আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার লন্ডন থেকে টেলিফোনে গণমাধ্যমকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান। তিনি বলেন, মানসিক প্রশান্তি বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক সুস্থতার পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে ডা.

জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া ভালো আছেন এটুকু বলা যায়। খুব সুস্থ হয়ে উঠেছেন, এ কথা বলব না। তবে যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেকটা সুস্থ আছেন।

কবে দেশে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা যেদিন উপযুক্ত মনে করবেন ওইদিন বিএনপি চেয়ারপারসন ফিরবেন, ইনশাআল্লাহ।

ডা. জাহিদ বলেন, প্রায় সাত বছর পরে ছেলে, দুই পূত্রবধু ও নাতনিদের পাশে পেয়ে মানসিকভাবে বেশ চাঙ্গা রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।  

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান বিএনপি চেয়ারপারসন। লন্ডন ক্লিনিকে তাঁকে ভর্তি করা হয়।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে নাই, ত্যাগ স্বীকার করে নাই। আর কোনো মহামানব কোনো দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে, তার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অতীতেও অনেক মহামানব তৈরি করা হয়েছে, যার ফলাফল কী হয়েছে, সেটা দেশের মানুষ দেখতে পেয়েছে। এখানে ব্যক্তিবিশেষের বিষয় নয়, কোনো ‘মহামানব’ তৈরির জন্য মানুষ জীবন দেয়নি, দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরাকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারের একটি বক্তব্য নিয়ে আজ প্রশ্নের এ জবাব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু। সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে এখনো মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা বলছে না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যেতে দাও। আজ আমাদের নির্বাচন। কেউ তা বলেনি।’

এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হচ্ছে বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের মধ্যে ইতিমধ্যে যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতিমধ্যে প্রায় ৫০টি দল পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে, ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের জন্য।’

এ ছাড়া ওই সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেই সংস্কারগুলো দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের রূপরেখা দেওয়ার ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন আমীর খসরু। জনগণ বলতে কারা, এ প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘জনগণ বলতে যদি কোনো একটা বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী, যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করেছে...এটা তো কারও বুঝতে কষ্ট হওয়ার তো কোনো কারণ নাই।’

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ‘গত ১৬ বছরের যুদ্ধ ছিল’ উল্লেখ করে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে, সেটা যেই সরকারই হোক।’

পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। তাতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে যে প্রতিশ্রুতি বা বক্তব্য দিয়েছেন, তার ব্যত্যয় হবে না। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকের বক্তব্যকেই পুনরায় ঘোষণা দিয়েছেন, জুনের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাই, জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে সরকার গঠন করে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়।’

তিন দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে তাঁর নেতৃত্বে দলটির লিয়াজোঁ কমিটি সমমনা তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠক করে। বেলা ৩টায় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) সভাপতি আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল, বিকেল ৪টায় আমজনতার দলের সভাপতি কর্নেল (অব.) মশিউজ্জামনের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং বিকেল ৫টায় পিপলস পার্টির সহসভাপতি নাজমা আক্তারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলুও উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ