আজকাল ড্রাই আই বা চোখের শুষ্কতার সমস্যা বাড়ছে। বিশেষ করে যাঁরা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন বা দীর্ঘ সময় ধরে টিভি দেখেন বা মুঠোফোন ব্যবহার করেন, এমন ব্যক্তিদের অনেকেই ড্রাই আইয়ের সমস্যায় পড়েন। এসি বা ফ্যানের সরাসরি বাতাস, ঘরে কম আর্দ্রতা বায়ুদূষণের কারণেও ড্রাই আই হতে পারে। ডায়াবেটিস, সিজোগ্রেন সিনড্রোম ও অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের মতো পরিস্থিতিও চোখের শুস্কতার জন্য দায়ী। কিছু ওষুধ যেমন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন ইত্যাদি চোখের শুষ্কতা ঘটাতে পারে। গর্ভাবস্থায় ও মেনোপজের পর নারীদের চোখ শুষ্ক হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চোখের প্রায় ৭৫ শতাংশ পানি। এই পানি শুকিয়ে যাওয়া অনেক রোগের লক্ষণ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে এ পানির উৎপাদন কিছুটা কমে। ৫০ বছর বয়সের পর পুরুষ ও নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
কীভাবে বুঝবেন
চোখে কাঁটার মতো লাগা, কিছু বিঁধে থাকার মতো অনুভূতি, চোখ দিয়ে পানি পড়া চোখের শুষ্কতার পূর্বলক্ষণ। এ কারণে মাথাব্যথা থেকে জ্বর ও নাকবন্ধ রোগও হয়ে থাকে। বারবার মুখ শুকিয়ে যাওয়া, মুখে পর্যাপ্ত লালাগ্রন্থি না থাকা বা কথা জড়িয়ে যাওয়ার সমস্যাও থাকতে পারে।
চিকিৎসা কী
চিকিৎসক শুরুতেই চোখের পানির গুণগত মান, পরিমাণ ও গঠনসম্পর্কিত কিছু পরীক্ষা করবেন। ভিটামিন ‘এ’-এর ব্যবহার এবং কারণ অনুসারে ওষুধ ব্যবহার করলে চোখের শুষ্কতা দূর করা যায়। সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম চোখের পানি ব্যবহার করা যায়। মিথাইল সেলুলোজ, সফট কন্ট্যাক্ট লেন্স, প্যারোটিভ ডাক্ট প্রতিস্থাপনের মাধ্যমেও চোখের শুষ্কতার প্রতিকার করা যায়।
চোখের প্রায় ৭৫ শতাংশই পানি। এই পানি শুকিয়ে গেলে চোখে নানা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।ঘরোয়া প্রতিকার কী
প্রচুর পানি পান করতে হবে। নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করা যায়। খাদ্যতালিকায় ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার রাখুন। একনাগাড়ে না তাকিয়ে চোখের পাতা ফেলা ভালো। মিনিটে ১৫-৩০ বার চোখের পাতা পিটপিট করা প্রয়োজন। ২০ সেকেন্ডের বেশি চোখ খোলা রাখা উচিত নয়। ২০ মিনিট পরপর মনিটর থেকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ সরাতে হবে।
কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখে আই প্রোটেক্টর স্পেকটিক্যাল ব্যবহার করা ভালো। বাইরে বেরোলে ভালো মানের রোদচশমা পরার অভ্যাস করুন। হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ডুবিয়ে সেই কাপড় নিংড়ে নিয়ে চোখের ওপর পাঁচ মিনিট রাখুন। তারপর হালকা চাপে চোখের ওপরের ও নিচের পাতায় কাপড়টা মালিশ করলে চোখের ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এতে চোখের আর্দ্রতাও বাড়বে। পরিষ্কার তুলায় নারকেল তেল দিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিট রাখতে পারেন। দিনে বেশ কয়েকবার এটা করা যায়। পরিষ্কার টিস্যুতে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে চোখের নিচের পাতায় আলতো হাতে মালিশ করুন। ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। এটা দিনে দুবার করতে পারেন।
অধ্যাপক ডা.
সৈয়দ এ কে আজাদ: চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন বিভাগীয় প্রধান, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ খ র শ ষ কত ব যবহ র কর পর ষ ক র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘সুবিধাজনক সময়ে ঢাকা সফর করবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী’
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈঠককালে উভয় পক্ষই গঠনমূলক আলোচনা করেন। বৈঠকে তারা গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় ষষ্ঠ দফা সভা সফলভাবে সমাপ্তিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার দিকে এটিকে তারা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
বল ঘুরল, বাংলাদেশ হাসল
এপ্রিলের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২২৭ কোটি ডলার
পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে উভয়পক্ষের অব্যাহত পর্যবেক্ষণ ও গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের হাইকমিশনার আঞ্চলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেছেন। তিনি নির্দিষ্ট পণ্য ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান ব্যবসায়িক ফোরামের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের চলমান সফর সম্পর্কেও পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেন।
উভয়পক্ষই আশা প্রকাশ করেছে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা সফরের কথা ছিল। তবে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেই সফর স্থগিত হয়ে যায়।
এর আগে গত রবিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি চাই। আমরা জানি যে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন সংঘাতয় সম্পর্ক চলছে। আমরা চাই না এখানে কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিপদের কারণ হোক।
ভারত-পাকিস্তান দুদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা চাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তারা এই সমস্যার সমাধান করুক। আমরা দেখেছি, দু-একটা দেশ থেকে ইতোমধ্যেই মধ্যস্থতারও প্রস্তাব এসেছে। এখন আলাপ-আলোচনা হোক, মধ্যস্থতা হোক, যেভাবেই হোক এই সংকটের সমাধান হোক।
ঢাকা/হাসান/সাইফ