ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ‘স্থগিত’ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে অধ্যক্ষ পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আলমগীর হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি স্থগিত নয়, নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আগে থেকেই ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি আসছেন শিক্ষার্থীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ৪ মার্চ কলেজের একাডেমিক কাম-প্রশাসনিক কাউন্সিল সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূর্বের ২০ আগস্ট নোটিশের আলোকে ক্যাম্পাসের ভেতর সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।

২০ আগস্ট জারি করা ওই নোটিশে কলেজের একাডেমিক কাম-প্রশাসনিক কাউন্সিল সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়।

এ বিষয়ে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ বলেন, ‘২০ আগস্ট আমাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এর মধ্যেই ছাত্রদল কমিটি দেয়। এ জন্য আমরা ২০ আগস্টের সিদ্ধান্ত বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামি। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি স্থগিত করার নামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্ত চাইনি। আমাদের এক দফা দাবি, ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ চাই।’

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাজী সুরাইয়া বলেন, তিন-চার দিন আগে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পর থেকে বহিরাগত লোকজন ক্যাম্পাসে আসছেন; মোটরসাইকেলে মহড়া দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মো.

রাসেল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। আমরা কেন রাজনীতি করতে পারব না? এ ক্যাম্পাসের তিন শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার কমিটিতে আছেন। তাঁরা যেহেতু রাজনীতি শুরু করেছেন, আমাদের রাজনীতি করতে কোনো বাধা দেখি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কলেজের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমরা নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে আমাদের আর কোনো কথা নেই।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর ২০ আগস ট কল জ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মালিকানায় থাকা সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো শুরু করেছে নতুন পরিচালনা পর্ষদ। ইতিমধ্যে ব্যাংকটিতে দুজন নতুন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে এই দুজন ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

এ ছাড়া সিটিজেনস ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মাসুমেরও মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁর স্থলে ব্যাংক এশিয়ার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর হোসেনকে এমডি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের পর এই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।

জানা যায়, সিটিজেনস ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদ এটিকে ব্যাংক এশিয়ার আদলে করপোরেট মডেলে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই কারণে শীর্ষ পর্যায়ে ব্যাংক এশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি লোক নিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের পঞ্চম প্রজন্মের ব্যাংকটি ২০২০ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পায়। তখন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। তিনি মারা যাওয়ার পর আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠ তৌফিকা আফতাবকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়।

ব্যাংকটির নথিপত্র অনুযায়ী, সিটিজেনস ব্যাংকে আনিসুল হকের শেয়ার রয়েছে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া পোশাক খাতের আরও সাত ব্যবসায়ীর রয়েছে ১০ শতাংশ করে শেয়ার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ আগস্ট এক চিঠিতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সিটিজেনস ব্যাংকের চেয়ারম্যান তৌফিকা আফতাবের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তৌফিকা আফতাব আনিসুল হকের আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জড়িত।

সূত্র জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের তৃতীয় বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েব। পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান সালমা গ্রুপের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েব। নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমানকে ডিএমডি হিসেবে সিটিজেনস ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দীর্ঘদিন ব্যাংক এশিয়ার বনানী শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। এর বাইরে ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফকেও সিটিজেনস ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ব্যাংক এশিয়ার প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।

জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সিটিজেনস ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মাসুমের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই নতুন এমডি হিসেবে ব্যাংক এশিয়ার ডিএমডি আলমগীর হোসেনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয় ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায়। এখন এমডির এই নিয়োগ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব ওয়াহেদ ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন এমডি নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে ২০২০ সালে অনুমোদন পেলেও ব্যাংকটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি। সারা দেশে ব্যাংকটির ১৫টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির সর্বশেষ ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ১ হাজার ৫ কোটি টাকা। আর এ সময়ে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৩৮ কোটি টাকা।

বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটি ছিল লোকসানি ব্যাংক। ওই বছর ব্যাংকটি কর–পরবর্তী প্রায় দেড় কোটি টাকা লোকসান করেছে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁদা না দেওয়ায় ভেঙে ফেলা হলো সীমানাপ্রাচীর
  • মির্জা ফখরুলকে দেখতে হাসপাতালে রিজভী
  • ময়মনসিংহে ৫ কলেজে ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা
  • শেকৃবিতে শাখা ছাত্রদল সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
  • হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে