ছুটি নিয়ে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন আরডিএর কর্মকর্তা, কিন্তু পৌঁছাতে পারলেন না
Published: 5th, March 2025 GMT
কর্মস্থল থেকে মোটরসাইকেলে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন জয়ন্ত কুমার রায় (৩৫)। পথে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার ব্র্যাক মোড় এলাকার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জয়ন্ত কুমার রায় বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ছিলেন। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জয়ন্ত কুমার রায়ের সহকর্মী ও স্বজনেরা জানান, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন জয়ন্ত। সেখানে আগেই তাঁর স্ত্রী-সন্তান গিয়েছিলেন। গতকাল আরডিএতে দাপ্তরিক কাজ শেষে জয়ন্ত বিকেল চারটার দিকে মোটরসাইকেলে রওনা হন। সন্ধ্যার দিকে পলাশবাড়ি উপজেলার ব্র্যাক মোড় এলাকায় দ্রুতগতির একটি কাভার্ড ভ্যান মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে জয়ন্ত সড়কে ছিটকে পড়েন এবং কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। খবর পেয়ে পলাশবাড়ী থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
আরডিএ বগুড়ার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল মজিদ বলেন, জয়ন্ত কুমার পরিবার নিয়ে আরডিএর আবাসিক কোয়ার্টারে থাকতেন। পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা আগেই লালমনিরহাট গিয়েছিলেন। জয়ন্ত এক দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে সড়ক দুর্ঘটনা তিনি নিহত হয়েছেন। এমন মৃত্যুতে আরডিএর সহকর্মীরা শোকাহত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ব র ক অন ষ ঠ ন জয়ন ত ক ম র
এছাড়াও পড়ুন:
জীবন ফিরে পাওয়া ইগলের বাচ্চারা
এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। খুব ভোরে শামীমের ফোন পেয়ে জেগে উঠলাম। খবর পেলাম টাঙ্গুয়ার হাওরের কালামপুর থেকে কুড়া ইগলের দুটি বাচ্চা চুরি হয়ে গেছে। চোরেরা বাচ্চাগুলো নিয়ে অটোরিকশায় করে সুনামগঞ্জের দিকে রওনা হয়েছে। এখনই যদি পুলিশ দিয়ে রাস্তায় পাহারা বসানো যায়, তাহলে বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা সম্ভব। তখন আমি সুন্দরবনের একটি নৌকায়। এত সকালে কী করব, কিছুই মাথায় আসছিল না। প্রথমেই ফোন করলাম বন অধিদপ্তরের ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের সহকর্মী অসীম মল্লিককে। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। একটু পরে অসীম জানালেন, তিনি সুনামগঞ্জের ওসিকে বলেছেন। তাঁর কথায় স্বস্তি পেলাম।
শামীম আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী। প্রায় দুই যুগ ধরে হাওরে আমার নৌকাচালক। এখন পাখি বিষয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে কাজ করেন। শামীম একজন চোরের ফোন নম্বর সংগ্রহ করলেন। বুদ্ধি করে গিয়েছিলেন তাহেরপুরের একটি হোটেলে। সেই হোটেলটিতে আগের রাতে চোরের দল ছিল। একজনের ফোন নম্বর পাওয়া গেল হোটেল থেকে। তারপর আমি কল দিলাম তাকে। ফোনের অপর প্রান্তে একটি অচেনা কণ্ঠ আর অটোরিকশার শব্দ। লোকটিকে বললাম পাখিটিকে ফেরত দিতে। না হলে পুলিশের ভয় দেখালাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেল।
কুড়া ইগলের বাচ্চা চুরির ঘটনা এটিই আমার কাছে প্রথম। এ রকম ঘটনা আগে ঘটেছে কি না, জানি না। পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন একটি ইগলের বাচ্চা চুরি হয়ে যাচ্ছে শুনে মনটা খারাপ। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ইগলের বাচ্চা চোরকে আবার পাওয়া গেল। এবার তাকে অনেকক্ষণ বোঝালাম। পাখির বাচ্চাগুলোকে ফেরত দিতে বললাম। না হলে বাচ্চাগুলোর মারা যাওয়ার শঙ্কা আছে।
পাখির বাচ্চাগুলো অটোরিকশায় রেখে চোরের দল পালিয়েছে। শামীম অটোওয়ালার সন্ধান পেল। তাঁকে বুঝিয়ে ফেরত নেওয়া হলো তাহেরপুরে। দ্রুত নৌকা প্রস্তুত করা হলো কামালপুরে যাওয়ার জন্য। একজন পরিচিত গেছোকে নিয়ে শামীম গেলেন কামালপুরে।
কালামপুরের পরিস্থিতি আরও খারাপ। বাচ্চা পাখির মা-বাবা পুরো গ্রাম অস্থির করে ফেলেছে। যাকে পাচ্ছে তাকেই ছোঁ মারার চেষ্টা করছে। বাচ্চাগুলো ফিরে পেয়ে মা-বাবা বুকে জড়িয়ে ধরল। তাদের বাসায় দেওয়া হলো শোল মাছ। পাখিগুলোর হাহাকার কমল।
চুরি যাওয়া বাচ্চা ১ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করে পাখিটির বাসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বাচ্চাগুলো এখন উড়তে শিখেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওরের কামালপুরে