অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে আওয়ামী দোসর মাকসুদ চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
Published: 5th, March 2025 GMT
অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আওয়ামীলীগের দোসর মাকসুদ হোসেন গ্রেপ্তার। মঙ্গলবার ৫ মার্চ দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তরিকুল ইসলাম।
তবে তাৎক্ষনিক বিস্তারিত জানা যায়নি।
এরআগে গত বছরের ২০ জুন স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় আদালত জামিন নামঞ্জুর করে মাকসুদ চেয়ারম্যানকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন । পরে ২৪ জুন বিচারপতি আবু তাহের মো.
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে মুছাপুর ইউনিয়নে নিজের ও পরিবারের আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাব খাটিয়ে মুছাপুর এলাকায় দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানিয়েছেন মাকসুদ ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভ।
তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় মাথায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পালিয়ে থাকা মাকসুদ হোসেন মুছাপুরে ফিরে এসে শেখ হাসিনার পতনে আনন্দ মিছিল করে। মিষ্টি বিতরন করেন।
এদিকে ক্ষমতার চোরে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল বন্দর উপজেলার অপসারন হওয়া চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও তার পরিবারসহ তাদের দোসররা।
গত বছরের ৮ জুন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ৫ কোটি টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়। স্বাধীনতার আগে থেকে এ পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে আছে মুছাপুর ও কুড়িপাড়া এলাকাবাসী।
এখনো ভয়ে কেহ কিছু বলতে পারেনা। বিগত দিনের কর্মকান্ডে তাদের এখনো আতকে উঠতে হয়। এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। গত ৫ আগষ্টে তাদের তান্ডবে মুছাপুর ইউনিয়নবাসীকে আবারো সেই পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়।
গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী বিজয় উল্লাসের সুযোগে দেশে একটি শ্রেনী লোক ব্যাপক তান্ডব চালায়। সেই তান্ডবের একটি অংশ মুছাপুর ইউনিয়ন। চেয়ারম্যান মাকসুদ জেলা জাতীয়পার্টির সহ সভাপতি।
তার নির্দেশে তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভর নেতৃত্বে মাকসুদ চেয়ারম্যানের পিএস ইকবাল, মনির মেম্বার, মনোয়ার মেম্বার, সোহেল মেম্বারসহ, ৪/৫শ’ লোক নিয়ে বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর মিয়ার বাড়ি, মুছাপুর ইউনিয়নের উপ- নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বারপাড়া এলাকায় আলী হোসেনের বাড়ি, আনোয়ার মেম্বারের বাড়ি, মালিভীটা এলাকার সফরউদ্দিন মেম্বারের বাড়ি, শাসনেরবাগ এলাকায় জাপা নেতা রবিউল আউয়ালের বাড়ি, মতিউর রহমানের বাড়ি ও হরিবাড়ি এলাকার সৈয়দ আহাম্মদের বাড়িতে তান্ডব চালায়।
তারা ভাংচুর চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি বাড়িতে আগুন দিয়ে সবকিছু জ্বালিয়ে দেয়। তারা সেই ৭১ এর পাক হানাদারের মত বর্বরতা চালায়। মুছাপুর ইউপির একাধিক ভ’ক্তভোগী জানান, মাকসুদ চেয়ারম্যান পরিবারের কাছে জিম্মি তারা যুগের পর যুগ ধরে তারা এ জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হতে পারছেন না।
মাকসুদ চেয়ারম্যানে পিতা প্রয়াত রফিক, তার ভাই প্রয়াত আনোয়ার, তিনি নিজে, তার ভাই প্রয়াত মোর্শেদ মুন্সী, প্রয়াত মোয়াজ্জেম হোসেন কালু, ভাগিনা বিল্লাল মিলে ১৯৯৪ সালে লাঙ্গলবন্দ চিড়ইপাড়া ৫০/৬০ বৎসরের প্যারালাইজড রোগী রোজাদার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়াকে (বালার ছেলে) দিন দুপুরে কুপিয়ে খুন করে।
১৯৯২ সালে মাকসুদের বড় ভাই কালু সামান্য গরুর মাংস কেনার কথা কাটাকাটির ছলে, নিরহ কসাই নবী হোসেন কে কেটে টুকরো টুকরো করে বস্তায় বন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।
লাঙ্গলবন্দ যোগী পাড়ার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী নুর মোহাম্মদের ছেলে মহসিনকে (মাকসুদের চাচাত শ্যালককে), রাজাকার পুত্র মাকসুদের নেতৃত্বে তার বড় ভাই আনোয়ার, ভাগিনা বিল্লাল, ভাগ্নি জামাই সেভেন মার্ডারের আসামী সেলিম কুপিয়ে মাথা কেটে, উপস্থিত লোকদের সামনে কাটা মাথা দিয়ে কুড়িপাড়া স্কুলে ফুটবল খেলেছে।
১৯৮৬ সালে খুন করে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীনকে। যার বাড়ি ছিল লালখারবাগ। মাকসুদের চাচা মতিন, মালেক, চাচাতো ভাই ইকবাল মিলে মাকসুদের প্ররোচনায় হত্যা করে চাপাতলী গ্রামের নান্নু কাঠমিস্ত্রির ছেলে, মনির হোসেন কে। নান্নুু ছিল মতিনেরই ফার্নিচার হাউজের কাঠ মিস্ত্রি।
২০০৪ সালে মাকসুদের ভাই আনোয়ার, ফুপাতো ভাই সালাউদ্দীন, ভাগিনা বিল্লাল, ভাগ্নি জামাই সেভন মার্ডারের আসামী সেলিম ভাতিজা সম্রাট, তুহিন গংরা হত্যা করে মুরাদপুর গ্রামের দেলোয়ার কে। মাকসুদের ভাই আনোয়ার, ভাগিনা বিল্লাল, ফুপাতো ভাই সালাউদ্দীন মিলে খুন করে পাঠানটুলী নিবাসী এক বাস মালিক মোশারফকে। শুধু মাত্র সামান্য বাস ভাড়া নিয়ে কথা কাটকাটির কারনে।
৯৮ সালে মাকসুদের ভাই আনোয়ার, মাকসুদের ভাগ্নি জামাই সেলিম হত্যা করে চাঁনপুর দেওয়ানবাগের জুলহাসকে। ২০০৩ সালে মাকসুদের ফুপাত ভাই সালাউদ্দিন মুরাদপুরের নূরা, বাবুল দুই ভাই ও নিলুফাকে হত্যা করে।
১৯৯৮ সালে সেলিম, আনোয়ার, বিল্লাল তিন জন মিলে কুতুবপুরের একজন আদমজীর শ্রমিক, সুরু মিয়াকে চাঁদার জন্য আদমজী মিল ঘাট থেকে দিনের বেলায় কুড়িপাড়া ধরে নিয়ে আসে, নদীর পাড়ে নৌকায় রেখে তার দুই হাত বগল পর্যন্ত কেটে নেয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ পর ব র আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রেফারিদের বিরুদ্ধে রিয়ালের ‘যুদ্ধ ঘোষণা’, কোপার ফাইনালের আগে ধুন্ধুমার
স্পেনে রেফারিদের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের বিরোধের ঘটনা অনেক দিনের। তবে আজকের কোপা দেল রে ফাইনালকে কেন্দ্র করে অতীতের সব নজির ছাপিয়ে রিয়াল-রেফারি উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদ তাদের নিজস্ব টিভি আরএমটিভির মাধ্যমে রেফারিদের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও প্ররোচনার অভিযোগ, রিয়ালের পক্ষ থেকে রেফারিদের প্রত্যাহারের আবেদন ও ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন না করা এবং শেষ পর্যন্ত রিয়ালের ম্যাচ বয়কটের গুঞ্জন পর্যন্ত গড়িয়েছে ঘটনা। তবে শেষ খবর হচ্ছে, বার্সেলোনার বিপক্ষে সেভিয়ায় হতে যাওয়া কোপা দেল রে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ থাকছে। ক্লাবটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ফাইনাল বয়কটের গুঞ্জন সঠিক নয়। রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে।
কোপা দেল রে ফাইনালের ম্যাচ অফিশিয়ালস তালিকায় রেফারি হিসেবে রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া ও ভিএআর হিসেবে পাবলো গঞ্জালেসের নাম দেখেই বিরক্ত হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এই দুই রেফারির অতীতের কিছু সিদ্ধান্ত রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গিয়েছিল মনে করে ক্লাবটি। এরপর গতকাল দুই রেফারি সংবাদ সম্মেলন করে জানান, আরএমটিভি তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। যা তাদের পরিবারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বেনগোচেয়া এ বিষয়ে বলেন, ‘যখন আপনার ছেলে স্কুলে যায় এবং লোকেরা তাকে বলে যে তার বাবা একজন ‘‘চোর’’, এটি সত্যিই ভয়ানক।’
আরএমটিভি কোপা দেল রে ফাইনালের রেফারিদের নিয়ে যে অনুষ্ঠান করেছে, সে দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘(ভিডিওতে যা বলা হয়েছে) তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেই কথা পরিণাম কী দাঁড়াচ্ছে।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর ভিএআর রেফারি গঞ্জালেস জানান, স্প্যানিশ রেফারিরা এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নিতে পারে, ‘আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এটা আর হতে দেব না। শিগগিরই আপনারা খবর পেতে পারেন। আমরা ইতিহাস তৈরি করতে যাচ্ছি। সন্দেহ নেই, আমরা যা সহ্য করে আসছি তা আর সহ্য করব না।।’
বিস্তারিত আসছে ...।