দ্বীপের অগভীর পানিতে আটকে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল ‘এ২৩এ’
Published: 5th, March 2025 GMT
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গ (হিমশৈল) যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত দ্বীপ ‘সাউথ জর্জিয়ার’ অগভীর পানিতে আটকে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বীপের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ ঘটবে এবং এতে এ অঞ্চলে বিচরণকারী লাখ লাখ পেঙ্গুইন ও সিলের মতো প্রাণীগুলো ঝুঁকিতে পড়বে।
‘এ২৩এ’ নামের এ হিমশৈল আকারে গ্রেটার লন্ডনের দ্বিগুণ। অগভীর পানিতে আটকে থেকে একসময় দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে এটি টুকরা হয়ে যাওয়া শুরু করতে পারে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা, হিমশৈলটি টুকরা হয়ে গেলে এ অঞ্চলে মাছ শিকারের সময় বিশাল আকারের সব বরফের চাঁই মোকাবিলা করতে হবে তাঁদের। তা ছাড়া এ ঘটনা কিছু ম্যাকরনি পেঙ্গুইনের খাবার সংস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
অ্যান্টার্কটিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমশৈলর বরফে বিপুল পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আটকে আছে। এটি গলতে শুরু করলে মহাসাগরে প্রাণের বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় মেরু গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের অধ্যাপক নাদিন জনস্টন বলেন, ‘এ যেন শূন্য মরুভূমির মধ্যে কোনো পুষ্টি বোমা ফেলার ঘটনা’।
সমুদ্রবিষয়ক গবেষক মার্ক বেলচিয়ার সাউথ জর্জিয়া সরকারকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘হিমশৈলটি ভেঙে গেলে বিশাল বিশাল বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে নৌযানগুলোর জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। নৌযানগুলোর জন্য স্থানীয় মাছ ধরা এলাকায় প্রবেশের পথও সীমাবদ্ধ করতে পারে এটি।’
হিমশৈলটি ভেঙে গেলে বিশাল বিশাল বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে নৌযানগুলোর জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। নৌযানগুলোর জন্য স্থানীয় মাছ ধরা এলাকায় প্রবেশের পথও সীমাবদ্ধ করতে পারে এটি।মার্ক বেলচিয়ার, পরিবেশবিদসম্প্রতি এই পরিবেশবিদ বিবিসিকে বলেছেন, ‘সাউথ জর্জিয়া আইসবার্গ অ্যালিতে অবস্থিত। তাই মৎস্য ও বন্য প্রাণী—উভয়ের ওপরই এর (হিমশৈলটির সংঘর্ষ) প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে এবং উভয়েরই পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার দুর্দান্ত ক্ষমতা রয়েছে।’
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো হিমশৈলগুলোরও একটি। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার বরফ সোপান (আইসশেলফ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। পরে আবার একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকা পড়ে এটি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে বিলীন হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো হিমশৈলগুলোরও একটি। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার বরফ সোপান (আইসশেলফ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। পরে আবারও একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকা পড়ে এটি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে বিলীন হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে হিমশৈলটি মুক্ত হয়ে চলতে শুরু করলে স্যাটেলাইটে এর যাত্রাপথ শনাক্ত করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। সাউথ জর্জিয়া সরকারের পরিচালিত জাহাজ ফারোসের ক্যাপ্টেন সাইমন ওয়ালেস সম্প্রতি বিবিসিকে বলেন, ‘হিমশৈলগুলো স্বভাবতই বিপজ্জনক। যদি এটা ধারেকাছে না আসত, তাহলে আমি অত্যন্ত খুশি হতাম।’
বিশ্বের বিজ্ঞানী, নাবিক ও জেলেদের দল হিমশৈল ‘এ২৩এ’র দৈনন্দিন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিগুলো যাচাই করার মধ্য দিয়ে এর দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।
অ্যান্টার্কটিকার উত্তর দিকের উষ্ণ জলরাশি হিমশৈলটির উঁচু চূড়াগুলো দুর্বল করছে ও গলিয়ে দিচ্ছে। এগুলো ১ হাজার ৩১২ ফুট (৪০০ মিটার) পর্যন্ত উঁচু হতে পারে; যে উচ্চতা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে উঁচু ভবন দ্য শার্ডের চেয়ে বেশি।
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমশৈল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বীপের অগভীর পানিতে আটকে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল ‘এ২৩এ’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গ (হিমশৈল) যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত দ্বীপ ‘সাউথ জর্জিয়ার’ অগভীর পানিতে আটকে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বীপের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ ঘটবে এবং এতে এ অঞ্চলে বিচরণকারী লাখ লাখ পেঙ্গুইন ও সিলের মতো প্রাণীগুলো ঝুঁকিতে পড়বে।
‘এ২৩এ’ নামের এ হিমশৈল আকারে গ্রেটার লন্ডনের দ্বিগুণ। অগভীর পানিতে আটকে থেকে একসময় দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে এটি টুকরা হয়ে যাওয়া শুরু করতে পারে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা, হিমশৈলটি টুকরা হয়ে গেলে এ অঞ্চলে মাছ শিকারের সময় বিশাল আকারের সব বরফের চাঁই মোকাবিলা করতে হবে তাঁদের। তা ছাড়া এ ঘটনা কিছু ম্যাকরনি পেঙ্গুইনের খাবার সংস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
অ্যান্টার্কটিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমশৈলর বরফে বিপুল পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আটকে আছে। এটি গলতে শুরু করলে মহাসাগরে প্রাণের বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় মেরু গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের অধ্যাপক নাদিন জনস্টন বলেন, ‘এ যেন শূন্য মরুভূমির মধ্যে কোনো পুষ্টি বোমা ফেলার ঘটনা’।
সমুদ্রবিষয়ক গবেষক মার্ক বেলচিয়ার সাউথ জর্জিয়া সরকারকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘হিমশৈলটি ভেঙে গেলে বিশাল বিশাল বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে নৌযানগুলোর জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। নৌযানগুলোর জন্য স্থানীয় মাছ ধরা এলাকায় প্রবেশের পথও সীমাবদ্ধ করতে পারে এটি।’
হিমশৈলটি ভেঙে গেলে বিশাল বিশাল বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে নৌযানগুলোর জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। নৌযানগুলোর জন্য স্থানীয় মাছ ধরা এলাকায় প্রবেশের পথও সীমাবদ্ধ করতে পারে এটি।মার্ক বেলচিয়ার, পরিবেশবিদসম্প্রতি এই পরিবেশবিদ বিবিসিকে বলেছেন, ‘সাউথ জর্জিয়া আইসবার্গ অ্যালিতে অবস্থিত। তাই মৎস্য ও বন্য প্রাণী—উভয়ের ওপরই এর (হিমশৈলটির সংঘর্ষ) প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে এবং উভয়েরই পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার দুর্দান্ত ক্ষমতা রয়েছে।’
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো হিমশৈলগুলোরও একটি। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার বরফ সোপান (আইসশেলফ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। পরে আবার একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকা পড়ে এটি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে বিলীন হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো হিমশৈলগুলোরও একটি। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার বরফ সোপান (আইসশেলফ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। পরে আবারও একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকা পড়ে এটি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে বিলীন হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে হিমশৈলটি মুক্ত হয়ে চলতে শুরু করলে স্যাটেলাইটে এর যাত্রাপথ শনাক্ত করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। সাউথ জর্জিয়া সরকারের পরিচালিত জাহাজ ফারোসের ক্যাপ্টেন সাইমন ওয়ালেস সম্প্রতি বিবিসিকে বলেন, ‘হিমশৈলগুলো স্বভাবতই বিপজ্জনক। যদি এটা ধারেকাছে না আসত, তাহলে আমি অত্যন্ত খুশি হতাম।’
বিশ্বের বিজ্ঞানী, নাবিক ও জেলেদের দল হিমশৈল ‘এ২৩এ’র দৈনন্দিন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিগুলো যাচাই করার মধ্য দিয়ে এর দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।
অ্যান্টার্কটিকার উত্তর দিকের উষ্ণ জলরাশি হিমশৈলটির উঁচু চূড়াগুলো দুর্বল করছে ও গলিয়ে দিচ্ছে। এগুলো ১ হাজার ৩১২ ফুট (৪০০ মিটার) পর্যন্ত উঁচু হতে পারে; যে উচ্চতা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে উঁচু ভবন দ্য শার্ডের চেয়ে বেশি।
এ২৩এ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমশৈল