কানাডায় পড়াশোনা: ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব পড়বে টিউশন ফি-চাকরিসহ যেসব খাতে
Published: 5th, March 2025 GMT
কানাডার বিরুদ্ধে মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা আজ বুধবার থেকে। শুল্ক কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যাওয়া আগ্রহী শিক্ষার্থী ও পড়ুয়াদের নানা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হবে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বাস্তবায়নের পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় পণ্য ও নানা পরিষেবার দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং চাকরির সুযোগের ওপর নানা প্রভাব পড়বে।
নতুনভাবে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কানাডিয়ান জ্বালানি পণ্যের ওপর আরও (২৫–এর সঙ্গে) অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ ও গরম করার মতো ইউটিলিটি পণ্যের দাম বাড়তে পারে। কানাডা শীতপ্রধান দেশ, তাই শিক্ষার্থীদের বিদ্যুৎ ও ঘর গরম করার মতো ইউটিলিটির বেশি কিনতে ও ব্যবহার করতে হবে।
শুল্ক আরোপের খাদ্যের দামও বাড়তে পারে। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের জন্য কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। এসব শুল্ক আরোপে মুদিদোকানের বিল বাড়বে। ফলে শিক্ষার্থীদের টিকে থাকার জন্য ব্যয় বেড়ে যাবে।
কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের খরচ বা ব্যয় পরিচালনার জন্য খণ্ডকালীন চাকরির ওপর নির্ভর করেন। মার্কিন শুল্কের প্রভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগ কমাবে বা স্থগিত করতে পারে। কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্স ইতিমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছে, এই শুল্ক আরোপ ‘চাকরি হ্রাস ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ ডেকে আনতে পারে।
খুচরা পণ্য বিক্রেতা ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট খাতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত কাজ খুঁজে পান। এসব খাতও কর্মী কমাবে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন শিক্ষার্থীরা। শুল্ক ও করারোপে বাণিজ্য কার্যকলাপ হ্রাসের কারণে অর্থনীতির গতি ধীর হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়ার সুযোগ আরও হ্রাস পেতে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিনা লাভের দোকানে’ নিম্নবিত্তের স্বস্তি
খুলনা নগরীর শিববাড়ী মোড়। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় সেখানে দেখা মেলে একদল মানুষের জটলা। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, নতুন একটি দোকানে বসে চিড়া, মুড়ি, সয়াবিন তেল, আলু-পেঁয়াজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিক্রি করছেন তিন-চার যুবক।
দোকানের ওপরে ব্যানারে লেখা– ‘পবিত্র মাহে রমজানে জনমনে স্বস্তি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বিনা লাভের দোকান। কেনা দামে পণ্য বিক্রি। আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম, খুলনা।’ সেখান থেকে বেশ আগ্রহ নিয়ে পণ্য কিনছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বিক্রেতারা জানান, তারা সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। কোনো লাভ ছাড়াই মোট ১৬ ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি আলু ১৭ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, শসা ২৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ছোলা ৯৫ টাকা, মুড়ি ৬৫ টাকা, বেসন ৬০ টাকা, চিড়া ৬০ টাকা, টমেটো সাড়ে ৭ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা, ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা, সয়াবিন তেল এক লিটারের বোতল ১৭৫ টাকা এবং লেবু প্রতি হালি ২৭ টাকায় বেচছেন। এ ছাড়া রয়েছে ধনিয়া পাতা ও বোম্বাই মরিচ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী জানান, গত অক্টোবরে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে তারা নগরীর শিববাড়ী মোড়, বয়রা বাজার, নতুন বাজার, গল্লামারী, দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড ও খালিশপুর চিত্রালী মার্কেটে ‘বিনা লাভের দোকান’ চালু করেছিলেন। তখন ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পান। রোজার সময় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আবারও সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে তারা আবারও এ দোকান চালু করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রথমে শিববাড়ী মোড়ে এ দোকান চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি পয়েন্টে চালু করা হবে। রমজানজুড়ে তাদের এ কার্যক্রম চলবে। হৃদয় বলেন, তারা পণ্য কেনার পর পরিবহন খরচসহ মূল্য নির্ধারণ করছেন। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগুলো বিক্রি করছেন। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ দোকান চালু থাকবে।
বাজার মনিটরিং কন্ট্রোল টিম সদস্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাঈম মল্লিক, টিম সদস্য আরিফুল ইসলাম সানি ও রাইসা ইসলাম জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূলত বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য না কমা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, নিজেদের টাকায় পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন তারা। কারও কাছ থেকে কোনো অনুদান নেননি।
এই দোকান থেকে আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল ও মুড়ি কেনার পর ইজিবাইক চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, বাজারের তুলনায় এখানে দাম অনেক কম। নগরীর আরও কিছু পয়েন্টে এ ধরনের দোকান চালু করলে লোকজন রোজায় কম দামে জিনিসপত্র কিনতে পারত।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আলম শেখ বলেন, বাড়ি যাওয়ার সময় লোকের ভিড় দেখে এলাম। আমি ছয় আইটেম কিনেছি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে আরও কিছু পণ্য এবং বিক্রির পয়েন্ট বৃদ্ধি করলে ভালো হবে। তাহলে আরও অনেকে উপকৃত হবেন। শিক্ষার্থীরা অসাধারণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে।