সোনার ভরি আবারও দেড় লাখ টাকা ছাড়াচ্ছে
Published: 4th, March 2025 GMT
দেশের বাজারে চার দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বাড়ছে ভরিতে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এতে প্রতি ভরি সোনার দাম আবারও দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। নতুন এই দাম আগামীকাল বুধবার সারা দেশে কার্যকর হবে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি জানায়।
এর আগে গত শুক্রবার সোনার দাম ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমানো হয়েছিল। তাতে ভালো মানের সোনার ভরির দাম কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকায়। অবশ্য চার দিনের ব্যবধানে সেই দাম আবার বাড়ছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সোনার দাম বেড়ে প্রতি ভরি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকায় উঠেছিল। দেশের বাজারে সেটিই ছিল সোনার এযাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম।
নতুন দাম অনুযায়ী, আগামীকাল থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৫১ হাজার ৯০০ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ২৪ হাজার ২৮০ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হবে ১ লাখ ২ হাজার ৩৭৫ টাকা। আজ পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকা, ২১ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ৯৯ হাজার ৮৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আগামীকাল থেকে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনায় ৩ হাজার ৫৫৭ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৩ হাজার ৩৯৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৯০৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনায় ২ হাজার ৪৮৫ টাকা দাম বাড়বে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কের বিষফোড়া তিন বাজার
বাঞ্ছারামপুর-তিতাস-গৌরীপুর ৩০ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কে যানজট নামক বিষফোড়া তিতাসের বাতাকান্দি ও কড়িকান্দি বাজার এবং দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজার। প্রতিদিন এসব স্থানে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে যানবাহন।
বিশেষ করে প্রতি রোববার গৌরীপুর বাজারে ও বুধবার বাতাকান্দি বাজারে সাপ্তাহিক হাট থাকায় যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফলে কুমিল্লার তিতাস, মেঘনা, হোমনা, মুরাদনগর, দাউদকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে ১৯৯৪ সালে গৌরীপুর-তিতাস-হোমনা-বাঞ্ছারামপুরের ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। এ সড়ক ব্যবহার করে কুমিল্লার তিতাস, মেঘনা, হোমনা, মুরাদনগর, দাউদকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এলাকার ব্যবসায়ীরা এ সড়ক ব্যবহার করে তাদের পণ্য আনা-নেওয়া করে। সড়কটি নির্মাণের সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাজার এলাকায় রাস্তার দুই পাশে ৩০০ ফুটেরও বেশি জায়গা অধিগ্রহণ করে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসন আমলে কোনো উচ্ছেদ অভিযান না হওয়ায় বেশির ভাগ অংশ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। কড়িকান্দি ও বাতাকান্দি বাজারে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এসব জায়গা ভাড়া দিয়ে এবং পজিশন হস্তান্তর করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গত ২০ বছরে ৩০ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে অসংখ্য সংযোগ সড়ক থাকায় তৈরি হয়েছে অবৈধ অটোরিকশা স্ট্যান্ড। ফুটপাত দখল করে যানবাহনের স্ট্যান্ড তৈরি হওয়ায় যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যানজটে অনেক সময় যাত্রীদের সঙ্গে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের বাগ্বিতণ্ডা তৈরি হচ্ছে।
প্রতি রোববার গৌরীপুর বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন লাখ লাখ ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে। এ সময় আধা-কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাজার এলাকায় রাস্তা সরু হওয়ায় এবং ফুটপাতে ভাসমান দোকান থাকায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের বসে থাকতে হচ্ছে।
কড়িকান্দি বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। যেখানে যাত্রী দাঁড়িয়ে গাড়িতে ওঠার কথা সেখানে সামিয়ানা টাঙিয়ে অস্থায়ী ফলের দোকান করা হয়েছে। তার ওপর রাস্তার মধ্যে অটোরিকশা স্ট্যান্ড থাকার কারণে দুটি গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারছে না।
বিশেষ করে বাতাকান্দি বাজারে বুধবারের সাপ্তাহিক হাটে গৌরীপুর বাজারের মতো যাত্রীদের ৩-৪ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। বাতাকান্দি বাজারের রাস্তার উভয় পাশ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাজারের চারদিকে অসংখ্য সংযোগ সড়ক থাকায় ৬টি স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত অবৈধ অটোরিকশা।
অটোরিকশাচালক লিয়াকত আলী জানান, গৌরীপুর যাতায়াতে তাদের অতিরিক্ত এক থেকে দুই ঘণ্টা ব্যয় হচ্ছে। বিশেষ করে গৌরীপুর, কড়িকান্দি ও বাতাকান্দি বাজারে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে।
ট্রাকচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সপ্তাহে চার দিন এ সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পণ্য নিয়ে যাই এবং নিয়ে আসি। কিন্তু যানজটের কারণে আমাদের সময় এবং খরচ দুটোই বেড়ে গেছে।’
স্কুলশিক্ষক মিজানুর রহমানের ভাষ্য, গৌরীপুর-হোমনা-বাঞ্ছারামপুর সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এ কারণে অতিরিক্ত সময় নিয়ে আগেভাগে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। অনেক সময় যানজট থাকলে চালক আর যেতে চান না, রাস্তায়ই নামিয়ে দেন।
কথা হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের গৌরীপুর অঞ্চলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। এ অভিযান শেষ হলেই গৌরীপুর মোড় থেকে বাঞ্ছারামপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাব।’