বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে সংঘটিত বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

বুধবার (৫ মার্চ) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানটি জেনেভা থেকে ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান দল বাংলাদেশে জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের অনুসন্ধান ও সুপারিশ নিয়ে সদস্য রাষ্ট্র ও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করবে।

গত রবিবার (২ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎকালে এ কথা জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।

গত জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই মিলিটারি রাইফেল এবং প্রাণঘাতী মেটাল প্যালেটস লোড করা শটগানে নিহত হয়েছেন।

এ ধরনের শটগান সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে। বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। কেউ কেউ আজীবনের জন্য কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন।

প্রতিবেদনে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিল বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ এবং র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ১১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার এবং আটক করা হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে প্রায় ১২-১৩ শতাংশ শিশু বলে জানা গেছে। পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের টার্গেট করে হত্যা করেছে, ইচ্ছাকৃতভাবে পঙ্গু করেছে, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিকভাবে আটক-নির্যাতন এবং অন্যান্য ধরনের নিপীড়ন করেছে। বিশেষ করে, শুরুর দিকে বিক্ষোভের সম্মুখসারিতে থাকা নারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের সমর্থকরা মারাত্মকভাবে আক্রমণ করেছে।

নারীরা যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ছিল লিঙ্গভিত্তিক শারীরিক সহিংসতা ও ধর্ষণের হুমকি। কয়েকটি ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার কুরস্কে সেনা মোতায়েনের কথা নিশ্চিত করল উত্তর কোরিয়া

রাশিয়ায় সেনা মোতায়েনের কথা প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ আজ সোমবার জানিয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের সেনারা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন কুরস্ক সীমান্ত অঞ্চল পুনর্দখলে রাশিয়াকে সাহায্য করেছে।

এর কয়েক দিন আগেই উত্তর কোরিয়ার সেনাদের যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করে রাশিয়া। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই জানাচ্ছিল, পিয়ংইয়ং গত বছর কুরস্কে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা পাঠিয়েছিল।

উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর উপদলটি রাষ্ট্রপ্রধানের নির্দেশ অনুযায়ী কুরস্ক এলাকা মুক্ত করতে অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে।’

কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ছিল পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির অধীনে।

কিম বলেন, ‘ন্যায়বিচারের জন্য যারা লড়ছে, তারা সবাই মাতৃভূমির গর্ব এবং সম্মানের প্রতিনিধিত্বকারী।’

আরও পড়ুন কুরস্ক ‘পুনর্দখলে’ রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সেনারা, প্রশংসায় মাতল মস্কো১৭ ঘণ্টা আগে

কিম আরও বলেছেন, যুদ্ধের বীরত্বগাথার স্মরণে রাজধানীতে শিগগিরই একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। তিনি ‘শহীদ সেনাদের সমাধিফলক’ স্থাপনের কথাও উল্লেখ করেছেন। এতে প্রকাশ্যে নিশ্চিত করা হলো, যুদ্ধে উত্তর কোরীয় সেনারা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদের পরিবারের প্রতি বিশেষ সম্মান দেখানো হবে এবং তাদের দেখভালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরও পড়ুনপুতিন একটা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন?২৬ এপ্রিল ২০২৫

কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের মতে, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের দুঃসাহসী আক্রমণ প্রতিহত করে কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার অভিযানে বিজয় হয়েছে।’

রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ গত শনিবার উত্তর কোরীয় সেনাদের ‘বীরত্বের’ প্রশংসা করে বলেছিলেন, তাঁরা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি দলকে পরাজিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করেছে।

আরও পড়ুনইউক্রেনে রুশ যুদ্ধশিবির থেকে দুর্বিষহ জীবনের গল্প বললেন এই বাংলাদেশি তরুণ২৬ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ