রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক শহীদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে জবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তার ও তার দলের কিছু নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠায় ব্যাখ্যা চেয়ে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুর রহমান মিন্টু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, সোমবার (৩ মার্চ) দিবাগত রাতে ঢাকার ধোলাইখাল এলাকায় যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীদের একটি দল ওই এলাকায় গেলে সেখানে কথাকাটাকাটির জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে তারা হামলার শিকার হন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

এর সঙ্গে বিএনপি নেতা শহীদুল হক শহীদ ও তার সহযোগীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠায় বিষয়টি তদন্ত করে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে দলীয়ভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে চলে যেতে বলছে না

‘দেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে চলে যেতে বলছে না, বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে’। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।  

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।  

নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকে নিতে হবে: নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে। তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।  

একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগুতে চাই: সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগুতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ