গাজা পুনর্গঠনে আবারও জরুরি বৈঠকে বসেছেন আরব নেতারা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে মিসরের কায়রোয় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মূল আলোচ্যসূচি ছিল ফিলিস্তিনি উপত্যকার পুনর্গঠন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের পরিবর্তে আরব, মুসলিম ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা গাজা পরিচালনা করবে– এমন একটি পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা। খবর রয়টার্সের। 

ইসরায়েলের ১৫ মাসের আগ্রাসনে ভেঙে পড়া গাজা কে পরিচালনা করবে, তা একটি বড় প্রশ্ন। হামাস বলেছে, বাইরের পক্ষগুলোর চাপিয়ে দেওয়া যে কোনো সমাধান তারা প্রত্যাখ্যান করে। 

মিসরের নেতৃত্বে এই আলোচনায় জর্ডান, সিরিয়া, আরব লিগ ও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসির সদস্য দেশগুলো অংশগ্রহণ করে। আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়, গাজার প্রাথমিক পুনরুদ্ধার, পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণ, বসবাসযোগ্য অবকাঠামো গঠন, সেবা প্রদান এবং দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের রাজনৈতিক পথ উন্মোচনের সম্ভাব্য পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অর্থায়ন নিয়েও আলোচনা হয়। 

রয়টার্সের দেখা একটি খসড়া অনুসারে, এটি গাজার হামাস পরিচালিত সরকারকে অনির্দিষ্ট অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য প্রতিস্থাপন করবে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস যদি দৃশ্যপটের বাইরে থাকে, তবে গাজার সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের কোনো আরবসত্তার বিরোধিতা করার সম্ভাবনা কম। 

মিসর গাজার পুনর্গঠনের জন্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের একটি পাঁচ বছরের পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে নতুন আবাসন, একটি বাণিজ্যিক বন্দর এবং একটি বিমানবন্দর তৈরির বিষয়টি থাকবে। 

এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর করতে ইসরায়েল রাজি বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’য়ার। তবে তার আগে শর্ত হলো, গাজাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ এবং বন্দিদের ফিরিয়ে দিতে হবে। 

সা’য়ার বলেন, আমরা গাজাকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণ, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদকে শেষ করা এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি। যদি তারা এতে রাজি হয়, তবে আমরা আগামীকালই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করতে পারি। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

নামাজের শুরু ও শেষ সময়

আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ করা হয়েছে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)

এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে নামাজের সময় নির্দিষ্ট এবং এটি পালন করা মুসলমানের ওপর অবশ্যক। জিবরাইল (আ.)-এর কাছ থেকে রাসুল (সা.) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় শিখেছেন এবং সাহাবিদের তা শিক্ষা দিয়েছেন।

একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, জিবরাইল (আ.) দুই দিন রাসুল (সা.)-কে নামাজের সময় শিখিয়েছেন: প্রথম দিন প্রতিটি নামাজের শুরুর সময়ে এবং দ্বিতীয় দিন শেষ সময়ে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৯৩)

আধুনিক যুগে, বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনযাত্রায়, নামাজের সময় সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। শুধু ঘড়ির কাঁটা দেখে নয়, প্রাকৃতিক নিয়মে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় জেনে রাখা নামাজের প্রতি যত্নের বহিঃপ্রকাশ।

জিবরাইল (আ.) দুই দিন রাসুল (সা.)-কে নামাজের সময় শিখিয়েছেন: প্রথম দিন প্রতিটি নামাজের শুরুর সময়ে এবং দ্বিতীয় দিন শেষ সময়ে।সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৯৩আরও পড়ুনজীবনকে ছন্দে ফেরাবে ‘ধীর নামাজ’২৪ মে ২০২৫পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময়

নিচে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সূর্যের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়, যা ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

১. ফজরের নামাজ

শুরুর সময়: ফজরের সময় শুরু হয় সুবহে সাদিক থেকে, অর্থাৎ ভোরের প্রথম আলো যখন পূর্ব দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। এটি সাধারণত সূর্যোদয়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে শুরু হয়।

শেষ সময়: ফজরের সময় শেষ হয় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। সূর্যোদয়ের পর ফজর নামাজ আদায় করা জায়েজ নয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬১২)

২. জোহরের নামাজ

শুরুর সময়: জোহরের সময় শুরু হয় সূর্য যখন মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে (জাওয়ালের পর)।

শেষ সময়: জোহরের সময় শেষ হয় যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার নিজের দৈর্ঘ্যের সমান বা দ্বিগুণ হয় (হানাফি মাজহাব অনুযায়ী দ্বিগুণ)। এটি সাধারণত আসরের সময় শুরুর আগপর্যন্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৪৯)

৩. আসরের নামাজ

শুরুর সময়: আসরের সময় শুরু হয় যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার নিজের দৈর্ঘ্যের সমান হয় (শাফিই মাজহাব) বা দ্বিগুণ হয় (হানাফি মাজহাব)।

শেষ সময়: আসরের সময় শেষ হয় সূর্যাস্তের আগে। তবে সূর্য হলুদ হয়ে গেলে আসর নামাজ আদায় করা মাকরুহ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৫৩)

আরও পড়ুননামাজ আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির একটি ধাপ১৭ জুলাই ২০২৫পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সঠিকভাবে জানা এবং তা মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। আধুনিক প্রযুক্তি ও সময়সূচির সাহায্যে এই দায়িত্ব পালন আরও সহজ হয়েছে।৪. মাগরিবের নামাজ

শুরুর সময়: মাগরিবের সময় শুরু হয় সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে।

শেষ সময়: মাগরিবের সময় শেষ হয় যখন পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হয়। সাধারণত সূর্যাস্তের প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে লাল আভা মুছে যায়। (সুনানে নাসাই, হাদিস: ৫২৭)

৫. এশার নামাজ

শুরুর সময়: এশার সময় শুরু হয় পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হওয়ার পর।

শেষ সময়: এশার সময় চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে ফজরের সুবহে সাদিকের আগপর্যন্ত এশা আদায় করা যায়, যদিও মধ্যরাতের পর মাকরুহ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬১২)

নামাজের সময় ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আল্লাহর সঙ্গে মুমিনের সম্পর্ককে দৃঢ় করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সঠিকভাবে জানা এবং তা মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। আধুনিক প্রযুক্তি ও সময়সূচির সাহায্যে এই দায়িত্ব পালন আরও সহজ হয়েছে।

তাই প্রতিদিন নামাজের সময়সূচি অনুসরণ করে এবং ইবাদতের প্রতি আন্তরিকতা রেখে আমরা আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যেতে পারি।

আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ