গহীন পাহাড়ে অপহরণকারীদের আস্তানা, উদ্ধার ১১ নারী ও শিশু
Published: 5th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের গহীন পাহাড়ে অপহরণকারী চক্রের একটি আস্তানা থেকে ১১ জন নারী ও শিশুকে যৌথ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও নৌবাহিনী।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালী পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
এর আগে, টানা দুইদিনের অভিযানে বন্ধুত্বের ফাঁদে পড়ে অপহৃত দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মুক্তিপণের টাকা উদ্ধারসহ অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়। পরে নৌবাহিনীর নেতৃত্বে চালানো যৌথ অভিযানে অপহৃত ৯ নারী ও দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
যশোরে ঈদ সামনে রেখে ৭০০ পুলিশ মোতায়েন হবে: ভারপ্রাপ্ত এসপি
ঈদের ছুটিতে দেশে এসে সড়কে ঝরল ২ যুবকের প্রাণ
ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি চক্র একই পরিবারের ১১ জনকে অপহরণ করে। অপহরণকারীরা দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। অভিযানের সময় যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারী চক্রটি পালিয়ে যায়। উদ্ধারকৃতদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, “এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র অপহরণ অপহরণক র
এছাড়াও পড়ুন:
উদ্ধার হওয়া খুলি-হাড় নিখোঁজ শিশু সাদিয়ার, দাবি বাবা-মা
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় প্রায় ৯ মাস আগে নিখোঁজ হয় ৫ বছরের শিশু হালিমাতুছ সাদিয়া। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার সাদিয়ার বাড়ির পাশে শুকিয়ে যাওয়া একটি দিঘির খাদ (গর্ত) থেকে শিশুর মাথার খুলি ও চারটি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকার দাবি, উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও হাড় তাদের মেয়ে সাদিয়ার। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও পুলিশ বলছে, ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় করতে হবে।
রোববার উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের মধ্যম ছিলোনিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা দিঘির গর্তে মাছ খুঁজতে গিয়ে শিশু মাথার খুলি ও ৪টি হাড় পান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম ঘটনাস্থল গিয়ে হাড় ও খুলি উদ্ধার করেন। এ সময় শিশু সাদিয়ার বাবা আকতার হোসেন ও মা আয়েশা ছিদ্দিকা উপস্থিত ছিলেন।
আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে পুলিশি কার্যক্রম তেমন ছিল না। মেয়েকে উদ্ধারে তখন পুলিশের কোনো সহায়তা পাইনি। থানায় শুধু নিখোঁজের একটি ডায়েরি (জিডি) করেছি। গত বছরের নভেম্বরে আমি বাদী হয়ে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রতিবেশী হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহারের নামে অপহরণের একটি মামলা করি। তাদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
মামলার পর হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহার পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত উল্যাহ বলেন, শিশুটি নিখোঁজের খবর পেয়ে গত বছরের ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাকসামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিঘিসহ গ্রামের তিনটি পুকুরে সন্ধান করেন। ওই সময় দিঘির পাড়ে শিশুটির পায়ের জুতা পাওয়া গিয়েছিল। এখন দিঘির একটি অংশের খাদে শিশুটির মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গেছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করবে, এটাই আমাদের দাবি।
মঙ্গলবার লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, নিখোঁজ হওয়া শিশুর সাদিয়ার বাড়ির পাশের একটি দিঘি থেকে মাথার খুলি ও চারটি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে খুলি-হাড় জমা দেওয়া হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য ওই শিশুর বাবা-মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ওসি আরও বলেন, শিশুটি অপহরণের অভিযোগে যেহেতু আদালতের একটি মামলা পিবিআইয়ের তদন্তাধীন, সেহেতু আমরা নতুন করে এখনই কোনো মামলা নেব না।
পিবিআই কুমিল্লার এস আই মো. ইব্রাহিম সমকালকে জানান, গত বছরের নভেম্বরে শিশুটি অপহরণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়। অপহরণের বিষয়ে একটি অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে আদালতের নির্দেশে হাড়-কঙ্কাল উদ্ধারের দিন সকালে খাদিজা জাহান রিয়া নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার খাদিজা একই উপজেলার ভুশ্চি গ্রামের ইমাম হোসেনের স্ত্রী এবং নিখোঁজ সাদিয়ার বড় বোন ফাতেমার প্রাক্তন স্বামীর বড় বোন। অপহরণ ঘটনার বিষয়ে আসামিদের সঙ্গে তার কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে। তবে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালগুলো নিখোঁজ ওই শিশুর কি-না, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।