চার বছরের চেষ্টায় নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়লেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)।
সোমবার (৩ মার্চ) পরীক্ষামূলক প্রথম ওড়েন তিনি। তবে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জের শিবালয়ের যমুনার চরে তার বিমানের আকাশে ওড়া দেখতে কয়েকশ’ মানুষ ভিড় করেন।
বিষয়টি নজরে আসে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোয়ার হোসেন মোল্লার। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি আকাশে ওড়ানোর সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এ প্রচেষ্টার জন্য পরে তিনি জুলহাসকে আর্থিক সহযোগিতাও করেন।
জুলহাস মোল্লা দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকার জলিক মোল্লার ছেলে। যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটঘরের তেওতা এলাকায় বসবাস করছেন তারা।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা বলেন, “ছয় ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে জুলহাস আমার পঞ্চম সন্তান। সে ২০১৪ সালে দৌলতপুরের জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। তবে অর্থের অভাবে আর পড়াশোনা হয়নি তার। পরে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ নেয় সে।”
তার ছেলে ছোট বেলা থেকেই ‘প্লাস্টিক কাটাকাটি করে’ কিছু বানানোর চেষ্টা করতো জানিয়ে জলিল মোল্লা বলেন, “ছোটকালেও প্লাস্টিক কেটে সে অনেক কিছু বানাইছে। এ বিমান বানানোর কাজ চার বছর ধরে করছে। গতকাল সোমবার ৫০ ফুট ওপরে তার বিমান উঠছে। সে সফল হয়েছে।”
এ বিষয়ে জুলহাস মোল্লা বলেন, “বিমানটি গ্যাসোলিন ইঞ্জিনে পেট্রোল বা অকটেন দিয়ে চলে। ১ লিটারে ২৫-৩০ কিলোমিটার ওড়ানো যাবে। ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ পানি তোলার মোটরের মূল ইঞ্জিনের সঙ্গে বিমানটিতে এসএস, লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক মনোয়ার হোসেন বলেন, “আজ কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে জুলহাস মোল্লাকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। পরে সরকারিভাবে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”
ঢাকা/চন্দন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি
হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারী।
বৃহস্পতিবার ২৮ হাজার ৩০৭ কর্মীর সই করা এক হাজার ৪২৮ পৃষ্ঠার এই স্মারকলিপি উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, সংস্কার দাবির কারণে মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করে। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।
স্মারকলিপি আরও বলা হয়, আরইবি এখনও মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাসপেন্ড বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। শুধু স্মারকলিপিতে সই দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীর কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত করে তদন্তের নামে হয়রানি ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চাকরি হারিয়ে, মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সই করা স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্মারকলিপিতে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে।