অবৈধ বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় মাছ ধরার ট্রলার ডুবে দুই জেলে আহত হয়েছেন। নদীতে ভেসে থাকতে দেখে অন্য জেলেরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে পদ্মা নদীর ফরিদপুর সদরের কবিরপুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত জেলেরা হলেন– মানিকগঞ্জের বারিক ফকিরের ছেলে ইউসুফ ফকির ও মাসুদ রানার ছেলে মজিদ। তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত জেলেদের স্বজনের ভাষ্য, ভোর ৪টার দিকে ইউসুফ ও মজিদ পদ্মা নদীর কবিরপুর এলাকায় মাছ ধরছিলেন। এ সময় বালুবাহী একটি বলগেট তাদের নৌকাকে সজোরে আঘাত করে। এতে নৌকাটি দুমড়েমুচড়ে নদীতে তলিয়ে যায়। তখন তারা নৌকা থেকে পানিতে ছিটকে পড়ে শোলার কার্টন ধরে ভাসতে থাকেন। অন্য নৌকার জেলেরা তাদের দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

কোতোয়ালি নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসিম আহমেদ জানান, আঘাতকারী বলগেট শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মায় দীর্ঘদিন একাধিক ড্রেজারের মাধ্যমে কবিরপুরসহ আশপাশ এলাকায় অবৈধভাবে বালু তুলে তা বলগেটের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খোলে না। রাত নামলেই পদ্মা নদীর দুর্গম এলাকায় বাড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

একটি সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বালুবাহী বলগেটও এই রুট দিয়ে রাতে চলাচল করে। দূরের রুট হওয়ায় রাতে বলগেটগুলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই বেপরোয়াভাবে নদীতে চলাচল করছে। এসব অবৈধ বলগেট চলাচল বন্ধের দাবি জেলে, নৌযান মালিকসহ সবার। 

এ বিষয়ে ফরিদপুর নৌ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অপরাধীদের দমনে নৌ পুলিশ সর্বদাই তৎপর। কিন্তু দীর্ঘ জলসীমার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে একটি স্পিডবোট ব্যবহার করতে হয়। এতে ফাঁকফোকর দিয়ে কখনও কখনও এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ব্যত্যয় ঘটে। নদীতে টহল বাড়িয়ে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দেন তিনি। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য় অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আমির হোসেন সামিউল নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রোববার গভীর রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা ধজনগরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার পর ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যায় সামিউল।

নিহত জ্যোতি আক্তার (২৫) সামিউলের স্ত্রী ও স্মৃতি আক্তার (১৪) শ্যালিকা। তারা ধজনগর গ্রামের মৃত রৌশন আলীর মেয়ে। বছর তিনেক আগে জ্যোতির সঙ্গে পাশের কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার জামতলী গ্রামের সামিউলের বিয়ে হয়। সে পেশায় দিনমজুর। কখনও মাটি কাটার শ্রমিক হিসেবে, কখনও রাজমিস্ত্রি বা ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে সে। 

জ্যোতি-স্মৃতির ছোট ভাই জিহান মিয়া (১১) জানায়, রোববার রাতে পাশের কক্ষের বিছানায় ঘুমাতে যায় তার দুই বোন। ভগ্নিপতি সামিউল তার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। সোমবার সকালে জেগে তাকে দেখতে পায়নি। এ সময় পাশের কক্ষে বোনদের ডাকতে যায়। তারা সাড়া না দেওয়ায় সে নাক ছুঁয়ে দেখে কারও নিঃশ্বাস পড়ছে না। ভয় পেয়ে জিহান চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা সেখানে আসে। সংবাদ পেয়ে কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল কাদের ও এসআই মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে আসে। তারা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।

জিহানের খালা জাহানারা বেগম সকালে ভাগনিদের মৃত্যুর খবরে পাশের বড়মুড়া গ্রাম থেকে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমার বোনের কষ্টের শেষ নেই। তাঁর স্বামী ২০১৭ সালে ক্যান্সারে মারা যান। অনেক কষ্ট করে চার সন্তানকে লালন-পালন করছেন।’

জিহান জানায়, দেড় মাস আগে একটি মামলায় তার মা লোনা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে যান। এই সংবাদে বড় বোন জ্যোতি আক্তার এসে তাদের সঙ্গে থাকছেন। দুই দিন আগে স্বামী সামিউলকে নিয়ে জ্যোতি মাকে কারাগারে দেখতে যান। জিহানের বড় ভাই জাবেদ মিয়া (২২) কয়েক মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছেন। তিনি বিদেশ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর ওই মোবাইল ও বোনদের স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে সামিউল। 

কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, স্মৃতির পায়ে কাদামাটি লেগে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে বাইরে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরে আনা হয়। আর জ্যোতি আক্তারকে বিছানায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। আপাতত থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তে নতুন কোনো তথ্য আসতে পারে। দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘুমের ভেতর পায়ে অস্থিরতা
  • নানার ৫শ টাকা নেওয়ায় বকুনি, অভিমানে লুকানো শিহাব মারা গেল বস্তাচাপায়
  • স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল
  • কেন মেয়ের সব ছবি মুছে ফেললেন আলিয়া