নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
Published: 4th, March 2025 GMT
সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাদমান অলীভ বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু আজকের ঘটনা না। এটা যুগের পর যুগ ধরে ঘটে আসছে। আমার কোন বোন যদি সাধারণ কামিজ পরেও বাসে উঠে, কেউ কেউ তার দিকেও খারাপভাবে তাকায়। আমি আজ ভাই হিসেবে ব্যর্থ। আমরা যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতে পারি, তাহলে এই মানববন্ধন কখনোই থামবে না। আমরা চাই যেভাবে দেশে সহিংসতা হচ্ছে, মবের নামে নারীদের নির্যাতন, নিপীড়ন করা হচ্ছে; এর দ্রুত অবসান হোক।”
আরো পড়ুন:
জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাবিতে হামলাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতা
‘ছাত্রদল চাইলে গুপ্ত সংগঠনের অস্তিত্ব থাকবে না’
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, “পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যের ব্যাপারটি আমাদের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের হতে পারিনি। প্রকাশ্যে ধুমপান করা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই অনুচিত। কিন্তু আমরা দেখি ছেলেরা প্রায়ই ধূমপান করছে, শুধু নারীর ক্ষেত্রেই সমস্যা। মব জাস্টিসের নামে যে ধরনের নিপীড়ন করা হয়েছে, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। আমরা এর নিন্দা জানাই।”
তিনি বলেন, “একটা পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়, সেট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান না হয়ে মব জাস্টিসের মাধ্যমে যে ঘটনাগুলো ঘটানো হয়, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। রাষ্ট্র, সমাজ এবং যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, সবাই মিলে এ বিষয়টাকে সামনে রেখে সহনশীল আচরণ করার জন্য যা যা কর্মসূচি দরকার, সেগুলো পালন করার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। রাষ্ট্রের উচিৎ, এ মব জাস্টিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।”
সমাপনী বক্তব্যে জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, “বারবারই একটা বলি যে, হে রাষ্ট্র, মেয়েদের বন্দিত্বের দায় না নিয়ে নিরাপত্তার দায় নাও। অথচ হতাশার সঙ্গে আমরা দেখি, এ রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা মেয়েদের বন্দিত্বের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অধিক আগ্রহী। মেয়েদের নিরাপত্তা দানের ব্যাপারে তাদের ন্যুনতম কোনো আগ্রহ বা সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাই না। একটি সংবাদে দেখলাম, গত এক মাসে প্রায় ২৩৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যা বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত নিন্দাজনক।”
তিনি আরো বলেন, “স্বাধীনতার ৫৫ বছর বয়সেও এ দেশ আসলে মেয়েদের কোন সম্মান দিতে পারেনি । আমরা বারবার দেখছি ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে, নিপীড়নমূলক ঘটনা ঘটছে, নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করা হচ্ছে। কিন্তু দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে এ রাষ্ট্র বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে গত এক মাসে ২৩৮টির মতো ধর্ষণের ঘটনা দেখি। এ মেয়েদের গত জুলাইয়ে দেখেছি, সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এবং কুশপুত্তুলিকা দাহ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেছেন, “৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম। কিন্তু, এখন আবারও কিছু শিক্ষক ফ্যাসিবাদী আচরণ করছেন। শেখ হাসিনা ভারত থেকে শিক্ষকদের মদদ দিচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে। এমনই একজন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। উনার অফিসে গেলে উনি অসন্তুষ্ট হন। আমরা এমন বদমেজাজি ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার হিসেবে মানি না।”
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর সাম্য বলেন, “প্রশাসনের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা। কিন্তু, কোনো শিক্ষার্থী সহযোগিতা না পেলে সে প্রশাসক হিসেবে অযোগ্য প্রমাণিত হয়। আমরা কলোনিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় চাই না, চাই একটি মেরুদণ্ডসম্পন্ন প্রশাসন। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনো ক্ষমা চাওয়ার বিবৃতি আসেনি, যা প্রমাণ করে প্রশাসনের দুর্বলতা।”
ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানোর কারণে। রেজিস্ট্রার ভুলে গেছেন, আগের মতো ক্ষমতা দেখিয়ে কিছু হবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে, নাহলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।”
ঢাকা/লিমন/রফিক