বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৮ জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাঁদের বিভিন্ন কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতের হাজতখানায় হাজির করা অন্য আসামিরা হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহম্মেদ মজুমদার, সাবেক তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম, একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক শাকিল আহম্মেদ ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা রুপা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদ ইসলাম, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান, আওয়ামী লীগ সদস্য রাতুল, লালবাগ থানার আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ালিউল্লাহ ও শেখ মোহাম্মদ আলী আড্ডু।

আদালত সংশ্লিষ্টসূত্রগুলো বলছে, আজ বুধবার সকালে তাঁদের আদালতে তোলা হবে। পরে তাঁদের যাত্রাবাড়ী, পল্লবী, মিরপুর ও খিলগাঁও থানার বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হন আনিসুল হক। এরপর বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন ত র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অবৈধ নাগরিকদেরও ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের সংখ্যা কত, আর কবে থেকে তাঁদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে, তা জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

তবে বাংলাদেশিদের যেন হাতকড়া পরিয়ে অসম্মানজনক উপায়ে দেশে ফেরত পাঠানো না হয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঢাকা এবং ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো প্রথম আলোকে এ তথ্যগুলো জানিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস গত মাসে বাংলাদেশ সরকারকে অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অবহিত করেছে। এ ব্যাপারে সরকারকে একটি কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে সে দেশের অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অবহিত করছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটছে। তবে বাংলাদেশের লোকজনকে যাতে অসম্মানজনক উপায়ে ফেরত পাঠানো না হয়, তা নিয়ে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে ফেরত আনার বিষয়ে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের লোকজনকে ফেরানোর ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া রয়েছে, সেটি অনুসরণের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। অর্থাৎ নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশের লোকজনকে ফেরত নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য দেশের লোকজনকে যেভাবে হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে, সেটি যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।

অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ও অবস্থান

ঢাকা ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁরা ধারণা দিয়েছেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি রাজ্য নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেটিকাটে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সরকারি দপ্তর অফিস অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়টি তদারক করে থাকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত মাসে মার্কিন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, অন্যান্য দেশের মতো অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ঢাকার সহযোগিতা চেয়েছে ওয়াশিংটন। সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সম্মানজনকভাবে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে চায় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ চায় না অন্যান্য দেশের মতো হাতকড়া পরিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে আসুক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো আভাস দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে তাঁর সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করছেন, তাতে আগাম কিছু অনুমান করা কঠিন। তবে কলাম্বিয়াসহ একাধিক দেশের অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে যেভাবে হাতকড়া পরিয়ে সে দেশগুলোতে ফেরত পাঠিয়েছেন, সেটা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে না–ও ঘটতে পারে। তা ছাড়া সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবৈধ হওয়া লোকজনের সংখ্যাটা ততটা বেশি নয়। ফলে ভাড়া করা উড়োজাহাজে বাংলাদেশের লোকজনকে ফেরত পাঠাবে, এমন সম্ভাবনাও কম। আর অতীতে অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড কিংবা অবৈধ হয়ে পড়ার পর দেশে ফেরত আসার ক্ষেত্রে বৈরী আচরণ না করলে বাংলাদেশের লোকজনের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করা হবে না বলে সূত্রগুলোর মত। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাসনামলে কোনো কিছু আগাম বলা খুব কঠিন। কারণ, কলাম্বিয়া প্রথম দফায় তাদের লোকজনকে সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজে দেশে ফিরিয়ে নিতে না চাওয়ার পরেই দেশটির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেন ট্রাম্প। পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে কলাম্বিয়া। আর অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধের স্বার্থে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চড়াও হয়েছেন কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ