যানজট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেও সংবাদ সম্মেলন করে যানজট নিরসনে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এখনো সরকারকে অনুরোধ করছি, দ্রুত যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নিন। রোজাদারদের জীবনযাত্রা সহজ করুন।

এবি পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত মাসব্যাপী গণ–ইফতার কর্মসূচির তৃতীয় দিনে সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু এসব কথা বলেন।

ইফতারে উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের অবস্থার উন্নতির জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এখানে উপস্থিত অনেকেই গতবারও ইফতার করেছেন, এবারও করছেন। একই অবস্থায় থেকে গেলে হবে না। মনে রাখতে হবে, যারা নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন চান না, আল্লাহ তায়ালাও তার ভাগ্যের পরিবর্তন করেন না।

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় গণ ইফতার কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন। আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেজর (অব.

) আব্দুল ওহাব মিনার। উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন ও এ বি এম খালিদ হাসান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য নজট ন রসন পদক ষ প ইফত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সড়কের বিষফোড়া তিন বাজার

বাঞ্ছারামপুর-তিতাস-গৌরীপুর ৩০ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কে যানজট নামক বিষফোড়া তিতাসের বাতাকান্দি ও কড়িকান্দি বাজার এবং দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজার। প্রতিদিন এসব স্থানে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে যানবাহন। 
বিশেষ করে প্রতি রোববার গৌরীপুর বাজারে ও বুধবার বাতাকান্দি বাজারে সাপ্তাহিক হাট থাকায় যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফলে কুমিল্লার তিতাস, মেঘনা, হোমনা, মুরাদনগর, দাউদকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে ১৯৯৪ সালে গৌরীপুর-তিতাস-হোমনা-বাঞ্ছারামপুরের ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। এ সড়ক ব্যবহার করে কুমিল্লার তিতাস, মেঘনা, হোমনা, মুরাদনগর, দাউদকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এলাকার ব্যবসায়ীরা এ সড়ক ব্যবহার করে তাদের পণ্য আনা-নেওয়া করে। সড়কটি নির্মাণের সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাজার এলাকায় রাস্তার দুই পাশে ৩০০ ফুটেরও বেশি জায়গা অধিগ্রহণ করে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসন আমলে কোনো উচ্ছেদ অভিযান না হওয়ায় বেশির ভাগ অংশ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। কড়িকান্দি ও বাতাকান্দি বাজারে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এসব জায়গা ভাড়া দিয়ে এবং পজিশন হস্তান্তর করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গত ২০ বছরে ৩০ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে অসংখ্য সংযোগ সড়ক থাকায় তৈরি হয়েছে অবৈধ অটোরিকশা স্ট্যান্ড। ফুটপাত দখল করে যানবাহনের স্ট্যান্ড তৈরি হওয়ায় যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যানজটে অনেক সময় যাত্রীদের সঙ্গে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের বাগ্‌বিতণ্ডা তৈরি হচ্ছে।
প্রতি রোববার গৌরীপুর বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন লাখ লাখ ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে। এ সময় আধা-কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাজার এলাকায় রাস্তা সরু হওয়ায় এবং ফুটপাতে ভাসমান দোকান থাকায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের বসে থাকতে হচ্ছে। 
কড়িকান্দি বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। যেখানে যাত্রী দাঁড়িয়ে গাড়িতে ওঠার কথা সেখানে সামিয়ানা টাঙিয়ে অস্থায়ী ফলের দোকান করা হয়েছে। তার ওপর রাস্তার মধ্যে অটোরিকশা স্ট্যান্ড থাকার কারণে দুটি গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারছে না। 
বিশেষ করে বাতাকান্দি বাজারে বুধবারের সাপ্তাহিক হাটে গৌরীপুর বাজারের মতো যাত্রীদের ৩-৪ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। বাতাকান্দি বাজারের রাস্তার উভয় পাশ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাজারের চারদিকে অসংখ্য সংযোগ সড়ক থাকায় ৬টি স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত অবৈধ অটোরিকশা।
অটোরিকশাচালক লিয়াকত আলী জানান, গৌরীপুর যাতায়াতে তাদের অতিরিক্ত এক থেকে দুই ঘণ্টা ব্যয় হচ্ছে। বিশেষ করে গৌরীপুর, কড়িকান্দি ও বাতাকান্দি বাজারে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। 
ট্রাকচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সপ্তাহে চার দিন এ সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পণ্য নিয়ে যাই এবং নিয়ে আসি। কিন্তু যানজটের কারণে আমাদের সময় এবং খরচ দুটোই বেড়ে গেছে।’
স্কুলশিক্ষক মিজানুর রহমানের ভাষ্য, গৌরীপুর-হোমনা-বাঞ্ছারামপুর সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এ কারণে অতিরিক্ত সময় নিয়ে আগেভাগে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। অনেক সময় যানজট থাকলে চালক আর যেতে চান না, রাস্তায়ই নামিয়ে দেন।
কথা হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের গৌরীপুর অঞ্চলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। এ অভিযান শেষ হলেই গৌরীপুর মোড় থেকে বাঞ্ছারামপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাব।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ