আমানতের বিপরীতে নগদ জমা সংরক্ষণে (সিআরআর) পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতদিন ব্যাংকের আমানতের বিপরীতে সাড়ে ৩ শতাংশ অর্থ সিআরআর হিসেবে জমা রাখতে হতো, এখন থেকে তা দৈনিক ৩ শতাংশ অর্থ জমা রাখতে হবে। এর ফলে, ব্যাংকের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা বাড়বে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে এই নির্দেশনা দিয়েছে। জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও দৈনিক ভিত্তিতে টাকা ধার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর নগদ জমার হার কমানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংককে (ইসলামি শরিয়াহ্–ভিত্তিক ব্যাংকসহ) তাদের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ন্যূনতম ৪ শতাংশ দুই সপ্তাহের গড় ভিত্তিতে এবং ন্যূনতম সাড়ে ৩ শতাংশ দৈনিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদে জমা রাখতে হয়। তারল্য ব্যবস্থাপনা আরো সুসংহত করতে জমার হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৫ মার্চ থেকে পরিবর্তিত হার কার্যকর হবে। নতুন নিয়মে নগদ জমা সংরক্ষণের হার দৈনিক ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩ শতাংশ হবে এবং দুই সপ্তাহের গড় ভিত্তিতে তা ৪ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ২৮ দিনের রেপো বন্ধ হবে। এরপর জুনে ১৪ দিনের রেপো বন্ধ হবে। ফলে ব্যাংকগুলো সপ্তাহে শুধু এক দিন (মঙ্গলবার) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নীতি সুদ দিয়ে টাকা ধার নিতে পারবে।

ঢাকা/এনএফ/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইবলিস জিন না ফেরেশতা

মানুষ সৃষ্টির আগে আল্লাহর সৃষ্টিতে ছিল ফেরেশতা ও জিন। ইবলিস আগুনের তৈরি। থাকত ফেরেশতাদের সঙ্গে। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করত। ফলে ইবলিস জিন নাকি ফেরেশতা—এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো; তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল ও অহংকার করল । তাই সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৪)

 ইবলিসকে সেজদা করতে বলার কারণ

ইবলিসকে কেন ফেরেশতাদের সঙ্গে সেজদা করতে আদেশ করা হলো, সে কি ফেরেশতা? আল্লাহতায়ালা আদমকে সৃষ্টির আগেই ফেরেশতাদের আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন।

আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আমি যখন আদমের সৃষ্টি সম্পন্ন করব এবং তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেও’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৭২)। তখন ইবলিস সেই মজলিশেই উপস্থিত ছিল। তাই ইবলিস ফেরেশতা না হলেও সে ওই আদেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

ইবলিস জিন হওয়ার প্রমাণ

ইমাম রাজি (রহ.) বলেন, ইবলিস জিনদের একজন, তার মৌলিক উপাদান আগুন। এ জন্য তিনি তিনটি দলিল উপস্থাপন করেছেন।

এক. ইবলিসের সৃষ্টি আগুন থেকে। কোরআনে এসেছে, ইবলিস বলেছে, ‘তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ আর তাকে (আদমকে) সৃষ্টি করেছ কাদা মাটি দিয়ে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১২)

দুই. ইবলিসের ছেলেমেয়ে আছে, সে বংশবিস্তার করে। ফেরেশতারা এর থেকে মুক্ত। তাদের স্ত্রী-সন্তান নেই। তাদের মধ্যে নেই নারী-পুরুষের বিভাজনও। অথচ আল্লাহ ইবলিস সম্পর্কে বলেছেন, ‘তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে ওকে ও ওর বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ?’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৫০)

তিন. ফেরেশতারা আল্লাহর সব আদেশ মেনে চলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাদের (ফেরেশতাদের) যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই করে।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬) আল্লাহ কোরআনে অধিকাংশ স্থানে ইবলিসকে ‘শয়তান’ বলে সম্বোধন করেছেন। শয়তান শব্দটি দিয়ে কট্টরভাবে অবাধ্য হওয়াকে বোঝায়। (আত-তাফসিরুল কাবির, ফখরুদ্দিন রাজি, ২/৪২৯-৩০)

আরও পড়ুনসুরা আর রাহমানে জিন ও মানবজাতি উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে১০ নভেম্বর ২০২৩

তা ছাড়া ‘আল্লাহতায়ালা জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুন থেকে’ (সুরা রহমান, আয়াত: ১৫), আর ফেরেশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নুর বা আলো থেকে (মুসলিম, হাদিস: ২,৯৯৬)।

ইবলিস কোন শ্রেণির জিন

ইবনে আব্দিল বার (রহ.) বলেছেন, জিনদের বিভিন্ন শ্রেণি রয়েছে, ১. সাধারণ জিনদের বলা হয় জিন্নি। ২. যেসব জিন মানুষের সঙ্গে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে, তাদের বলা হয় আমির। ৩. যেসব জিন বাচ্চাদের সামনে আবির্ভূত হয়, তারা আরওয়াহ। এটি রুহ শব্দের বহু বচন। ৪. যেসব জিন খারাপ হয়ে যায় এবং মানুষের ক্ষতি করতে চায়, তারা শয়তান। ৫. যেসব শয়তানের দুষ্কৃতি খুব বেড়ে যায়, তাদের বলে মারিদ। ৬. যারা শক্তিশালী ও দুশ্চরিত্র হয়ে ওঠে, তাদের বলা হয় ইফরিত। (আত-তামহিদ, ইবনে আবদিল বার, ১১/১১৭-১১৮)

আরও পড়ুনইবলিসের কাহিনি১২ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ