ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সেই বছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। অর্থাৎ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারে ৫২ টাকা করে লভ্যাংশ পাবেন বিনিয়োগকারীরা।

গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২৪ সালের জন্য ইউনিলিভার লভ্যাংশ বেশি দিলেও ওই সময়ে আগের বছরের তুলনায় নিট মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) অনেকটা কমে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসারে সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৪ টাকা ৬২ পয়সা, আগের হিসাববছরে (২০২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৪৯ টাকা ৮৯ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১২৬ টাকা ৮৩ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১২২ টাকা ২১ পয়সা। শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো নগদ প্রবাহ ছিল ২৫ টাকা ৬২ পয়সা; আগের অর্থবছরে যা ছিল ২৫ টাকা ৪৩ পয়সা।

ইপিএস কমার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, গত বছর কোম্পানির রাজস্ব আয় কমে যাওয়া। এ ছাড়া মূল কোম্পানি গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রযুক্তি ও ট্রেডমার্ক ব্যবহারের জন্য নতুন রয়্যালটি আরোপ শুরু করে। একই সময়ে কোম্পানির পরিচালনাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও নগদ ব্যবস্থাপনা উন্নত হওয়ায় ক্ষতিবৃদ্ধি ঠেকানো গেছে।
আগামী ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৬ এপ্রিল। লভ্যাংশ ঘোষণা হওয়ার পর আজ কোম্পানিটির শেয়ারের দামের সীমা থাকবে না।

গত এক বছরে ইউনিলিভার কনজ্যুমারের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৩ হাজার ৩৭০ টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ১ হাজার ৮০১ টাকা। ২০২২ সালে কোম্পানিটি ২৪০ শতাংশ এবং ২০২১ ও ২০২০ সালে ৪৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

এডিপি কমলাে ৪৯ হাজার কোটি টাকা

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার রেকর্ড পরিমাণ ছোট করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ব্যয় কমানো হয়েছে ১৮ শতাংশ। পরিমাণে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। এতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কােটি টাকার। ইতোপূর্বে কখনও এত বেশি হারে এডিপি কাটছাঁট হয়নি।

গতকাল সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে আরএডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। উপদেষ্টা পরিষদের সব সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। 
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আরএডিপির বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এনইসি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সব প্রকল্প ইএমআইএস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে কোন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতির কী অবস্থা, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানা যাবে। যদি কোনো প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য না থাকে তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় করবে না। এ ছাড়া প্রকল্প গ্রহণের পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে কীভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের না মতকে হ্যাঁ করা হতো, সেটি আমরা সবাই জানি। এমনকি বাড়ি করতেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দিতে অনিয়ম হয়েছে। সেগুলো এখন কঠোরভাবে দেখা হবে।’ 

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেনশনের ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিষয়টির একটা সুরাহার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার (আধা সরকারিপত্র) দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির কারণে এ মন্ত্রণালয়ের অনেক প্রকল্প বন্ধও করা হয়েছে।
আরএডিপির এত বড় কাটছাঁটের ব্যাখ্যায় ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘চলতি অর্থবছর আমরা চাইছি আরএডিপি ছোট থাকুক। কারণ অনেক বড় বরাদ্দ দিয়ে ব্যয় করতে না পারলে সেটি ভালো দেখায় না। সেই সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগে থেকেই রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় ঘাটতি বেশি রেখে বরাদ্দ দেওয়া হবে না।’ 
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অনুমোদিত আরএডিপি বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিলের অংশ ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের ঋণ থেকে ৮১ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপিতে প্রকল্প ছিল ১ হাজার ৩৫২টি। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩৭টি। এ ছাড়া অননুমোদিত নতুন প্রকল্প কমে হয়েছে ৭৭০টি, যা মূল এডিপিতে ছিল ৯১০টি।  
সংশোধিত এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া পাঁচটি খাতের মধ্যে পরিবহন ও যোগাযোগে ৪৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ৩১ হাজার ৮৯৭ কোটি, শিক্ষায় ২০ হাজার ৩৪৯ হাজার কোটি, গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধায় ১৯ হাজার ৬৫৩ কোটি এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৬ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 
মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (৩৬ হাজার ১৫৮ কোটি  টাকা)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিভাগ (২১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা)। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে (১৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ কমল ১১ হাজার কোটি টাকা
  • ইউনিলিভারের ৫২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাড়ছে রপ্তানি
  • অনলাইন: ফেব্রুয়ারিতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে পৌনে ৩ শতাংশ
  • সাত মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোতে শীর্ষে যে ১০ দেশ  
  • ২০৪৭ সালে উন্নত অর্থনীতি হতে চায় ভারত, দরকার ৭.৯% গড় প্রবৃদ্ধি
  • এডিপি কমলাে ৪৯ হাজার কোটি টাকা
  • সংশোধিত এডিপি ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমল
  • এডিপির আকার কমল ৪৯ হাজার কোটি টাকা