হাইব্রিড মডেলে হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ভারত নিজেদের সব ম্যাচ খেলছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে। যেখানে অন্যদলগুলো দুবাই-পাকিস্তান মিলিয়ে খেলতে হচ্ছে। এমনকি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে স্বাগতিক পাকিস্তানকেও দুবাই যেতে হয়েছিল। ভারতের সঙ্গে সেমিফাইনালে খেলতে হতে পারে, তাই পাকিস্তান থেকে দুবাই উড়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলেছে ভারত। পুরো টুর্নামেন্টেই ভারত বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট অনেকেই। নানান সমালোচনার পর অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন গৌতম গম্ভীর। 

ফাইনালে ওঠার পর সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভারত কোচ গৌতম গম্ভীরের সামনে প্রশ্ন উঠেছিল। যে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ক্ষেপে গিয়েছেন গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘এই ভেন্যু আমাদের জন্য যতটা নিরপেক্ষ, অন্য যেকোনো দলের জন্যও ততটাই নিরপেক্ষ। শেষ কবে এখানে খেলেছি, তা আমার মনে নেই।’

অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে গম্ভীর বললেন, ‘অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। কীসের অতিরিক্ত সুবিধা? আমরা এখানে একদিনও অনুশীলন করিনি। আমরা আইসিসি একাডেমিতে অনুশীলন করছি। ওখানকার কন্ডিশন আর এখানকার কন্ডিশন ১৮০ ডিগ্রি আলাদা। কিছু মানুষ সব সময় অভিযোগ করতেই ভালোবাসে। আসলে তাদের উচিত বড় হওয়া। তাই, আমি মনে করি না যে আমাদের কোনো অতিরিক্ত সুবিধা ছিল।’

সেমিফাইনালে হারের পর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এ নিয়ে। জবাবে স্মিথ বললেন, ‘হ্যাঁ, দেখুন, আমি এতে আগ্রহী নই। আমার মনে হয় এটাই সত্যি। এই পিচ ওদের খেলার স্টাইলের সঙ্গে মানানসই। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ওরা আমাদের বিধ্বস্ত করেছে। জয়টা ভারতের প্রাপ্য ছিল।’

১১ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ভারত। ম্যাচ শেষে রোহিত বললেন, ‘না জেতা পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছিলাম না। ওদের ইনিংস শেষ হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, জিততে গেলে আমাদের ভাল ব্যাট করতে হবে। আমরা সেটাই করেছি। সবাই ঠান্ডা মাথায় খেলেছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র ফ ইন ল গম ভ র

এছাড়াও পড়ুন:

বয়সের ভারে মৃত্যু নয়, হাতিটি হত্যা করা হয় দাঁত ও পায়ের নখ কেটে নিতে

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের জঙ্গল পাইরাংয়ের দমদমার পাহাড় এলাকা থেকে গত বুধবার উদ্ধার হয় একটি বন্য হাতির হাতির মরদেহ। তখন বন বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। তবে এবার বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বয়সের ভারে নয়, দাঁত ও পায়ের নখ কেটে নেওয়ার উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছে হাতিটিকে।

হাতিটিকে হত্যার অভিযোগ এনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁশখালী থানায় দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন বন বিভাগের চেচুরিয়া বিট কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। এ ছাড়া আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ থেকে ১৮ জনকে। নাম উল্লেখ করা দুই আসামি হলেন উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আলী হোসেনের ছেলে মো. সরওয়ার হোসেন (৪৮) এবং একই এলাকার মোহাম্মদ জাফর (৫২)।

মামলার এজাহার ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে আসামিরা সরল ইউনিয়নের জঙ্গল পাইরাংয়ের দমদমার পাহাড় এলাকায় সরওয়ারের লিচুবাগানে হাতিটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, পিঠ ও দুই কানের নিচে এবং পায়ুপথসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে হত্যা করেন। পরে ওই হাতির শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে নিয়ে যান। মামলায় হাতিটির বয়স ৬-৭ বছর উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, মৃত হাতিটির বয়স ১০০ বছরের কাছাকাছি। বয়সের ভারে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়।

বুধবার বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী হাতিটির ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্তে হাতিটির দুটি দাঁত ও চার পায়ের নখ কেটে নেওয়ার তথ্য ওঠে আসে। এরপর গতকাল বিকেলে বাঁশখালী থানায় মামলা করা হয়। বন বিভাগের লোকজন জানান, মামলার আসামিরা সংঘবদ্ধ পাচারকারী।

জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হাতি মেরে দাঁত ও নখ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গতকাল থানায় মামলা হয়েছে। আমরা জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।’

গত ১০ বছরে বাঁশখালীতে অন্তত ১৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে উপজেলার কালীপুর রেঞ্জে ১১টি এবং জলদি রেঞ্জে ৫টি হাতির মৃত্যু হয়। খাদ্যে বিষক্রিয়া, বৈদ্যুতিক ফাঁদ, রোগাক্রান্ত হওয়া, পাহাড় থেকে পড়েসহ নানা কারণে এসব হাতির মৃত্যু হয়েছে।

কালীপুর রেঞ্জের আওতাধীন সাধনপুর এলাকায় ২১৫০ একর এবং পুকুরিয়া এলাকায় ৭৫৯ একর জায়গা আছে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত কালীপুর রেঞ্জ আওতায় ১১টি হাতি মারা গেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৮ জুন আনুমানিক ২০-২৪ বছর বয়সী মাদি হাতি মারা যায় খাদ্য বিষক্রিয়ায়। এর আগে ১১ জুন ১২-১৪ মাসের শাবক, ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ২২-২৫ বছরের মাদি হাতি বৈদ্যুতিক ফাঁদে, ২০২০ সালের ২৯ জুন ৬ বছর বয়সী মাদি হাতি উঁচু পাহাড় থেকে পড়ে, ১৮ জুন ১২ বছরের হাতি বৈদ্যুতিক ফাঁদে, ২৯ মার্চ ৬০ বছর বয়সী হাতি রোগাক্রান্ত হয়ে, ২০১৯ সালের ৩ জুন ১০০ বছরের মাদি হাতি রোগাক্রান্ত, ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর ১৮ বছরের খাদ্য বিষক্রিয়ায়, ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর ১৬ বছরের মাদি হাতি রোগাক্রান্ত হয়ে, ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ৯০ বছরের মাদি হাতি শারীরিক দুর্বলতা এবং এর আগে আগে ৩০-৩৫ বছরের মাদি হাতি বৈদ্যুতিক ফাঁদে মারা যায়।

অন্যদিকে, একই উপজেলার জলদী রেঞ্জে পাঁচটি হাতি মারা গেছে। তার মধ্যে, ২০২৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি জলদী বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের আওতাধীন চাম্বল বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য বিটের জঙ্গল চাম্বল মৌজার মিতাইঝিরি গুন্ডার টেক এলাকায় একটি বন্য হাতি পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। দুই দিন পর চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় হাতিটি। এর বাইরে, ২০২৩ সালের ৮ জুলাই চাম্বলের দুইল্লাঝিরি এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে একটি এবং ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর চাম্বল এলাকার পূর্ব চাম্বলে ধানখেত থেকে একটি হাতির মরদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ