সার্বিয়ার পার্লামেন্টে ছোড়া হলো স্মোক গ্রেনেড, স্ট্রোকে আক্রান্ত আইনপ্রণেতা
Published: 5th, March 2025 GMT
সার্বিয়ার পার্লামেন্টের অধিবেশনকক্ষে স্মোক গ্রেনেড (ধোঁয়া সৃষ্টিকারী গ্রেনেড) ও পিপার স্প্রে ছুড়েছেন বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা।
সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিরোধী আইনপ্রণেতারা এই স্মোক গ্রেনেড ও পিপার স্প্রে ছোড়েন। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে একজন আইনপ্রণেতা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
সার্বিয়ায় চার মাস ধরে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছে। একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধস ১৫ জন নিহত হওয়ার জেরে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে শিক্ষক, কৃষকসহ অন্য শ্রেণিপেশার লোকজনও শামিল হলে তা প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিসের এক দশকের শাসনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেয়। তাঁদের অনেকেই লাগামহীন দুর্নীতি ও সরকারের অদক্ষতার সমালোচনা করছেন।
সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট সমঝোতা আলোচনার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার পর পার্লামেন্ট অধিবেশনে আসন ছেড়ে কয়েকজন বিরোধী আইনপ্রণেতা স্পিকারের দিকে তেড়ে যান। জড়িয়ে পড়েন নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে।
এ সময় কিছু বিরোধী আইনপ্রণেতা স্মোক গ্রেনেড ও পিপার স্প্রে ছুড়ে মারেন। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা দৃশ্যে দেখা যায়, অধিবেশনকক্ষে কালো ও গোলাপি রঙের ধোঁয়া উড়ছে। ঘটছে হাতাহাতি। দেশটিতে ১৯৯০–এর দশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু হওয়ার পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ভুসিস বলেছেন, হট্টগোলের সঙ্গে জড়িত সব আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনাকে তিনি ‘গুন্ডামি’ বলে আখ্যা দেন।
স্পিকার আনা ব্রনাবিচ বলেন, তিন আইনপ্রণেতা আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির জেসমিনা ওব্রাদোভিচ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জ্লাতিবর লোনকার বলেছেন, ওব্রাদোভিচের অবস্থা সংকটাপন্ন।
কয়েক মাস ধরে চলা দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে গত ২৮ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুচেভিচ। এরপরও দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থামছে না।
গত নভেম্বরে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর নোভিসাদে একটি ট্রেন স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হন। এর জেরে শুরু হয় বিক্ষোভ। একপর্যায়ে তা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় এবং পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে প্রতিদিনই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
আরও পড়ুনদুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী২৮ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাকে আটক করেছে ইসরায়েল
যুক্তরাজ্যের আইনসভার দুই সদস্যকে আটক করেছে ইসরায়েল। ব্রিটিশ আইনসভার একটি প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে তাঁরা ইসরায়েল সফরে গিয়েছেন। তবে তাঁদের কোনো কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
ইসরায়েলের অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাতে স্কাই নিউজ বলেছে, আটক দুই আইনপ্রণেতা হলেন ব্রিটিশ লেবার পার্টির ইউয়ান ইয়াং ও আবতিসাম মোহামেদ। দেশটির সন্দেহ, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যকলাপ নথিভুক্ত করা ও ইসরায়েলবিরোধী ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। তাই তাঁদের আটক করা হয়েছে।
ইয়াং নির্বাচনী এলাকা আর্লি ও উডলির প্রতিনিধি এবং মোহামেদ শেফিল্ড সেন্ট্রালের প্রতিনিধি। উভয়ই গতকাল লুটন থেকে ইসরায়েলে যান।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি বলেছেন, ‘ইসরায়েল সরকারে আমার প্রতিপক্ষ বন্ধুকে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে এমন আচরণ করা উচিত না। আমরা আজ রাতে (গতকাল শনিবার রাতে) পার্লামেন্টের ওই দুই সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাঁদের সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য সরকারের লক্ষ্য গাজায় রক্তপাত বন্ধ করা, জিম্মিদের মুক্ত করা এবং যুদ্ধ বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি ও আলোচনায় ফিরে আসা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুনপ্রথমবারের মতো গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪