পাকিস্তানে সামরিক স্থাপনায় আত্মঘাতী হামলা, নিহত ১০
Published: 4th, March 2025 GMT
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নু শহরের একটি সামরিক স্থাপনায় দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এতে ১০ জন নিহত ও ২৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ইফতারের পর দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী সামরিক স্থাপনার দেয়ালের কাছে দুটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি দিয়ে হামলা করে। এতে দেয়াল ভেঙে গেলে পাঁচ থেকে ছয়জন সন্ত্রাসী সেনানিবাসে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় সহিংসতায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একযোগে কাজ করছে। খবর উইঅন নিউজের।
দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। অন্যদিকে হামলায় দুই শিশুসহ তিন নারী ও দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং দুই নারীসহ ছয় বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে হতাহতের সংখ্যা এখনও জানানো হয়নি।
জঙ্গি সংগঠন জইশ আল ফুরসানের সঙ্গে যুক্ত হাফিজ গুল বাহাদার এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, বিস্ফোরক ভর্তি দুটি গাড়ির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতজুড়ে কাশ্মীরি দুই বোনের প্রশংসা
কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলার ঘটনার সময় অন্যরকম ভূমিকা পালন করেন কাশ্মীরি দুই বোন—রুবিনা ও মুমতাজ। মঙ্গলবারের ওই হামলার সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক পর্যটককে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান। তাদের এই মানবিকতা ও সাহসের প্রশংসা করচেন অনেকে।
বৈসরন উপত্যকার পাশেই থাকে দুই বোন। পর্যটক গাইড রুবিনা ও মুমতাজ প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুদের নিয়ে ঘোরান, দেখান কাশ্মীরের সৌন্দর্য। রুবিনার একটি অন্য নামও রয়েছে—‘কাশ্মীরের খরগোশ কন্যা’। কারণ তিনি পর্যটকদের হাতে নিজের পোষা খরগোশ তুলে দিয়ে ছবি তোলার সুযোগ করে দেন।
হামলার দিন অন্যান্য দিনের মতোই, রুবিনা ও মুমতাজ চেন্নাই থেকে যাওয়া একদল পর্যটকের গাইড হিসেবে ইকো পার্ক এলাকায় ছিলেন। দুপুরের দিকে আচমকা জঙ্গিরা হামলা চালালে আশেপাশে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পর্যটকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন।
জঙ্গিরা যখন আচমকা হামলা চালায়, তখন তাদের সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধসহ বেশ কয়েকজন পর্যটক ছিলেন। তারা সবাই তখন আতঙ্কে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন। কেউ হাঁটতে পারছিলেন না, কেউ কেউ কাঁদছিলেন। রুবিনা ও মুমতাজ প্রথমে পর্যটকদের আশ্বস্ত করেন, এরপর প্রথমে একটি দলকে পাহাড়ি রাস্তা ও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে স্থানীয় হোটেলে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন।
এরপর ফিরে এসে আরও কয়েকটি দলকে একইভাবে নিয়ে যান। সেই সময় শুধু পথ দেখানোই নয়, পর্যটকদের মানসিকভাবে শান্ত রাখার কাজটাও করেন তারা। পর্যটকদের কী করতে হবে, কোথায় যেতে হবে, সেই নির্দেশনা দেন।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রুবিনা বলেন, 'সেই মুহূর্তে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল পর্যটকদের প্রাণ রক্ষা করা। আমরা আমাদের নিরাপত্তার কথা ভাবিনি। সবাই কাঁপছিল, শুধু বলছিল, আমাদের বাঁচাও।'
ভারতজুড়ে এই দুই বোনের সাহসিকতা ও মানবিকতা এখন প্রশংসিত হচ্ছে। সাধারণ গাইডের ভূমিকায় যারা কাজ করছিলেন, তারা এক মুহূর্তে হয়ে উঠেন রক্ষাকর্তা। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা