর বিটিভির জন্য গান গাইতে পেরে ভালো লেগেছে। এতে আমার বেশির ভাগ জনপ্রিয় গানগুলো করেছি। ক্যারিয়ারের এই সময় এসেও গান করছি। বিটিভি আমার প্রাণের জায়গা। এ চ্যানেলটি থেকে যখন কোনো গানের প্রস্তাব আসে আর না করতে পারি না। তাছাড়া সবসময় গানের মধ্যেই থাকতে ভালোবাসি। গান থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। অনুষ্ঠানে ৮টি গানই লাইভ গেয়েছি। লাইভ গাওয়ার আলাদা একটা মজা আছে।’ 

শিল্পী আবদুল আলীমের গান গেয়ে গানের জগতে যাত্রা শুরু দিলরুবা খানের। তাঁর বাবা সৈয়দ হামিদুর রহমান রাজশাহী ও রংপুর বেতারের শিল্পী হলেও তিনি চাননি তাঁর মেয়ে গান করুক। তবুও গানের প্রতি প্রবল আকর্ষণ আর নিজস্ব প্রতিভার কল্যাণে লোকগানে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন দিলরুবা। তাঁর গাওয়া ‘দুই ভূবনের দুই বাসিন্দা, বন্ধু চিরকাল’ গানটি গাওয়ার পর তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৯১ সালে তাঁর গাওয়া ‘পাগল মন’ এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে, তাঁর নামই হয়ে যায় পাগল মন দিলরুবা। সংগীতের প্রতি ভালোবাসা, সুরের মায়া তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছে এক শ্রুতিমাধুর্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে। 

গান গাওয়ার পাশাপাশি বাসায় গাছের যত্ন, রান্নাবান্না ও সংগীতচর্চা করে কাটে দিলরুবা খানের সময়। মাঝে মাঝে নিজের ‘দিলরুবা খান অফিসিয়াল’ ইউটিউব চ্যানেলে নতুন নতুন গান প্রকাশ করে থাকেন তিনি। সম্প্রতি ‘পথিকের পথ’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর গাওয়া গান ‘দরদি’। গানটি লিখেছেন পথিক। পাশাপাশি সুরও করেছেন তিনি। 

‘দরদি’ গান প্রসঙ্গে দিলরুবা খান বলেন, ‘‘আমি ভেতর থেকে গান গাইতে পছন্দ করি। ‘রেললাইন’, ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’, ‘নির্জন যমুনার কূলে’– এ জাতীয় গান গাইতে আমার বেশ ভালো লাগে। ‘দরদি’ গানটি তেমনই। গানটি যারা শুনেছেন তাদের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছি। ভালো গানের শ্রোতা সবসময়ই থাকেন। এর প্রমাণ বার বার পাচ্ছি। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নত ন গ ন অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা, জরুরি ভিত্তিতে শুনতে অস্বীকার

ওয়াক্‌ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একের পর এক মামলা হলেও সুপ্রিম কোর্ট জরুরি ভিত্তিতে তা শুনতে অস্বীকার করলেন।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার এজলাসে মামলার দ্রুত শুনানির অনুরোধ জানান আইনজীবী কপিল সিবাল। জামায়াত উলামা–ই–হিন্দের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানির করা মামলার আইনজীবী সিবাল প্রধান বিচারপতিকে বলেন, এই আইনের বিরোধিতা করে বহু মামলা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত তা লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিতে এবং সওয়াল শুনানি করতে তিনি প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানান।

প্রধান বিচারপতি অনুরোধের জবাবে বলেন, আদালতের একটা ব্যবস্থা আছে। সেই ব্যবস্থা অনুযায়ী আদালত চলবে। সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দুপুরে তাঁর কাছে পেশ করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ওয়াক্‌ফ আইন চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। জামায়াত উলামা-ই-হিন্দ ছাড়াও মামলা করেছেন এআইএমআইএম নেতা ও পার্লামেন্ট সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি, কংগ্রেসের নেতা ও সংসদ সদস্য মহম্মদ জাভেদ, আম আদমি পার্টির নেতা আমানুল্লা খান। বিহারের বিরোধী দল আরজেডির পক্ষেও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে চলেছেন সংসদ সদস্য মনোজ ঝা ও সংগঠনের নেতা ফয়াজ আহমেদ।

ওয়াক্‌ফ আইনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সোমবার জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় শাসক জোটের সদস্যরা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) পক্ষ থেকে আইনের বিরোধিতা করে প্রস্তাব গ্রহণ করার কথা জানানো হলে স্পিকার আবদুল রহিম রাথের বলেন, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে এখন মুলতবি প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

স্পিকারের এই রুলিংয়ের পর বিধানসভায় স্লোগান শুরু হয়। বিরোধী নেতা বিজেপির সুনীল শর্মা বলেন, পার্লামেন্ট বিল পাস করেছে। রাষ্ট্রপতি বিলে সই করার পর তা আইন হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। এ অবস্থায় বিধানসভার কোনো এখতিয়ারই নেই ওই আইন নিয়ে আলোচনা করার। প্রস্তাব গ্রহণের।

শাসক দলের ভূমিকায় অখুশি পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, রাজ্য সরকারের উচিত তামিলনাড়ু সরকারের কাছে থেকে শিক্ষা নেওয়া। ওয়াক্‌ফ আইনের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু সরকার যে দৃঢ় মনোভাব গ্রহণ করেছে, তেমনই মনোভাব নেওয়া উচিত রাজ্য সরকারের। মনে রাখতে হবে, জম্মু-কাশ্মীর দেশের একমাত্র মুসলমান–গরিষ্ঠ রাজ্য।

পিডিপির পক্ষে বলা হয়, ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও সিএএ মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় বিধানসভায় প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। অথচ এবার স্পিকার তা হতে দিলেন না।

ওয়াক্‌ফ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরে গত শুক্রবার মুসল্লিরা হাতে কালো কাপড়ের টুকরা বেঁধে নামাজে অংশ নিয়েছিলেন। সেটা ছিল তাঁদের নীরব প্রতিবাদ। জেলা পুলিশ সিসিটিভি দেখে সেই প্রতিবাদকারীদের মধ্যে ৩০০ জনকে শনাক্ত করে তাঁদের থানায় হাজির হওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছে।

জেলা পুলিশের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে শহরের ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কশ্যপ ওই ব্যক্তিদের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ২ লাখ রুপির বন্ড জমা দিতে বলা হয়েছে। ওয়াক্‌ফ নিয়ে তাঁরা এমন কিছু করবেন না, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়, এই মর্মে তাঁদের মুচলেকা দিতে বলা হচ্ছে।

আইন নিয়ে পাল্টা প্রচার শুরু করেছে বিজেপিও। প্রথমত, তারা বলছে, এই আইন মুসলমানদের ধর্মাচরণে কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না। ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি পরিচালনার ক্ষেত্রে যে অনিয়ম, বৈষম্য ও দুর্নীতি চলছে, এ আইন তা দূর করবে। বিজেপির দ্বিতীয় যুক্তি, ওয়াক্‌ফের নামে মুসলমানরা দেশে ‘ভূমি জিহাদ’ চালাচ্ছে। ওয়াক্‌ফ বোর্ড লাগিয়ে যেকোনো জমি জবরদখল করা হচ্ছে। নতুন আইন এ প্রবণতা রুখবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ