সার্বিয়ার পার্লামেন্টের অধিবেশনকক্ষে স্মোক গ্রেনেড (ধোঁয়া সৃষ্টিকারী গ্রেনেড) ও পিপার স্প্রে ছুড়েছেন বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা।

সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিরোধী আইনপ্রণেতারা এই স্মোক গ্রেনেড ও পিপার স্প্রে ছোড়েন। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে একজন আইনপ্রণেতা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।

সার্বিয়ায় চার মাস ধরে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছে। একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধস ১৫ জন নিহত হওয়ার জেরে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে শিক্ষক, কৃষকসহ অন্য শ্রেণিপেশার লোকজনও শামিল হলে তা প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিসের এক দশকের শাসনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেয়। তাঁদের অনেকেই লাগামহীন দুর্নীতি ও সরকারের অদক্ষতার সমালোচনা করছেন।

সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট সমঝোতা আলোচনার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার পর পার্লামেন্ট অধিবেশনে আসন ছেড়ে কয়েকজন বিরোধী আইনপ্রণেতা স্পিকারের দিকে তেড়ে যান। জড়িয়ে পড়েন নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে।

এ সময় কিছু বিরোধী আইনপ্রণেতা স্মোক গ্রেনেড ও পিপার স্প্রে ছুড়ে মারেন। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা দৃশ্যে দেখা যায়, অধিবেশনকক্ষে কালো ও গোলাপি রঙের ধোঁয়া উড়ছে। ঘটছে হাতাহাতি। দেশটিতে ১৯৯০–এর দশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু হওয়ার পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ভুসিস বলেছেন, হট্টগোলের সঙ্গে জড়িত সব আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনাকে তিনি ‘গুন্ডামি’ বলে আখ্যা দেন।

স্পিকার আনা ব্রনাবিচ বলেন, তিন আইনপ্রণেতা আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির জেসমিনা ওব্রাদোভিচ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জ্লাতিবর লোনকার বলেছেন, ওব্রাদোভিচের অবস্থা সংকটাপন্ন।

কয়েক মাস ধরে চলা দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে গত ২৮ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুচেভিচ। এরপরও দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থামছে না।

গত নভেম্বরে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর নোভিসাদে একটি ট্রেন স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হন। এর জেরে শুরু হয় বিক্ষোভ। একপর্যায়ে তা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় এবং পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে প্রতিদিনই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।

আরও পড়ুনদুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী২৮ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আর্সেনালকে তাদের মাঠে হারিয়ে ফাইনালের পথে পিএসজি

এমিরেটস স্টেডিয়ামে ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের দুর্দান্ত রেকর্ড। তবে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সেই দুর্গে আঘাত হানল প্যারিস সাঁ জার্মেই (পিএসজি)। উসমান দেম্বেলের একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের পথে এক পা এগিয়ে রাখল ফরাসি জায়ান্টরা।

খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল পিএসজি। ম্যাচের মাত্র চতুর্থ মিনিটেই গোল করে দলকে এগিয়ে নেন দেম্বেলে। তার দূরপাল্লার শটে কোনো সুযোগই ছিল না গোলরক্ষকের। প্রথমার্ধজুড়ে সমতায় ফেরার চেষ্টা করেছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা। তবে গোলের সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বুকায়ো সাকা ও গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। ফলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় অতিথিরা।

বিরতির পর গোল পেয়েও হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। ডেকলান রাইসের পাস থেকে মিকেল মেরিনোর হেড গোলে পরিণত হলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সেই গোল। এরপর ৫৬ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভে আর্সেনালকে আবারও হতাশ করেন পিএসজি গোলরক্ষক দোনারুম্মা।

শেষদিকে আর্সেনাল যেমন সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়, তেমনি বার্কোলা ও গঞ্জালো রামোসের প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হওয়ায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি পিএসজি। তবে এক গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের।

আগামী ৮ মে ফিরতি লেগে পিএসজির ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে মুখোমুখি হবে দুই দল। সেদিনই নির্ধারিত হবে কারা পা রাখবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ