সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা নিয়ে সরকার জুলাই চেতনাকে হত্যা করছে
Published: 4th, March 2025 GMT
গণ-অভ্যুত্থানের সাত মাস পরেও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই চেতনা হত্যা করছে বলে মনে করে ডিএসএ (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) ভিকটিমস নেটওয়ার্ক। সরকার ক্রমেই জনগণের আস্থা হারাচ্ছে বলেও মনে করছে তারা।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে ডিএসএ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের বাংলাদেশেও কুখ্যাত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল তো হয়ইনি; বরং এই আইনে নতুন নতুন মামলা হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন এই আইনে মামলা নেওয়া বন্ধের পরিবর্তে মামলা নিচ্ছে এবং তদন্ত ছাড়াই গ্রেপ্তারের তোড়জোড় করছে।
সাইবার নিরাপত্তাসহ সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসেই সরকার আইনটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অন্তত চারবার সময় নিয়েও সরকার এই আইন বহাল রেখেছে। সর্বশেষ ২১ জানুয়ারি আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে আইন মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে বাকি কিছু কাজ শেষ করেই আইনটি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হবে। এরপর প্রায় দেড় মাস কেটে গেলেও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কাজ শেষ করেনি, আইনটি বাতিলও হয়নি। এ আইনে আগের মামলাগুলোও বাতিল হয়নি; বরং নতুন নতুন মামলা হচ্ছে।
সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ নিবর্তনমূলক আইনগুলো বাতিলে সরকারের আন্তরিকতায় ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের এমন অবহেলা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে হত্যা করছে। অযোগ্যতা ও অদক্ষতার ফলে অন্তর্বর্তী সরকার ক্রমেই জনগণের আস্থা হারাচ্ছে।
এমন অবস্থায় ডিএসএর পক্ষ থেকে সাইবার নিরাপত্তাসহ সব নিবর্তনমূলক আইন অবিলম্বে বাতিল, এসব আইনে গ্রেপ্তার বন্দীদের মুক্তি, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ এবং নিবর্তনমূলক আইন বানানোর একচ্ছত্র ক্ষমতা কাঠামোকে জবাবদিহিমূলক করার দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, গবেষক, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, বাউলশিল্পী ও শিক্ষার্থীসহ ২৮ জন সই করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক গোলাম মাহফুজ জোয়ার্দার, সদস্যসচিব প্রীতম দাশ, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মঞ্জিলা ঝুমা ও যুক্তরাষ্ট্রের পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরা ভোটের পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করছি’
পাবনার নবাগত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেছেন, “পুলিশ যে সুশৃঙ্খল ও সুশিক্ষিত সেটা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে সেটা প্রকাশ পাবে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক অবস্থানে থাকবে। যারা স্বপ্ন দেখছেন ভোট দেবেন, আমরা সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছি। যে কোন ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বদা সজাগ আছি এবং থাকব।”
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার।
ক্লাবের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেলের সঞ্চালনায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ প্রফেসর শিবজিত নাগ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) মশিউর রহমান মন্ডল, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান ও সাবেক সম্পাদক আঁখিনুর ইসলাম রেমন।
মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, “সদাচরণ, আইনের শক্ত প্রয়োগ আমার মূল লক্ষ্য। সামনের দিনগুলোতে পুলিশ বাহিনীর কাজ দেখতে পাবেন। আইনপরিপন্থী চ্যালেঞ্জগুলো অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বর্তমান পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এজন্য জনগণ, জনপ্রতিনিধি, জনপ্রশাসন তথা সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতাও লাগবে।”
এসময় কিশোর গ্যাং, মাদক, ছিনতাই, সন্ত্রাসীসহ নানা অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা অপরাধ ও কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “দল দাস হবেন না। পূর্ববর্তী শিক্ষা নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে সামনে আগাতে হবে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আপনাদের উপর অর্পিত আইন শৃঙ্খলা দমন ও জনগণের জানমাল হেফাজতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।”
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় দৈনিকসহ জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/শাহীন/এস