রাস্তা পারাপারের সময় বাসচাপায় প্রাণ গেল ছোট্ট ইয়াসিনের, বাস ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
Published: 5th, March 2025 GMT
বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাসস্ট্যান্ডে একটি যাত্রীবাহী লোকাল বাসের চাপায় ইয়াসিন সিকদার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনায় শিশুটির নানা আব্দুল মজিদ সিকদার গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বাসটি ভাঙচুর করে, একপর্যায়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নিহত ইয়াসিন সিকদার আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নাপুর ইউনিয়নের মিশ্রিপাড়া গ্রামের মো.
জানা যায়, নিহত শিশু ইয়াসিন তার নানা আব্দুল মজিদ সিকদারের সঙ্গে রাতে পায়ে হেঁটে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক পারাপার হচ্ছিল। এ সময় বেপরোয়া গতির লোকাল বাসটি ইয়াসিনকে চাপা দেয়, এতে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। তার নানা আব্দুল মজিদ সিকদার এ সময় বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দূর্ঘটনার পর পরই প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা বাসটি ধরে ভাঙচুর করেন, একপর্যায়ে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুর রহমান জানান, উপজেলার ভূরঘাটা থেকে বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালগামী হাওলাদার পরিবহন নামের লোকাল বাস বেপরোয়া গতিতে বাটাজোর বাসষ্ট্যান্ড এলাকা অতিক্রমকালে পথচারী শিশু ইয়াসিন সিকদার ও তার নানা আব্দুল মজিদ সিকদারকে ধাক্কা দেয়।
গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। গুরতর আহত শিশুটির নানাকে প্রথমে গৌরনদী হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এ দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।
এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।
ঢাকা/কাওছার/রফিক