অর্থনীতি সংস্কারে আগ্রহ কম, কমিটিতে হতাশা
Published: 5th, March 2025 GMT
অর্থনীতি নিয়ে সংস্কারের দুটি প্রতিবেদন জমা পড়ে আছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সুপারিশ বাস্তবায়নে জোরালো কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে অর্থনীতিতে কাঠামোগত সংস্কারের প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্থনীতিতে দুর্নীতি-অনিয়ম এবং ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কৌশল নির্ধারণ নিয়ে আলাদা দুটি প্রতিবেদন তৈরি করিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। একটি হলো বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন কমিটির তৈরি শ্বেতপত্র। অন্যটি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদের নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন।
প্রধান উপদেষ্টা শ্বেতপত্র প্রতিবেদনটি গ্রহণ (ওউন) করেছেন। কিন্তু তাঁর উপদেষ্টা পরিষদে যাঁরা প্রাসঙ্গিক, তাঁরা গ্রহণ করেননি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধানপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্বেতপত্র জমা দেওয়া হয় গত ১ ডিসেম্বর। টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন জমা পড়ে গত ৩০ জানুয়ারি। এর মধ্যে দুই প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় কমিটির সদস্যদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
জানতে চাইলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শ্বেতপত্র প্রতিবেদনটি গ্রহণ (ওউন) করেছেন। কিন্তু তাঁর উপদেষ্টা পরিষদে যাঁরা প্রাসঙ্গিক, তাঁরা গ্রহণ করেননি। হয়তো প্রতিবেদন অনুসারে সংস্কারের সক্ষমতার ঘাটতি আছে, কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার যে পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা সংস্কারের অনুকূলে নয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় খামখেয়ালিপনা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বেশি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের সুপারিশ পেতে কমিশন, কমিটি ও টাস্কফোর্স করেছে। ১১টি কমিশনের ৬টি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। একটি সারসংক্ষেপ দিয়েছে।
ছয় কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা ও তা বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশন এক দফা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। দলগুলোর মতামত নিতে শিগগিরই আলাদাভাবে আলোচনা শুরু হবে। কিন্তু শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন নিয়ে নির্দিষ্ট কার্যক্রম নিতে দেখা যায়নি।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেটে শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্সের সুপারিশগুলোর প্রতিফলন থাকবে। সেই অনুসারে কাজ শুরু হয়েছে। তবে ওই দুটি প্রতিবেদনে করা সব সুপারিশ রাতারাতি বাস্তবায়ন করা যাবে না। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে। কিছু সুপারিশের বাস্তবায়ন এই সরকার শুরু করে যাবে। পরবর্তী সরকার বাকিগুলো করতে পারে।
তিন মাস পড়ে আছে শ্বেতপত্র
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে গত ২৯ আগস্ট শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। ১২ সদস্যের কমিটিতে ছিলেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম.
তিন মাস কাজ করে শ্বেতপত্র কমিটি ৩৯৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাট, অর্থ পাচার, ব্যাংক খাতের অনিয়ম, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অনিয়ম উঠে এসেছে। পাশাপাশি অর্থনীতির সংস্কারে সুপারিশও তুলে ধরা হয়েছে।
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে (প্রতি ডলারের দাম ১২০ টাকা) এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। সরকারি প্রকল্প থেকে ঘুষ লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো। এই ঘুষ নিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও তাঁদের সহযোগীরা। উন্নয়ন প্রকল্পের খরচের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা অপচয় ও লুটপাট হয়েছে।
শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় ব্যাংক দখলের কথা বলা হয়েছে। দেশের ব্যাংক খাতে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা।
অর্থনীতির এসব অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে কাঠামোগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। শ্বেতপত্রে অবিলম্বে সাতটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া; ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের একটি কাঠামো তৈরি করা; ২০২৫-২৭ সময়ের জন্য পরিকল্পনা করা; সংস্কারের অগ্রাধিকার ঠিক করা; এলডিসি উত্তরণের কৌশল ঠিক করে পরিচালনা; টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের গতি বাড়ানো এবং উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে একটি সংলাপ আয়োজন করা।
এই সাতটি সুপারিশের কোনোটি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। অবশ্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের পতন ঠেকানোর মতো কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে গত ১৮ জানুয়ারি শ্বেতপত্র নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে শ্বেতপত্র কমিটি। এতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, শ্বেতপত্র কমিটি চেয়েছিল আলোচনা সভাটিতে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু অনুষ্ঠানে তাঁরা ছিলেন না।
অর্থনীতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমকে তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ব্যাখ্যা করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, প্রথমত, শ্বেতপত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিগত সরকারের অর্থনৈতিক চরিত্র উন্মোচিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, অর্থনীতি সংহত করতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এতে অন্তর্বর্তী সরকার অর্ধেক নম্বর পাবে। তৃতীয়ত, অর্থনীতির কাঠামোগত সংস্কারে অগ্রগতি নেই। তাঁর মতে, এখন আলোচনায় সামনে চলে এসেছে নির্বাচন। তাই সরকারের ‘কাউন্টডাউন’ শুরু হয়ে গেছে। সংস্কারের জন্য যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল, সেই সুযোগ নেওয়ার সময় পার হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অর্থনীতির সংস্কারের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দেন।
টাস্কফোর্সের সুপারিশ
অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ–সংক্রান্ত টাস্কফোর্সে কে এ এস মুরশিদ ছাড়া ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আখতার মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান আবদুর রাজ্জাক, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুশফিক মোবারক, বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক, এমসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মনজুর, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, বিডি জবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. কাউসার আহাম্মদ।
টাস্কফোর্সটি গত ১১ সেপ্টেম্বর গঠন করা হয়। গত ৩০ জানুয়ারি তারা ৫২৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। প্রতিবেদনে অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বিষয়ে নানা ধরনের সুপারিশ করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রগতিশীল করব্যবস্থা চালু, যেখানে ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করা হবে। টাস্কফোর্স শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং সেবা সহজলভ্য করার ওপর জোর দিতে বলেছে। বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও রয়েছে টাস্কফোর্সের।
প্রতিবেদনটি নিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিবেদনে থাকা সুপারিশগুলো থেকে একটি সুপারিশ বাছাই করে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই তা বাস্তবায়ন করবে প্রতিটি মন্ত্রণালয়। পরের উপদেষ্টা পরিষদ সভায় কোন সুপারিশটি বাস্তবায়ন করবে, তা জানাতে হবে। কিন্তু এক মাসে এর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
যেমন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ বিমানকে দুইভাবে বিভক্ত করে একটি অংশ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সুপারিশ নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কিংবা বিমান পরিচালনা পর্ষদে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।
এ ছাড়া বছরে ১০ লাখ ডলারের বেশি রপ্তানি করে, এমন দেড় হাজার প্রতিষ্ঠানকে পরিচর্যা করে রপ্তানি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো তেমন কোনো কাজ করেনি।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন ও টাস্কফোর্স—উভয় কমিটির সদস্য ছিলেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। ওই দুটি প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নেওয়ায় হতাশ তিনি।
সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় সরকার নিজেরা সংস্কারে আগ্রহী হয় না। সংস্কার করতে গেলে দলের ভেতর ও বাইরে থেকে সুবিধাভোগীরা বাধা দেন। অন্তর্বর্তী সরকারে সংস্কারে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। কিন্তু বাস্তবে প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখছি না।’
কেন উদ্যোগ নিতে পারছে না সরকার—এ প্রসঙ্গে সেলিম রায়হান বলেন, আমলাতন্ত্রের সহযোগিতা নেই। উপদেষ্টাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় সংস্কার নেই। সংস্কারের সঠিক সময় পার হয়ে যাচ্ছে। সবাই নির্বাচনমুখী কথা বলছেন।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন নিয়ে সিপিডি আয়োজিত দুই দিনের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তিনি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন হাতে পাননি। তাঁর এ কথা শুনে অনুষ্ঠানে টাস্কফোর্সের সভাপতি কে এ এস মুরশিদ বিস্ময় প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, টাস্কফোর্স প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে জমা দেওয়ার পরই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনটি তৈরি করানো হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তবে ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া দুই দিনের সম্মেলনে ছিলেন না পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
‘ভালো নীতি হয়, কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না’
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান প্রথম আলোকে বলেন, এ দেশে ভালো ভালো নীতি হয়, কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ও টাস্কফোর্স যেসব প্রস্তাব দিয়েছে, তা অবশ্যই বাস্তবায়ন করা উচিত। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করলে কাজ সহজ হবে। সরকার অন্তত দু-চারটি সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে ব্যবসায়ীরা আস্থা পাবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স প র শ কর ল গ সরক র র প রথম আল ক কর মকর ত ব সরক র হ ম মদ ন কম ট র কম ট কম ট র ব যবস সদস য সহয গ গ রহণ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ধানমন্ডিতে মশা নিধনসহ বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান, অংশ নিলেন ৭০০ ব্যক্তি
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় মশক নিধনসহ বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছে। একযোগে চালানো এই অভিযানে ৭০০ ব্যক্তি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগ আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে অভিযান শুরু হয়। চলে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়, অভিযানে সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৫০ জন কর্মী ও স্বাস্থ্য বিভাগের ৫০ জন মশক কর্মী অংশ নেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ১০০ জন, বিডি ক্লিনের ৫০ জন ও ধানমন্ডি সোসাইটির ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকাকে সাতটি জোনে ভাগ করা হয় বলে জানায় ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ। তারা বলে, এভাবে মূল রাস্তা, লেক, পার্ক, মসজিদ, ঈদগাহসংলগ্ন এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মশকনিধন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
অভিযান চলাকালে অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ঢাকাকে সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ডিএসসিসিসহ বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক সোসাইটিগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজউক, গণপূর্ত, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা মহানগর পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার অংশগ্রহণে সরকার একটি সুপরিকল্পিত-সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) প্রণয়ন করছে। এ ছাড়া পয়োনিষ্কাশনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসির প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশকনিধন অভিযান পরিচালনা করা হবে। ধানমন্ডি থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে।
ডিএসসিসির প্রশাসক আরও বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে এ পর্যন্ত ঢাকা শহরকে নিয়ে ৩টি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৯১৭ সালে স্যার প্যাট্রিক গেডেস যে মাস্টারপ্ল্যান করেছিলেন, সেখানে বলা হয়েছিল, ঢাকা হবে একটি বাগানের শহর। কিন্তু দুঃখের বিষয় বেসরকারি হাউজিং শুরু হওয়ার পরে ঢাকা থেকে সবুজ ও জলাশয় হারিয়ে যেতে থাকল। তাঁরা ঢাকার সবুজ ফিরিয়ে আনতে এ বছর বর্ষার শুরুতেই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অতিথিরা জনসচেতনতামূলক একটি র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। অভিযান চলাকালে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান, সংস্থাটির সব বিভাগীয় প্রধান ও ধানমন্ডি সোসাইটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।