কক্সবাজারের উখিয়ায় এক রোহিঙ্গা নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ নুর (২৮)। তিনি উখিয়ার তানজিমার খোলা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-২০) হেড মাঝির (নেতা) দায়িত্বে ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওই আশ্রয়শিবিরের এম-৩২ ব্লকের একটি মসজিদ থেকে তারাবিহ নামাজ পড়ে ফেরার পথে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন দুর্বৃত্তরা।

নিহত মোহাম্মদ নুরের বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের সিকদারপাড়ায়। তাঁর বাবার নাম আবু সৈয়দ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশ পালিয়ে আসে তাঁর পরিবার। এর পর থেকে ক্যাম্প-২০-এ বসবাস করে আসছেন।

আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক মো.

সিরাজ আমিন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বছর রমজানেও মোহাম্মদ নুরকে কুপিয়ে আহত করেছিল দুর্বৃত্তরা। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে এপিবিএন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোহিঙ্গা নেতা জানান, নিহত নুর বছরখানেক আগেও মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সক্রিয় সদস্য ছিলেন। আরসা ছেড়ে পরে তিনি মিয়ানমারের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন। এ কারণে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

রোহিঙ্গা নেতাদের বরাতে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদ নুরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। নিহত নুর ২০ নম্বর ক্যাম্পে হেড মাঝির দায়িত্বে ছিলেন। তারাবিহ নামাজ শেষ করে বাড়িতে যাওয়ার পথে ছয়-সাতজন সন্ত্রাসী তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নুরের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

আলোচনায় রাজি ইউক্রেন, প্রস্তুত রাশিয়াও

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার টেবিলে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর কাছ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ তথ্য জানান। 

ট্রাম্প বলেন, আজ সকালে আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পেয়েছি। এতে বলা হয়েছে, ‘স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনার টেবিলে আসতে প্রস্তুত ইউক্রেন। ইউক্রেনীয়দের চেয়ে বেশি শান্তি আর কেউ চায় না।’ 

ট্রাম্প জানান, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় আছেন। রাশিয়াও শান্তির জন্য প্রস্তুত আছে– এমন জোরালো ইঙ্গিত পেয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘এটি কি সুন্দর হবে না? এই পাগলামি বন্ধ করার সময় এখন। সময় এখন এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার। সময় এখন এই অর্থহীন যুদ্ধ বন্ধ করার। যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলতে হবে।’ ইউক্রেন তাদের মূল্যবান খনিজসম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করতেই গত শুক্রবার জেলেনস্কি ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন। কিন্তু হোয়াইট হাউসের ওভাল দপ্তরে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ফলে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। 

এর পর ট্রাম্পের নির্দেশে ইউক্রেনে সব ধরনের মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়। পরে জেলেনস্কি ট্রাম্পের মন জয়ের উদ্যোগ নেন। ট্রাম্পের সঙ্গে আচরণ নিয়ে অনুতপ্ত হন তিনি। 

এদিকে ক্রেমলিন বলেছে, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী। মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, তবে এটি কীভাবে কাজ করবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, ইউক্রেনের রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। 

ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের বিষয়ে তাঁর আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটির জনগণকে ধনী বানানোর আশ্বাসও দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তোমাদের নিরাপদ রাখব, আমরা তোমাদের ধনী বানাব। একসঙ্গে আমরা গ্রিনল্যান্ডকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাব, যা তোমরা আগে কখনও কল্পনাও করোনি।’

ভাষণে ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনকে দোষারোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির জন্য। তিনি বলেন, ডিমের দাম এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্রে  এটি আবার সাশ্রয়ী করে তুলব। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ