তিন বছর আগে পার্ক দ্য প্রিন্সেসে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল লিভারপুল দর্শকদের। ২০২২ সালের ১৯ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ-লিভারপুল ম্যাচে দর্শক হাঙ্গামায় খেলা শুরু হতে ৩৫ মিনিট বিলম্ব হয়েছিল। লিভারপুল সমর্থকরা জাল টিকিট কিনে স্টেডিয়ামে ঢুকতে যাওয়াতে সেই সময় হট্টগোল হয়েছিল বলে দাবি করেছিল উয়েফা। ২০২২ সালের পর আবারও প্যারিসে লিভারপুল। এবার স্বাগতিক প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে আজ মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংলিশ ক্লাবটি।
দুই হেভিওয়েট ক্লাবের ব্লকবাস্টার লড়াইয়ে গ্যালারির বেশির ভাগ অংশই দখলে থাকবে পিএসজির। প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে ২ হাজারের বেশি লিভারপুল সমর্থকের সেখানে যাওয়ার কথা। পিএসজি-লিভারপুল ম্যাচ ছাড়াও বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় বেনফিকা ও বার্সেলোনা ম্যাচের দিকেও দৃষ্টি থাকবে সবার। একই সঙ্গে অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বায়ার লেভারকুজেনকে আতিথ্য দেবে বায়ার্ন মিউনিখ।
লিগ ওয়ানে টেবিল টপারে যেমন পিএসজি, তেমনি করে ইংল্যান্ডেও এক নম্বরে লিভারপুল। দুই লিগের পারফরম্যান্স বিচারে ম্যাচটি যে হাড্ডাহাড্ডি হবে, তা অনুমেয়। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই আসরে শেষ ষোলোতে উঠতে লিভারপুলকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। এই পর্যায়ে আসতে লুইস এনরিখের দলকে প্লে-অফ খেলতে হয়েছে। কিন্তু ম্যাচটি যখন ফরাসি ক্লাবটির ঘরের মাঠে, তখন লিভারপুলকে বদলাতে হবে অতীত ইতিহাস।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চারবারের সাক্ষাতে দু’দল সমান দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। আর তাদের জয়গুলো এসেছে নিজ আঙিনায়। এই ইতিহাসই এগিয়ে রাখছে পিএসজিকে। কিন্তু ফরাসি ক্লাবটিতে নেই কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো বড় তারকা। যার ওপর ভরসা করবে ক্লাবটি। লিভারপুলে আছেন মোহামেদ সালাহর মতো তারকা। মৌসুম শেষে লিভারপুল অধ্যায়ের সমাপ্তি যে হবে, তা জানা সত্ত্বেও মিসরীয় ফরোয়ার্ড প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন। তাই তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ব্লকবাস্টার এই লড়াইয়ে লিভারপুলকেই ফেভারিট মানছেন ফুটবলবোদ্ধারা।
আর্নে স্লটের হাত ধরে ২০১৯ সালের পর আবারও ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতার সেরা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দ্য রেডস সমর্থকরা। লিভারপুল কোচ স্লট অবশ্য এখন পিএসজি ম্যাচ নিয়ে ভাবছেন। ম্যাচটি পিএসজি মাঠে হলেও ভয় নেই লিভারপুল কোচের, ‘আমরা কি পিএসজিকে ভয় পাই? আমরা কাউকে ভয় পাই না। এটা ঠিক তারা কোয়ালিটি সম্পন্ন একটা দল; যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৮ মাসে বাংলাদেশের ৪৭তম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হওয়ার দাবিটি ভুয়া: রিউমর স্ক্যানার
‘মাত্র ৮ মাসে বাংলাদেশ ৪৭তম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ এবং ‘৪০তম থেকে ৭ পিছিয়ে বাংলাদেশ ৪৭তম ক্ষমতাধর দেশ’ এমন দুটি দাবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে ছড়িয়ে পড়া দুটি দাবিই ভুয়া বলছে তথ্য যাচাই বা ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। রিমউর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে র্যাঙ্কিংটি ২০২৪ সালের। অর্থাৎ যে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার দাবি করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বলছে, যে র্যাঙ্কিং নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেটি আজই বা এ বছর প্রকাশ হয়নি। তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মূলত জরিপের তথ্য ব্যবহার করে র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়। এই র্যাঙ্কিংয়ের জরিপ হয়েছে ২০২৪ সালের ২২ মার্চ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। অর্থাৎ সর্বশেষ যে র্যাঙ্কিং ইউএস নিউজের ওয়েবসাইটে রয়েছে, তা বাংলাদেশের বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হওয়া জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয়েছিল।
দাবিগুলোর সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ইউএস নিউজ নামে একটি ওয়েবসাইটের নাম। ইউএস নিউজ মূলত মার্কিন মিডিয়া কোম্পানি, যারা সংবাদের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বিভিন্ন ক্যাটাগরির র্যাঙ্কিং ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে আসছে।
রিউমর স্ক্যানার ইউএস নিউজের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সময়ের আর্কাইভ বিশ্লেষণ করে দেখেছে, সাইটটি প্রতিবছরের সেপ্টেম্বরে এই র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে থাকে এবং এ–সংক্রান্ত জরিপ হয় সে বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে।
রিমউর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে ২০২৩ সালের র্যাঙ্কিংটি প্রকাশিত হয় সে বছরের ৬ সেপ্টেম্বর (জরিপ হয় সে বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১২ জুন)। ওই বছর বাংলাদেশের অবস্থান পাওয়ারে ৪০তম, ওভারঅল: ৬৯তম (মোট ৮৭ দেশের মধ্যে)। একইভাবে ২০২২ সালেরটি প্রকাশিত হয় সে বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর (জরিপ হয় সে বছরের ৩০ এপ্রিল থেকে ১৩ জুলাই)। ওই বছর বাংলাদেশের অবস্থান পাওয়ারে ৪৪তম, ওভারঅল: ৭১তম (মোট ৮৫ দেশের মধ্যে)।
এসব তথ্য বিশ্লেষণ থেকে রিউমর স্ক্যানার নিশ্চিত হয়েছে যে ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিং এখনো প্রকাশ করেনি ইউএস নিউজ। রেওয়াজ অনুযায়ী তা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হবে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১২৩তম স্থান থেকে উন্নীত হয়ে বর্তমানে ৪৭তম অবস্থানে এসেছে। তবে ওয়েবসাইটটির আর্কাইভ বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, বাংলাদেশ এই র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় ২০২২ সালে। ওই বছর থেকে পরবর্তী সময়গুলোতে র্যাঙ্কিংয়ে অন্তর্ভুক্ত দেশের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে: ২০২২ সালে ৮৫টি, ২০২৩ সালে ৮৭টি এবং ২০২৪ সালে ৮৯টি। এ পর্যন্ত কোনো বছরেই র্যাঙ্কিংয়ে ১২৩টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, ফলে বাংলাদেশের কখনো ১২৩তম অবস্থানে থাকার দাবি বাস্তবসম্মত নয়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের এই র্যাঙ্কিং নিয়ে হঠাৎ আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটও জানার চেষ্টা করেছে রিউমর স্ক্যানার। ৬ এপ্রিল রাতে গ্লোবাল স্ট্যাস্টিসটিক নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ইউএস নিউজকে সূত্র দেখিয়ে প্রথম এ–সংক্রান্ত পোস্টটি করা হয়। এরপরই বিষয়টি আলোচনায় আসে।